আজ বৃহস্পতিবার | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ২:০১
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- আওয়ামী লীগ আরো কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে পারলে আন্দোলন সফল হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে বর্তমান সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক স্মরণ সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করেন। বিএনপির সাবেক মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘কেএম ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদ’।
মরহুম ওবায়দুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলে যাদের অবদান রয়েছে, দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করা বেশির ভাগকেই আজকে আমরা দল, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্মরণ করি না। এখনতো বাংলাদেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে একজনকেই মনে করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই ভয়াবহ সরকার, এই গণবিরোধী সরকার, এই স্বাধীনতা বিরোধী সরকার, এই রাষ্ট্র বিরোধী সরকার তাদেরকে যদি আর কিছুদিনও ক্ষমতায় রাখা হয় এদেশের জাতির অস্তিত্ব থাকবে না। আসুন কেএম ওবায়দুর রহমানের মতো নেতাদেরকে যদি শ্রদ্ধা জানাতে হয়, স্মরণ করতে হয় তাহলে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রামে শরিক হই এবং গণতন্ত্রের আন্দোলনকে আমরা সফল করি। সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, দেশে দমবন্ধ করা এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। আমরা কথা বলতে পারি না, নিঃশ্বাস নিতে পারি না। এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদেরকে বেরিয়ে আসার জন্য কাজ করছি, লড়াই করছি, আমরা প্রায় ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি, লড়াই করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের মানুষ একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের মধ্যে বাস করছে। আজকে মানুষের অধিকারগুলো সম্পূর্ণ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, তার ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, তার বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন আইন তৈরি করা হচ্ছে যে আইনগুলো মানুষের ভিন্নমত প্রকাশ করবার স্বাধীনতাকে খর্ব করে দিচ্ছে। একটা পরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ভিন্ন মোড়কে গণতন্ত্রের একটা লেবাস লাগিয়ে দিয়ে তারা সেটা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনও করে তারা। অবশ্য নির্বাচনটাকে বলা হচ্ছে এখন যে, হাইব্রিড রেজিমের ক্ষমতায় থাকার নির্বাচন। অথচ তারা নির্বাচনও করবে, আবার দেখা যাবে জনগণ তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। এই করে তারা পার পেয়ে যাবে।
সামনে কঠিন সময় মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ কিন্তু তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। মিথ্যা মামলার সাজা দিয়ে তারেক রহমানকে দেশে আসতে দিচ্ছে না।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসায় সরকার বাধা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছেন না। আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনি এর পরিণতির জন্য অপেক্ষা করেন। আপনার কি পরিণতি হবে আমরা জানি না। আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করতে গিয়ে মোশাররফ বলেন, ক্ষমতায় যারা আছে তারা মুক্তিযুদ্ধের ফেরিওয়ালা। তাদের ওয়ান-ইলেভেনের সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে গেছে, সে ক্ষমতাকে ব্যবহার করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে বর্তমান বয়কটের সরকার। তিনি বলেন, জরুরি সরকার দয়া করে আওয়ামী লীগকে সরকারে বসিয়েছে। এর পর থেকে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় বসে আছে। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারণে সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা নিজেদের সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, করতে পারবেও না।
মরহুম ওবায়দুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রবীণ নেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে চাই, আপনি প্রধানমন্ত্রী, আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আজকে অসুস্থ। তাঁকে মুক্তি দিন, তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিন এবং জনগণের পাশে খেদমত করার সুযোগ দিন। এতে আপনার কোনো ক্ষতি হবে না। বরং দেশের মানুষ বলবে যে, আপনার একটা মন আছে, হৃদয় আছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও শাহজাহান মিয়া সম্রাটের সঞ্চালনায় এই স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও মরহুম নেতার মেয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান মাশুক, সেলিমুজ্জামান সেলিম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:08 PM |
Asr | 3:13 PM |
Magrib | 5:34 PM |
Isha | 6:53 PM |