আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:৩৪
‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন খুব জরুরি; আমরা আলাদা করে দেখতে চাই না, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে এটা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলতে চান যে, ‘বিএনপির নেতা’। কিন্তু কেবল বিএনপির নেতা কেবল নন তিনি, তিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং তার সংগ্রামের ভিত্তিই হচ্ছে গণতান্ত্রিক। তার রাজনীতিতে তিনি সংগ্রাম করেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, দেশের গণমাধ্যমকে তিনি অনেক স্বাধীনতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।’
শুক্রবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দলের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ঈদ-পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
পুনর্মিলনীতে দেশের বিরোধী দলসমূহের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,শ্রেণী- পেশের নেতৃবৃন্দ ও পার্টির নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় একটি সংকটের মধ্যে পড়েছে। একদিকে গণতন্ত্র নেই, অন্যদিকে দেশের যে সার্বভৌমত্ব তা হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এখন সবচেয়ে বেশি যে প্রয়োজন যেটা আমরা মনে করেছি, গণতন্ত্রের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন; তিনি এখনও আটক অবস্থায় আছেন; যিনি মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করছেন; লড়াই করছেন সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন খুব জরুরি। আমরা আলাদা করে দেখতে চাই না, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে এটা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।’
‘আন্দোলন সফল হবেই, অতিশিঘ্রই যুগপতের আলোচনা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আমাদের এই আন্দোলন ব্যর্থ হবে না, আমাদের আন্দোলনে আমরা অবশ্যই সফল হবো। কারণ, জনগণের পক্ষের যে আন্দোলন; সত্যের পক্ষের যে আন্দোলন; ন্যায়ের পক্ষে যে আন্দোলন; রাষ্ট্রকে রক্ষা করবার যে আন্দোলন; সমাজকে রক্ষা করবার যে আন্দোলন, এটা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।’
‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন। আমরা তার মুক্তির জন্য তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। কালকে সমাবেশ আছে। এটা স্পেসিফিক রেখেছি যে, এটা সিম্বলিক; দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভিন্নভাবে দেখতে চাই না। তিনি সিরোনিমাস অফ ডেমোক্রেসি। সেই ডেমোক্রেসিকে রক্ষা করার জন্য, দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি।’
‘অতিশিঘ্রই আমরা আমাদের একসঙ্গে যারা গণতন্ত্রের সংগ্রাম করেছি, তারা বসে আলাপ আলোচনা করে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে যেন আমরা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শক্তি, দখলদার সরকারকে সরিয়ে জনগণের রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে সফল হবো।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবদান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবশেষে তিনি (খালেদা জিয়া) কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থাকে মেনে নিয়েছিলেন। মেনে নিয়ে তিনি সংবিধান দিয়েছেন। যেটা আমাদের গণতান্ত্রিক কালচার নির্মাণ করার অনেক বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। দুর্ভাগ্য যে আবারও আওয়ামী লীগের হাতেই সেটা ধ্বংস হয়েছে।
‘সেজন্য আমি মনে করি, যে কাজটা আমরা করতে সক্ষম হয়েছি, সব রাজনৈতিক দলগুলো একমঞ্চে উঠতে না পারলেও যুগপৎভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্তটাকে আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।’
‘সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো নিজ-নিজ অবস্থানে থেকে রাজনীতিটাকে পুরোপুরিভাবে একদিকে রেখে মূল একটি লক্ষ্যে– দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসা, আমাদের ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা। সেই লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।’ বলেন মির্জা ফখরুল।
এসময় আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও নেতৃবৃন্দকে কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কেবল শরিকই নন, অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
‘বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে যে দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম হয়েছে, সেই সংগ্রামের মূল যে বিষয়টা ছিলো, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমরা প্রবর্তন করবো। গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র আমরা নির্মাণ করবো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগের হাতেই ১৯৭৫ সালে সেটা প্রথমবারের মতো আঘাতপ্রাপ্ত হয়, নিহত হয় একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। তারপর থেকে এই দেশের মানুষ গণতন্ত্রের স্বাদ সব সময় পায়নি।’
‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, সব সময় গণতন্ত্রের যে কন্টিনিউয়াসলি প্রসেস বা যে ধারায় সেটাতে আমরা থাকতে পারিনি। আবার পরিবর্তন এসেছে, স্বৈরাচার এসেছে, পরিবর্তন এসেছে, আবার স্বৈরাচার থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলন, সংগ্রাম করেছে মানুষ, ছাত্র সমাজ। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি আমরা।’
‘যখন কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বেগম খালেদা জিয়া মেনে নিয়ে সেটাই যখন সংবিধানে নিয়ে আসলেন তখন একটি সুযোগ সৃষ্টি হলো নতুন করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকের শাসকগোষ্ঠী তাদের কারণেই– তারা কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি; তাদের কারণেই সেটা আবার প্রচণ্ডভাবে ব্যহত হয়েছে এবং আবারও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে বাংলাদেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
‘এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে’ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন এটা এমন একটা জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বেই বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের নেতারা।
অতিথিদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে সাইফুল হক গত দুই দশক পার্টির আন্দোলন-সংগ্রামে নৈতিক সমর্থন প্রদানের জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই পুনির্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, গণফোরাম (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, দলের উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান,গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সমমনা জোটের সমন্বয়ক এডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ,গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর,সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, এলডিপির সহ সভাপতি ডঃ নেয়ামুল বসির, ১২ দলীয় জোটের নেতা এহসানুল হুদা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ আলী আখন্দ, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, কবি মোহন রায়হান, কবি হাসান ফখরি, লেখক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বাবলা, লেখক তারেক চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ডঃ লুতফুর রহমান, জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম-সচিব কামালউদ্দিন পাটোয়ারী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ঈমন, নাগরিক ঐক্য এর কেন্দ্রীয় নেতা কবীর হাসান, ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ হারুন অর রশীদ, অহিংস গণঅভ্যুত্থানের মুখপাত্র আবুল বাসার, এডভোকেট মোস্তফা আমিন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এর সমন্বয়ক হারুন চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ইফতেখার আহমেদ বাবু, বিবর্তন এর সভাপতি কামালউদ্দিন প্রমুখ।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |