আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:৪০
সিলেট:- ‘গুম-খুন হলে জানি না। নতুবা শেষদিন পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবোই। লড়াই করবো। যদি কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটি পরে দেখবো। আমি কখনো দল বদল করিনি। কিংবা সুযোগ-সুবিধা নেয়ার জন্য যেকোনো জায়গায় দৌড়াইনি। বিএনপিতে ছিলাম; বিএনপিতেই থাকবো।’একথা জানান সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্রী প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী। এই মুহূর্তে সিলেটের আলোচিত রাজনীতিবিদ তিনি।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা। বিএনপি থেকেই সবসময় নির্বাচনে প্রার্থী হন। ২০০১ সালে এমপিও হয়েছেন বিএনপি থেকে। সিলেটের পরিচিত মুখ তিনি। সমাজসেবায় যেমন সুখ্যাতি আছে, রাজনীতিতেও তাকে নিয়ে নানা সময় হয়েছে বিতর্ক। সব বিতর্ক ছাপিয়ে সিলেটে রাজনীতি করে যাচ্ছেন বিএনপি ঘরানার এই রাজনীতিবিদ। এবার তাকে নিয়ে আলোচনার কারণ হচ্ছে; সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে তিনি হঠাৎ করেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার এই প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিএনপি নেতারা হতবাক। বিএনপি দলীয় ঘনিষ্ঠ নেতারা প্রার্থী না হতে বাধা দিয়েছিলেন। পরিবারের মত নেই। সবকিছু উপেক্ষা করে প্রার্থী হয়েছেন। শুরুতেই মুখোমুখি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের। বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এখন অবশ্য হাবিব সম্পর্কে চুপ। এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়েছে। টিকে গেছেন বাছাইয়ে। এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন চূড়ান্ত লড়াইয়ের।
গতকাল বিকালে তিনি সঙ্গে নির্বাচনে আসা, প্রার্থী হওয়াসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। শফি আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- ‘আমি মনে করেছিলাম সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী দেয়া হবে প্রয়াত এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানাকে। সে আমাকে চাচা ডাকে। শেষ মুহূর্তে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এ সময় আমি আমেরিকায় ছিলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম নির্বাচন করবো। কিন্তু স্ত্রী, সন্তান কেউ রাজি নয়। এরপরও আমি তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে সিলেটে ছুটে এসেছি। সিলেট আসার পরদিনই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি।’ বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কেন আপনি নির্বাচনে এমন প্রশ্নের জবাবে শফি আহমদ চৌধুরী জানান- ’৮৬ সাল থেকে আমি নির্বাচন করেছি। ওই নির্বাচনে ১৫ দলীয় জোটের প্রার্থী পীর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি। আমি ওই নির্বাচনে ২০-২৫ হাজার ভোটে জয়ী হলেও পরবর্তীতে আমাকে ফেল দেখানো হয়। তখনও আমি বিএনপিতে ছিলাম। আজ পর্যন্ত আছি। এবার বিএনপি আমাকে শোকজ করেছে। আমি প্রার্থী হওয়ার কারণ জানিয়ে ৩ পৃষ্ঠার জবাব দিয়েছি। পত্র পাওয়ার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নীরব হয়ে গেছেন। তারা বুঝে গেছেন কেনো আমি নির্বাচন করছি।’
বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতা বিরোধিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন-‘ বিএনপির যেসব নেতারা এখন আমার বিরোধিতা করছেন তারা সবাই আমার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন। তাদের অনেককেই আমি লালন-পালন করেছি। এখন তারা আমার বিরোধিতা করছে। তারা না বুঝে করছে বলে দাবি করেন তিনি।’ কারণ উল্লেখ করে শফি আহমদ চৌধুরী জানান- ‘বিএনপির তৃণমূলের নেতারা তার সঙ্গে রয়েছে। এখন যেদিকে যাচ্ছেন বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা তার কাছে ছুটে আসছেন। গতকালও তার নিজ এলাকায় বিএনপি’র হাজারো কর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন শফি চৌধুরী। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে শফি আহমদ চৌধুরী বলেন- আওয়ামী লীগ থেকে ফারজানা সামাদ চৌধুরী প্রার্থী না হওয়ায় প্রার্থী তালিকায় থাকা কয়েকজন নেতাই তাকে ফোন করে প্রার্থী হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এ কারণে তিনি উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। শফি চৌধুরী বলেন- ‘ওদের সিগন্যাল পেয়ে এসেছি। প্রার্থী হওয়ার পর সবাই আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন।’ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে শফি আহমদ চৌধুরীর বক্তব্য খোলামেলা। তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী দাবি করেন। বলেন- বঙ্গবন্ধুর জমানায় খাদ্য সংকটের সময় তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল চাল ও গম আনার। তিনি এনেও দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু আমাকে স্নেহ করতেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে মক্কা-মদিনা সফর করেছেন। সিলেটে মুহিত পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন- ‘ইনাম আহমদ চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগদানের সময় বলা হয়েছিল শফি চৌধুরীও আওয়ামী লীগে চলে যাচ্ছেন।
আমি আওয়ামী লীগে যাইনি, বিএনপিতেই আছি। চামড়া বিক্রি করা আমার স্বভাব না।’ এটাই তার শেষ নির্বাচন উল্লেখ করে শফি চৌধুরী জানান- ‘আর নির্বাচন করতে পারবো কী না জানি না। তবে- এলাকার মানুষের জন্য এবার প্রার্থী হয়েছি। সিলেট-৩ আসনের মানুষ এখনো গ্যাস বঞ্চিত। যদি এমপি নির্বাচিত হই তাহলে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করবো। আর দক্ষিণ সুরমায় একটি স্টেডিয়াম নেই। একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে চাই।’ ৮৬ নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে কী না- প্রশ্নের জবাবে শফি চৌধুরী বলেন- ‘এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। হয়তো হবে না। তবে- এবার দলের জন্য নয়, মানুষের জন্য নির্বাচন করছি।’
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |