আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১২:৩৯
এম, এ কাশেম চট্টগ্রাম থেকে : ভোপান্তির অপর নাম ছিলো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।তা থেকে বেরীয়ে আসতে নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে এখানে। সূত্র জানায়, বিভিন্ন সেবার বিপরীতে নতুন নিয়মে ইউজার ফি আদায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। নতুন নিয়মের আওতায় ব্যাংকের তত্ত¡াবধানে কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে ইউজার ফি আদায় করা হচ্ছে। আর ফি আদায়ের এ কার্যক্রম তত্ত¡াবধানে রয়েছে রাষ্ট্রয়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক, চমেক শাখা। এই কার্যক্রমের আওতায় একজন সেবা প্রার্থী এখন হাসপাতালের যে কোনো কাউন্টারে সব ধরণের ফি পরিশোধ বা সব ধরণের টিকিট কাটার সুযোগ পাচ্ছেন। এতোদিন এমর ধরণের সুযোগটি ছিলো না বলে অনেকেই জানান দেন।।
ইমার্জেন্সির (বর্তমানে ওসেক) কাউন্টারে কেবল ইমার্জেন্সি সেবা ও ইনডোরে ভর্তির জন্য টিকিট কাটা যেতো। আর পরীক্ষা-–নিরীক্ষার সেবা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটতে হতো। বিভাগের নির্দিষ্ট কাউন্টারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সেবা ব্যতীত অন্য কোনো সেবার ফি পরিশোধের সুযোগ ছিলো না। তবে, এখন ইমার্জেন্সির কাউন্টার থেকেই একজন সেবা প্রার্থী রেডিওলজি বিভাগের আল্ট্রাসনোগ্রাফি কিংবা সিটি স্ক্যান সহ সব সেবার ফি পরিশোধ করে টিকিট নিতে পারছেন। একই ভাবে প্যাথলজি বিভাগের বিভিন্ন পরীক্ষা বাবদ ও এখানে ফি পরিশোধ করা যাচ্ছে। আউটডোরের টিকিটও কাটতে পারছেন। কেবল ইমার্জেন্সি কাউন্টারেই নয়, হাসপাতালে স্থাপন করা সবকয়টি কাউন্টারের যে কোনটিতেই এ সুযোগ পাচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা। নতুন এ নিয়মের ফলে সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তি কমার পাশাপাশি ইউজার ফি বাবদ হাসপাতালের আর্থিক হিসাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের কথা বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে (ওসেক) টিকিট কেটে সেবা গ্রহণ, আউটডোরে (বহিঃবিভাগে) ডাক্তার দেখানো, ইনডোরে রোগী ভর্তি, রেডিওলজি ও প্যাথলজিসহ সব ধরণের পরীক্ষা–নিরীক্ষা (এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, সিবিসি, আরবিএস, ইউরিন, ডোপ টেস্ট, ইসিজি, ইকো, এন্ডোসকপি, ব্রঙ্কোসকপি, রেডিওথেরাপি প্রভৃতি) এবং অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া সহ যাবতীয় ইউজার ফি এতোদিন হাসপাতালের নিজস্ব কর্মচারীর মাধ্যমে ম্যানুয়ালি আদায় করা হতো। নির্ধারিত ৬টি কাউন্টারে এসব ফি নেয়া হতো। তবে নতুন নিয়মে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে ব্যাংকের তত্ত¡াবধানে কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে এসব ফি আদায় করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ৭টি কাউন্টারে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বা ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে (ওসেক), মূল ভবনের নিচতলায় বøাড ব্যাংকের সামনে, এনসিলিয়ারি ভবনের নিচতলার সামনে ও ভিতরে (দুটি), এনসিলিয়ারি ভবনের নিচতলার চর্ম ও যৌন রোগ বহিঃ বিভাগে, এনসিলিয়ারি ভবনের ৪র্থ তলায় প্যাথলজি বিভাগে এবং মূল ভবনের ৩য় তলায় রেডিওলজি বিভাগের সামনে কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। একেকটি কাউন্টারে ৩ থেকে ৫টি কম্পিউটার বসানো হয়েছে। ৭টি কাউন্টারে সবমিলিয়ে ২৫–৩০টি কম্পিউটারের মাধ্যমে ইউজার ফি আদায় কার্যক্রম চলছে। তবে, পরবর্তীতে কাউন্টারের সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
রোগী ও সেবা গ্রহীতাদের সুবিধার্থেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে মন্তব্য করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শামীম আহসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নতুন নিয়মে রোগীরা উপকৃত হচ্ছেন। একজন রোগী যে কোনো কাউন্টার থেকে এখন যে কোনো টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। যেমন– এতদিন ইমার্জেন্সিতে শুধু ইমার্জেন্সি সেবা ও ইনডোরে ভর্তির টিকিট কাটার সুবিধা ছিলো। কিন্তু, নতুন পদ্ধতিতে একজন রোগী ইমার্জেন্সি থেকেও আউটডোরের টিকিট কাটতে পারছেন। এঙ–রে, সিটি স্ক্যান, ইসিজির ফিও দিতে পারছেন। আগে টিকিট কাটতে গিয়ে রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো, তবে নতুন পদ্ধতিতে একই টিকিট সব কাউন্টার থেকে সংগ্রহের সুযোগ থাকায় রোগীদের এ ভোগান্তি আগের মতো থাকছে না।
নতুন নিয়মে এখন দিনের আয় দিনে ব্যাংকে জমা হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, আগে সেবা আয় বাবদ অর্থ দিনে দিনে ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা থাকলে ও অনেকাংশে সে’টি মানা হতো না। কিন্তু এখন কম্পিউটারের মাধ্যমে হিসাব রাখা হচ্ছে এবং দিনের আয় ওই দিনেই ব্যাংকে জমা হয়ে যাচ্ছে। আর্থিক হিসাবের ক্ষেত্রে এটিও বড় ধরণের সুফল বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে হাসপাতালের আর্থিক হিসাবে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পথ সুগম হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শামীম আহসান।
উল্লেখ্য, হাসপাতালের যাবতীয় ইউজার ফি ব্যাংকের মাধ্যমে আদায়ের বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে গত বছরের (২০২২ সালের) ১২ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শামীম আহসানের স্বাক্ষরে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয়। ওই বছরের ৪ এপ্রিল চমেক হাসপাতালের এ প্রস্তাবনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত চেয়ে চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। ২৫ মে এ সংক্রান্ত মতামত প্রদান করে মন্ত্রণালয়ে ফিরতি চিঠি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামতের ভিত্তিতে সর্বশেষ গতবছরের ২৮ আগস্ট এ বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ–সচিব মোহাম্মদ রুকন উদ্দিনের স্বাক্ষরে প্রদত্ত এক চিঠিতে এ সংক্রান্ত অনুমোদনের তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদনের পর গত ১ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়মে ইউজার ফি আদায়ের এ কার্যক্রম শুরু করেছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাহা প্রশংসার দাবি রাখে বলে সেবা গ্রহিতারা আশা পোষন করে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভোগান্তি চরম সীমার গিয়ে ঠেকেছিলো। চাল ু হওয়া নতুননিয়ম যদি ঠিকঠাক ভাবে যদি চলে তাহলে তো ভালো-ই নয় তো কর্তৃপক্ষ মানুষের রোষানলে পড়ে যাবেন তাতে। নিউজ করনে আজাদীর বিঞ্চিৎ সহযোগীতা।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |