আজ শুক্রবার | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:৩৪
আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা : মৃৎ শিল্প বাঙালী সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। এঁটেল মাটি দিয়ে এক সময় মাটির হাড়ি, পাতিল, সাড়া, কাঁসা ও প্রভৃতি বাসন তৈরি করা হতো। আর এসব মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদরও ছিল বেশ ভালো। এক সময় বাংলার ঘরে ঘরে মাটির থালা, পাতিল, কলস, চারা এবং আরো অনেক বাসনপত্র দেখা গেলেও এখন সেখানে জায়গা করে নিয়েছে প্লাস্টিকের থালা, কলস, বদনা, বাটি থেকে শুরু করে যাবতীয় পণ্য। প্রয়োজনীয় পুঁজির স্বল্পতা, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি এবং এই মাটির বাসনপত্র তৈরির জন্য এঁটেল মাটির ব্যবহার ব্যাপক হারে করা হয়ে থাকে। আগে এ মাটি নদীর ক‚ল, পুকুর খননকালে বিনা পয়সায় পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এ মাটি কিনতে হয় বেশি দামে। এছাড়া জ্বালানীসহ আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় উপকরণাদির দাম বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিক পণ্যের সহজলভ্যতা বাংলাদেশে মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্রি পথে। কালের বিবর্তনে মৃৎ শিল্প বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাদুঘরে। এক সময় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রাম বাংলার পল্লীতে মৃৎ শিল্প কারিগররা (কুমার) চাকে বসে এঁটেল মাটি দিয়ে হাড়ি, পাতিল, বদনা, কলস, থালা ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করতো। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মৃৎ শিল্পের কারিগর হিসেবে তারা এ কাজে সামিল হতো। এরপর নারীরা মাটির হাড়ি-পাতিল তৈরি করে রোদে ভাল করে শুকিয়ে এ মাটির পণ্যগুলো পুড়িয়ে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করেন। পুরুষরা এসব মাটির তৈরি পণ্য হাট-বাজারে এবং গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের ফলে এ শিল্পের মূল উপকরণ এঁটেল মাটি ও জ্বালানীর দাম বৃদ্ধিতে মৃৎ শিল্পের কারিগররা তাদের এ পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়ছেন মৃৎ শিল্পের কারিগররা। অনেক মৃৎ শিল্পের কারিগররা বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এক সময় আত্রাই উপজেলায় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামে কুমারদের মৃৎ শিল্প ব্যাপকভাবে গড়ে উঠে। এসব গ্রামের কুমারদেরকে মৃৎ শিল্পের বাসনাদি ব্যাপকভাবে তৈরি করতে দেখা গেলেও বর্তমানে আর এতো বেশি মাটির তৈরি বাসন তৈরি করতে দেখা যায় না।
সম্প্রতি উপজেলার পাঁচুপুর, সাহেবগঞ্জ, ভবানীপুর, রায়পুর, মিরাপুর ও নন্দনালী গ্রামের মৃৎ শিল্পের কারিগর সহদেব, হারা, ধীরেন, নীরেন, গৌড়াঙ্গ, উপেন, নীলরতন বলেন, বর্তমানে এঁটেল মাটি থেকে শুরু করে জ্বালানীসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের বাপ দাদার ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছে। এছাড়া মাটির বাসনাদি আর আগের মতো চলেনা। কারণ হচ্ছে, বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্য এখন বাজার দখল করে নিয়েছে। এক সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিলের ব্যাপক প্রচলন ছিল। এখন এ শিল্প আর আগের মতো চলেনা। দিন দিন কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় আমরা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছি। শত প্রতিক‚লতার মধ্যে আমাদের এ পুরাতন পেশা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি। এছাড়া আমরা সহজ শর্তে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ঋণ সহায়তা কামনা করছি।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:08 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |