আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১০:০৩
বিডি দিনকাল ডেস্ক :- র্যাবের ‘গুরতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ ঘটনায় পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ `মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবশ্যসম্ভাবী পরিণতি’ বলে অভিহিত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে যে খবরটা বেরিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বেনজীর ও র্যাব প্রধানের ওপর। আমি এটা চমক মনে করি না, আমি এটাকে মনে করি অবশ্যসম্ভাবী পরিণতি।এটাই তাদের পরিণতি এজন্যে যে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, যা্রা মানুষের অধিকারকে কেড়ে নেয়, যারা জনগনকে হত্যা করে তাদের এভাবে পরিণতি হয়।”
‘‘ আমার প্রশ্ন এখন? আমরা দেখতে চাই, জানতে চাই যে, এই সরকার এই সমস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তারা কি ব্যবস্থা গ্রহন করবে। নাকী তারা আগে মতো চলবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা এতো ধরে যে কথাগুলো বলে আসছি, আমরা এতো ধরে বলছি যে, মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে, আমরা বলছি যে এই সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করছে, পুলিশকে ব্যবহার করছে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে, করে মানুষকে হত্যা করছে নির্মমভাবে। এটা এটা প্রমাণিত হয়েছে আজকে।”
‘‘গতকাল যে যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের যে সম্মেলন হয়েছে সেই সম্মেলনে বাংলাদেশেকে ডাকা হয় নাই। এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকার বাংলাদেশকে আজকে লজ্জার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে এই আলোচনা সভায় অনেকে বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মনে রাখা উচিত যে, তারা হচ্ছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারি। তারা কোনো ব্যক্তি বা দলের কর্মচারি-কর্মকর্তা নয়।”
‘‘ সুতরাং সংবিধানের বাইরে গিয়ে যেটা আপনাদের কাজের দায়িত্ব দেয়া আছে তার বাইরে গিয়ে দায়িত্ব পালন করার আপনাদের দায়িত্ব নয় এবং একদিন না একদিন সেই পরিণতি আপনাদেরকে বহন করতে হবে।”
র্যাবের ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ ঘটনায় এই বাহিনী, এর সাবেক প্রধান, বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ পুলিম কর্মকর্তা বিনজীর, র্যাব মহাপরিচালক মানুম আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের অনমুতি পাবেন না।
২০০৪ সালে গঠিত র্যাবের বিরুদ্ধে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভুত হত্যার’ অভিযোগ অনেক পুরনো। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে কঠোর সমালোচনাও করেছে।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির(এনপিপি) উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিতসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দা্বিতে এই আলোচনা সভা হয়।
‘বিদেশে অর্থপাঁচারকারীদের আমরা চিনি”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা একথা জানি কারা লুট করে সমস্ত অর্থ পাঁচার করে দিচ্ছে দেশের বাইরে। কারা হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বেগমপাড়ায় বাড়ি তৈরি করেছে, মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে –এটা আমরা দেশের সবা জানে। পরিণতি এটাই দেখবেন এই সম্পদও তারা ভোগ করতে পারছে না। আজকে বলা হয়েছে যে, এই সম্পদগুলো সব বাজেয়াপ্ত করা হবে।”
‘‘ কী লজ্জা আমাদের। যে আমাদের পুলিশ প্রধান, আমাদের র্যাব প্রধান তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটা দেশ একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। কী কারণে যে, তোমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছো, তোমরা বেআইনিভা্বে মানুষকে হত্যা করছো, গুম করেছো, খুন করেছো।এর জবাব জনগনকে দিতেই হবে।”
‘খালেদা জিয়া একা নন’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একা নন। সমগ্র জাতি তার সঙ্গে আছে। কারণ তিনি হচ্ছেন সেই প্রতীক সেই প্রতীক হচ্ছে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে প্রতীক, তিনি হচ্ছেন গণতন্ত্রের প্রতীক। সুতরাং সংকটটা শুধু বেগম খালেদা জিয়ার নয় এই বিপদটা বিএনপির একা নয়, এই বিপদ সমগ্র জাতির। তিনিই (খালেদা জিয়া) একমাত্র এই দেশকে রক্ষা করতে পারেন, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে পারেন।”
‘‘ আমি আশা করব যে, আমাদের এখানে যেসব্ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আছেন তারা শুধু নয়, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি অনুরোধ তারা ঐক্যবদ্ধ হবে। ছোট-খাটো বিভেদ ভুলে গিয়ে যে কোথায় ডান-বাম-এসব দেখা দরকার নাই। আজকে গোটা জাতি ডুবছে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে, জনগনকে উঠে দাঁড়ানোর কথা বলতে হবে, জনগনকে রাজপথে টেনে নিয়ে এসে আমাদেরকে সোচ্চার কন্ঠে দূর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার সুচিকিতসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে আর আমাদের নেতা যে নেতার দিকে গোটা জাতি তাঁকিয়ে আছে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
এনডিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার পরিচালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর)মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবারাহিম, বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, এনডিপির আবু তাহের, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, মুসলিম লীগে শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, সরকারের রোষানলের শিকার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে ওমর শরীফ মো. ইমরান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |