আজ বৃহস্পতিবার | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:১২
মনির হোসেন জীবন- রাজধানীর উত্তরায় প্রাইভেটকারের ওপর নির্মাণাধীন বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে বক্স গার্ডার ছিটকে পড়ে একই পরিবারের দুই শিশু দুই নারীসহ ৫ সদস্য নিহতের ঘটনায় ঘাতক ক্রেন চালক ও সহকারী এবং নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলছে, উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন কাজ করার সময় ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেট কারের ৫ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছে র্যাব। ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী রাকিব। আর বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল অপারেটর আল আমিন।
বুধবার দিবাগত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১,৩,৪,৬ এবং র্যাব-১২ এর পৃথক একাধিক দল
ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে
যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, ক্রেন চালক মোঃ আল আমিন হোসেন ওরফে হৃদয় (২৫), রাকিব হোসেন (২৩),
ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিক ম্যান মোঃ রুবেল (২৮), মোঃ আফরোজ মিয়া (৫০), মোঃ জুলফিকার আলী শাহ (৩৯), হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত ইফসকন বাংলাদেশ লিমিটেড এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ ইফতেখার হোসেন (৩৯), হেড অব অপারেশন মোঃ আজহারুল ইসলাম মিঠু (৪৫), ক্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানীর মার্কেটিং ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার (৪২), প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা (৩৩) ও মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম (২৯)।
র্যাব জানান, উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের যে ক্রেন থেকে প্রাইভেটকারের ওপর গার্ডার পড়েছে সেটির সক্ষমতা ছিল ৪৫-৫০ টন। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ক্রেনে যে গার্ডারটি তুলছিল সেটির ওজন ছিল ৬০-৭০ টন।
রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’র আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের উধর্বতন কর্মকর্তা, র্যাব সদরদপ্তরের কর্মকর্তা, র্যাবের আইনও গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা অফিসারগন এসময় উপস্হিত ছিলেন।
খন্দকার আল মঈন জানান, গত সোমবার (১৫ আগস্ট) ২০২২ তারিখে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নং সেক্টর ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের জসীমউদ্দিন রোড সংলগ্ন প্যারাডাইজ সেন্টারের সামনে বিকাল আনুমানিক সোয়া ৪ টার দিকে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপরে পড়ে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের দুই শিশু, দুই নারী ও এক পুরুষসহ ৫ জনের মৃত্যু হয় এবং ২ জন গুরুতরভাবে আহত হয়। দুর্ঘটনার পরবর্তীত দ্রুততম সময়ে র্যাব সদর দপ্তরের Rapid Response Team ও র্যাব-১ এর একটি দল সর্বপ্রথম উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ৪ ঘন্টাব্যাপী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। এসময় র্যাবের সহায়তায় অন্য একজন ক্রেন অপারেটর নিয়ে এসে গার্ডার উচু করে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি এবং নিহতদের উদ্ধারে সহায়তা করা হয়। পরবর্তীতে এ দুর্ঘটনায় ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অবহেলাজনিত কর্মকান্ড দ্বারা মৃত্যু ও গুরুতর জখমের সংঘটনের অপরাধে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়; যার মামলা নং ৪১, তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২২ ইং।
র্যাব জানান, একই পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক মৃত্যুর ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে র্যাব জড়িতদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট ২০২২ তারিখ বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না গেজুবা গ্রুপ কোম্পানী (সিজিজিসি) এর তত্ত্বাবধানে ক্রেন দিয়ে প্রজেক্টের গার্ডার উত্তোলনের কাজ চলাকালীন এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। দুর্ঘটনায় ঘাতক ক্রেনের চালক/অপারেটর মোঃ আল আমিন ও হেলপার রাকিব হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি থেকে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহের ওয়ার্ক অর্ডার পায় ইফসকন নামক একটি প্রতিষ্ঠান যার সত্ত্বাধিকারী গ্রেফতারকৃত মোঃ ইফতেখার হোসেন ও হেড অব অপারেশন গ্রেফতারকৃত মোঃ আজহারুল ইসলাম মিঠু। ভারী যন্ত্রপাতি ইফসকনের নিকট বড় ক্রেন না থাকায় তারা থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানীর নিকট থেকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ক্রেনটি ভাড়া নেয়। এছাড়াও প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চয়নের দায়িত্বে থাকা ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিক ম্যান আফরোজ ও রুবেল এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি এর সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলীকে প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের এবং হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সিজিজিসি’র প্রকিউরমেন্ট অফিসার মঞ্জুরুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে আরও
জানান, ঘাতক ক্রেনের মূল অপারেটর মোঃ আল আমিন। তার হালকা গাড়ী চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারী গাড়ী চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ২-৩টি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার পর ২০২২ সালের মে মাসে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানান, ঘাতক ক্রেনের মূল অপারেটর মোঃ আল আমিন। তার হালকা গাড়ী চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারী গাড়ী চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ২-৩টি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার পর ২০২২ সালের মে মাসে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করে। গ্রেফতারকৃত রাকিব ৩ মাস পূর্বে উক্ত প্রকল্পের ক্রেন হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করে। তার ক্রেন চালনা করার কোন ধরণের প্রশিক্ষণ ছিল না। দুর্ঘটনার দিনে আল আমিন ও রাকিব দুপুর ২ টা থেকে ক্রেন চালনা শুরু করে। একটি গার্ডার স্থাপন শেষে ২য় গার্ডার স্থাপনের সময় ক্রেনের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ওজনের গার্ডার উত্তোলনের জন্য ক্রেনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গার্ডারটি প্রাইভেটকারের উপর ছিটকে পড়ে এ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। দুর্ঘটনার সময় হেলপার রাকিব ক্রেন চালনা করছিল এবং ক্রেন অপারেটর আল আমিন ক্রেনের বাহির থেকে নির্দেশনা দিচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর অপারেটর আল আমিন হেলপার রাকিব ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।
র্যাবের আইনও গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, ইফসকন কোম্পানী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি থেকে ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্ত হয়। গার্ডার বহনের ক্রেন এ প্রতিষ্টানের নিকট না থাকায় বিল্ড ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠান থেকে অপারেটর ও হেলপারসহ এই ক্রেনটি মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নেয়। ইফসকন এর সত্ত্বাধিকারী গ্রেফতারকৃত ইফতেখার ও হেড অব অপারেশন গ্রেফতারকৃত মিঠু অপারেটরদের দক্ষতা ও যোগ্যতা ও ক্রেনের ফিটনেস যাচাই না করেই গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল সড়কে ভারী গার্ডার স্থাপনের কাজে নিয়োজিত করছিলেন। এছাড়াও গার্ডার স্থাপনের সময় অতিরিক্ত একটি সহায়ক ক্রেন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন জানান, থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিঃ মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে এই ক্রেন সরবরাহ করে। প্রতিষ্টানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গ্রেফতারকৃত রুহুল আমিন এবং মার্কেটিং ম্যানেজার গ্রেফতারকৃত তুষার ক্রেনের ভাড়া প্রদান, চুক্তি, ড্রাইভার নিয়োগ; ক্রেনসমূহের ফিটনেস যাচাইসহ অন্যান্য দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।
র্যাব বলছে, গ্রেফতারকৃত রুহুল ২০১০ সালে এবং গ্রেফতারকৃত তুষার ২০১৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে। তারা অতিরিক্ত লাভের জন্য অল্প পারিশ্রমিকে ভারী গাড়ি চালনার লাইসেন্স ব্যতিত অপারেটর আল আমিনকে নিয়োগ প্রদান করে। এছাড়াও ক্রেনের সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়েছিল ২০২১ সালে। কিন্তু ২০২২ সালে ক্রেনের কোন ধরণের ফিটনেস যাচাই করা হয়নি বলে জানা যায়।
এছাড়া গ্রেফতারকৃত জুলফিকার সিজিজিসি এর বিআরটি প্রকল্পের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ২০২১ সালে যোগদান করে। সে মূলত এসএসসি পাশ। তাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার কোন ধরণের ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক দক্ষতা নেই। সে প্রকল্পের বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা থেকে উত্তরার আজমপুর এলাকা পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। দুর্ঘটনার দিনে ভারী গার্ডার স্থাপনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সে কোন ধরণের নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন, পর্যাপ্ত ট্রাফিক নিয়োগ প্রদান করেনি। এছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হওয়া সত্ত্বেও সে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ডিএমপি ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃত মঞ্জুরুল সাড়ে ৩ বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠানে প্রকিউরমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করে আসছিল। সে চাইনিজ ভাষায় দক্ষ হওয়ায় উক্ত কোম্পানির সাথে যোগাযোগ স্থাপন ঠিকাদারী কাজ পাওয়ার ব্যবস্থা করে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত রুবেল ৩ মাস পূর্বে এবং গ্রেফতারকৃত আফরোজ গত মাসে ফোর ব্রাদার্স গার্ডস সার্ভিস ট্রাফিক ম্যান হিসেবে যোগদান করে। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তাদের কোন প্রশিক্ষণ ছিল না। দুর্ঘটনার সময় তারা দুর্ঘটনাস্থলে প্রকল্পের ট্রাফিকম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিল।
এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরই কেন এত আলোচনা, আগে সচেতনতা কেন নয়— এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা উচিত। সেই কাজটি তারা করেনি। তাছাড়া এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী থাকা সত্ত্বেও তার সংখ্যা কম থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ওই স্থানে দায়িত্বে থাকা চীনা কর্মকর্তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি— এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মঈন বলেন, একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন। তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসবে এ ঘটনায় দায়ী কারা। এছাড়া এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে যাদের দায় রয়েছে বা জড়িত রয়েছে তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:18 AM |
Sunrise | 6:39 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:20 PM |
Isha | 6:40 PM |