আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১২:৪৪
বিডি দিনকাল ডেস্ক:- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সুস্থ নয় বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ড।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এই কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘‘ উনার দুইটা কন্ডিশন। এক নাম্বার, উনি ক্লিনিক্যালি স্টেবল বাট নট কিউর। বাট সি ইজ নট ফ্রি অব ডিজিস।”
‘‘ দুই নম্বর হচ্ছে, আমাদের কোবিড পরিস্থিতির জন্য, সেকেন্ডারি ইনফেকশনের জন্য জন্য এবং সি ইজ বেরি মার্চ বারগানেবল। সেজন্য আপাতত উনাকে বাসায় পাঠাচ্ছি। এরপরে যদি কোনো রকম ক্রাসিস হয় উই আর রেডি টু রেসিভিং হার এগেইন ইন হসপিটাল।”
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিতসার প্রসঙ্গ টেনে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘‘ আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যতগুলো পসেবল ট্রিটমেন্ট ছিলো তা আমরা দিয়েছি। আমরা হসপিটালের ডাক্তারদের সাথে, বাইরের কনসালটেন্টের সাথে, অন্যান্য হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করেছি। আমরা বিদেশে কনসালটেন্টদের সাথে, ইউকে, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার কনসালটেন্টদের সাথে কথা বলেছি। সবারই একই মত যে, আপাতত আমরা কনট্রোল করেছি। বাট সি নিডস টু গো এবরোড ফর হার পারমেন্টে ট্রিটমেন্ট।’’
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিতসকরা জানান, তার রোগের চিকিতসা হয়নি। তবে রোগের জটিলতা কিছু কমনো হয়েছে। যে কারণে খালেদা জিয়া আশঙ্কামুক্ত নন।
বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের ১১ তলায় মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক এম এস আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসেন, অধ্যাপক শেখ মুহাম্মদ আবু জাফর, অধ্যাপক নুর উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক লুতফুল আজিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক এজেডএস জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, মুহাম্মদ আল মামুন, ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. শাহরিয়ার সাইদ,ডা. আরমান রেজা চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৩ নভেম্বর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। লিভারে রক্তক্ষরনের কারণে তাকে দুই মাস সিসিইউতে রেখে চিকিতসা দেয়া হয়। কেবিনে আনা হয় ১০ জানুয়ারি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সুচিকিতসার জন্য অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে এভারকেয়ার হাসতাল কর্তৃপক্ষ। এই মেডিকেল টিমে আরো দুইটি বেসরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিতসকদের যুক্ত করা হয়।
খালেদা জিয়া তিন দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিতসা নেন। এবারই প্রথম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের থেকে মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা অবহিত করে।
খালেদা জিয়া বর্তমানে সুস্থ না হলেও কেনো ছাড়পত্র মেডিকেল বোর্ড দিচ্ছে জানতে চাইলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘ উনার বিল্ডিং আপাতত বন্ধ হলেও তার অসুখের ট্রিটমেন্ট সেভাবে হচ্ছে না। এখন উনার অবস্থা স্থিতিশীল আছে। এখন আমরা দেথতে পারছি যে, সারাদেশে ও হাসপাতালে(এভারকেয়ার হাসপাতালে) করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসে এই হাসপাতালের প্রায় ৩৮০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং তারা বিভিন্নভাবে চিকিতসা নিয়েছেন। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে উনার স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই মুহুর্তে উনার কন্ডিশন যেহেতু স্টেবল আছে সেহেতু আমাদের তত্ত্বাবধায়নে বাসায় রেখে উনার চিকিতসা করা প্রয়োজন।”
‘‘ তা না হলে এই সংক্রমণ যদি আবার কোনো জটিলতার সৃষ্টি করে তাহলে এটার ম্যানেজমেন্টটা জটিল ও কঠিন হয়ে যাবে।সেজন্য আমরা উনাকে আজকে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি বলেন, ‘‘ দুইবার মেসিভ ব্লিডিং উনার একটা জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় চলে গিয়েছিলো। এখন আমাদের স্পেসিফিক ম্যানুভারিংয়ের পরে আমরা মনে করছি যে, ওই ধরনের মেসিভ ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত দৃষ্টিতে নাই। কিন্তু মেডিকেল প্রোফেশনে ১০০% গ্যারেন্টি কিছুতে দেয়া যাবে না। ”
‘‘ তবে আমরা জানি যে, উনার এখন স্মেলে ব্লিডিং হতে পারে। যেটা হয়ত বাসায় রেখে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হতে পারে। এজন্য আমরা উনাকে করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে রাখার যে রিস্ক তার চাইতে বাসায় রেখে চিকিতসার সেইভ বলে আমরা মনে করি।”
এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘ মূল অসুখ লিভার সিরোসিসে যে চিকিতসা সেটা কিন্তু আমরা করতে পারিনি এখনো। যে ভ্যাসেল দিয়ে রক্তক্ষরন হচ্ছে সেই রক্তের প্রবাহটা বাইপাস করে টিপসের মাধ্যমে যে প্রক্রিয়া তা আমাদের দেশে নেই। উন্নত চিকিতসা সেজন্য প্রয়োজন।”
লিভার সিরোসিসে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে গত ৯ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওইসময়ে ফিরোজার বাসায় চিকিতসকদের তত্ত্বাবধায়নে তিনি চিকিতসা নিয়ে সরে উঠেন। পরে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময়ে তিনি দুই মাস এই হাসপাতালে চিকিতসা নিয়েছিলেন।
৭৭ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ বছর ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভোগছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় ২০০৮ সালে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। ছয় মাস পর পর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |