- প্রচ্ছদ
-
- প্রধান খবর
- আ.লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এটা প্রমাণিত, মধ্যবর্তী নয় আমরা ফ্রেস নির্বাচন চাই : মির্জা আলমগীর
আ.লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এটা প্রমাণিত, মধ্যবর্তী নয় আমরা ফ্রেস নির্বাচন চাই : মির্জা আলমগীর
বর্তমান কমিশন সরকারের ‘বংশবদ ক্রীড়ানক’ হিসেবে কাজ করছে
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর, ২০২০ ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
বাবুল তালুকদার : কেনো মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে না-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এরকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘ আমরা তো একথা(মধ্যবর্তী) এখনেো বলিনি। আমরা গত নির্বাচন যেটা হয়েছে সেটাই তো মানছি না, আমরা ওইটাকে অবৈধ বলছি, আমরা ওইটাকে বাতিল করার কথা বলছি। আপনারা দেবেন আমাদের প্রত্যেকটা স্টেটমেন্ট একথা বলেছি যে, এই নির্বাচন আমরা মানি না, এই নির্বাচন বাতিল করে ফ্রেস নির্বাচন নির্বাচন দেয়া হোক।”
রোববার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, ‘‘মধ্যবর্তী-টড্ডবর্তী নির্বাচনের কথা আমরা তো বলিনি। যখন বলব তখন দল থেকে বলা হবে। এখন ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কিছু বললে, যারা সিভিল সোসাইটিতে আছেন তাদের মধ্যে কেউ বলতে পারেন-দ্যা ইজ দেয়ার অপিনিয়ন। আমরা বিশ্বাস করি যে, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। যে কারণে আমরা বলি যে, নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের কথা বলে এসেছি, এটাতে আমরা বিশ্বাস করি।”
‘জিডিপিসহ অর্থনীতির উন্নূয়ন শুভঙ্করের ফাঁকি’
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘ আইএমএফের যে রিপোর্ট আমরা দেখছি ভারতের জিডিপি ১০% কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের জিডিপি বেশি করে দেখানো, বাংলাদেশে অর্থনীতি এতো চমতকার ইকনোমী দেখানো – একটা সাকসেসফুল দেথানো হচ্ছে। এর পেছনে আরো অনেক উদ্দেশ্য আছে।”
‘‘প্রথম থেকে বাংলাদেশকে বলা হয়েছে রোল মডেল। আপনারা দেখবেন যে, একটা বিশেষ মহল জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই রোল মডেলের কথা বলছে, এটা প্রচার করছে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষের চাকরি নেই, বেকারত্ম, যে হারে বেকারত্ব বেড়েছে, শিক্ষিত ছেলে-পেলেদের চাকরি নেই। সেক্ষেত্রে রোল মডেল কিভাবে বলবেন? কোন শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।”
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি জারির এবং গত রাতে যশোরে দলের স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাসভবন, জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ জেলা নেতাদের বাসায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলা ঘটনার নিন্দা জানান ফখরুল। যশোরের ঘটনায় জড়িত দুস্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘বংশবদ ক্রীড়ানক’ হিসেবে কাজ করছে
পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনের ভোট নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়ায় মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘ তিনটি উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতোই ত্রাস সৃষ্টি করে এবং ভোট ডাকাতি করে জাল ভোট মেরে বিরোধী দলের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের জোর করে বের করে দিয়ে ভোট ছিনতাই করেছে। নির্বাচন কমিশন নির্কিার দর্শকের ভুমিকা পালন করেছে। রিটার্নিং অফিসার ধানের শীষের প্রার্থীদের অভিযোগ গ্রহন করেনি।”
কমিশিনে অভিযোগ দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবলীয়লায় মিথ্যা কথা বলেছেন, কোনো অভিযোগ নাকী তারা দেন নাই। ঢাকা থেকেই ১৬২টা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিনা ভোটের স্বঘোষিত সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য ভোট ডাকাতির কৌশলে জনগনকে আবারো প্রতারিত করলো। অযোগ্য এবং সরকারের বশংবদ নির্বাচন কমিশন ক্রীড়ানকের থেকে এই ভুমিকা পালন করছে।”
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘‘এই অবৈধ সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে একদিকে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও দুঃশানন অন্যদিকে জনগনের জনগনের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে ফ্যাসিস্ট রাজত্ব কায়েম করেছে। সুপরিকল্পিভাবে নির্বাচন কমিশন জনগনের ভোটাধিকার বঞ্চিত করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”
কর্মসূচি:
সদ্য শেষ হওয়া উপনির্বাচনের ঘোষিত ফলাফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব।
কর্মসূচির মধ্যে আছে-আগামী ১৯ অক্টোবর সারাদেশে মহানগর ও জেলায় এবং ২০ অক্টোবর থানা-উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ।
পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ উপনির্বাচনে ক্ষমতাসী দল ও সরকারের প্রশাসনের ভোট কারচুপির ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের মারদোর করে বের করে ওরা(ক্ষমতাসীন) জাল ভোট দিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে, ত্রাস সৃষ্টি করেছে। নির্বাচন কমিশন এভিএম দিয়ে ভুয়া ফলাফল তৈরি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে।”
‘‘ আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছি এবং সেই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
‘সিন্ডিকেটে নিত্যপণ্যে দাম বাড়ছে’
চাল-ডাল-পেঁয়াজ-আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধবগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘ সরকারি দলের মদদপুষ্ট এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা ও দুর্ণীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মসংস্থানের অভাব ও পরিস্থিতিকে আরো জটলা করে ফেলেছে।”
‘‘ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির রাশ টেনে ধরতে সরকারের ব্যর্থতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি।”
‘পুলিশের ধর্ষন বিরোধী সমাবেশ লোকদেখানো, ফেনীতে ধর্ষন বিরোধী লং মার্চে হামলার নিন্দা ’
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘সারাদেশে ধর্ষন ও নারী নির্যাতনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি প্রতিরোধে সরকারের চরম ব্যর্থতা সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযোজন –সমস্যার একমাত্র সমাধান নয়। ধর্ষকদের সরকারি দলের প্রশ্রয় অথবা ধর্ষক সরকারি দলের সদস্য বলে কোনো বিচার হয় না।”
‘‘ গতকাল ধর্ষন বিরোধী লং মার্চে আন্দোলনকারীদের ওপর ফেনীতে পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগেরে সন্ত্রাসীদের হামলা প্রমাণ করেছে যে, পুলিশ গতকাল সারাদেশে যে ধর্ষন বিরোধী সমাবেশ শুধু মাত্র লোক দেখানো। প্রকৃত অর্থে সরকারের সদিচ্ছার অভাব ও ব্যর্থতাই ধর্ষণের মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
ধর্ষন মামলার দ্রুত বিচারের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার দাবিও জানান তিনি।
এ সময়, গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।
Please follow and like us:
20 20