আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৩৯
বিডি দিনকাল ডেস্ক :- বছরজুড়েই বাজারে কিছু পণ্যের দাম ছিল চড়া। মাঝে কিছুটা কমলেও রমজানকে সামনে রেখে নতুন করে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় আগামী ১৪ই এপ্রিল থেকে আরো ১ সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের আগাম খবরে বাজার অস্থির হতে শুরু করেছে। গত ৫ দিনের বিধিনিষেধের ফলে বাজারে ক্রেতা কম দেখা গেলেও গতকাল হঠাৎ করেই নিত্যপণ্যের বাজারে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ফলে কৌশলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা। তাদের অভিযোগ, ২-৩ দিন আগেও শীতকালীন সবজিসহ কিছু পণ্যের দাম কমের দিকে ছিল। কিন্তু রমজান ও লকডাউনকে কেন্দ্র করে সেগুলোর দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় সবজি সরবরাহ কমে গেছে।
তাই দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। এছাড়া লকডাউনের প্রভাবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামেও ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, লকডাউন ঘোষণার দিন থেকে বাজারে ভিড় বাড়তে থাকে। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পণ্য কিনেছিলেন। ফলে গত ২-৩ দিন বাজারে ভিড় কম ছিল। কিন্তু আবারো কঠোর লকডাউন হবে এমন খবরে বাজারে ভিড় বাড়ছে।
গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব পণ্যের দামই তুলনামূলক বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। এমনিতেই পিয়াজ, রসুন, আদা, চাল ও তেলের দাম নিয়ে অসন্তোষ ক্রেতাদের মধ্যে। এ অবস্থায় কাঁচাবাজারের গিয়ে যেন তাদের দীর্ঘশ্বাস। কয়েকদিন আগেও ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে ছিল অধিকাংশ সবজির দাম। তবে এখন সবজি কিনতে হলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার উপরে। গতকাল প্রতি কেজি করলা ৬০, পটল ৬০, সজনি ৬০ থেকে ৭০, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০, শিম ৫০-৫৫, কাঁচা আম ৮০ থেকে ১০০, বেগুন ৪০ থেকে ৫০, শসা ৫০ থেকে ৬০, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০, টমেটো ৩০-৩৫, পেঁপে ২০-২৫, আলু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৪০, রসুন ৮০-১০০, আদা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ওদিকে বাজারে চাল-তেলের দাম বেড়ে স্থির রয়েছে। গতকাল চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা, আটাশ চাল ৫৩-৫৫ টাকা, মিনিকেট ৬০-৬৫ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ টাকা। এছাড়া খোলা সুপার সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৫-১৩০ টাকা, পাম তেল ১১০-১১৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি পাঁচ লিটার ৬২৫-৬৩০ টাকা এবং ১ লিটার ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে বাজারে ইফতার পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। দামও কিছুটা বাড়তি বলে জানান ক্রেতারা। বাজারে হাতে ভাজা, মেশিনে ভাজা ও প্যাকেটজাত এই তিন ধরনের মুড়ি পাওয়া যাচ্ছে। এরমধ্যে মেশিনে ভাজা খোলা মুড়ির দাম প্রতি কেজি ৭০ টাকা, হাতে ভাজা খোলা মুড়ি ৮০ টাকা এবং প্যাকেটজাত মুড়ি ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি ৭৫ ও লাল চিনি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজি প্রতি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৬৫-৬৮ টাকায়, বুটের ডাল ৭৫, মুগডাল ১১০-১৪০ টাকা এবং খেসারির ডাল ৭৫-৮০ টাকা। প্রতি কেজি খোলা বেসনের মূল্য নেয়া হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা এবং প্যাকেটজাত বেসন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে প্রায় নিত্যপণ্যের দামই চড়া। তারা জানান, রোজা ও লকডাউনকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তবুও জীবন বাঁচানোর তাগিদে চড়া মূল্যেই কিনতে হচ্ছে।
মিরপুরের বাসিন্দা আবু হানিফ মানবজমিনকে জানান, তিনদিন পরে বাজারে গেলাম কিছু সবজি কিনবো বলে। কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি প্রচুর ভিড়। তারা হুড়োহুড়ি করে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পণ্য কিনছেন। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ২-৩ দিন আগে যে পণ্য ৩০ টাকা দিয়ে কিনেছি আজ হঠাৎ এসে দেখি সেটি ১০-১৫ টাকা বেশি। লকডাউনের খবরে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। সরকারের বিষয়টি দেখা উচিত। কারণ বরাবরই অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে থাকে। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হলে এমনটি হয়তো হবে না।
কনসাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ মানবজমিনকে বলেন, পণ্যের দাম বাড়াতে সিন্ডিকেটকারীরা নানা অজুহাত খুঁজে থাকে। তাই রমজান ও লকডাউন কেন্দ্র করে তারা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আর প্রতিবছর রমজান এলেই সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। সেজন্য সরকারের যে সমস্ত সংস্থা আছে তাদের উচিত সিন্ডিকেটগুলো চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |