আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:২৭
ফেনী:জমির বিরোধ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী খুনের ১১ বছর পর আসামি ধরা দিয়েছেন। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে জামাল উদ্দিন ও বিবি আয়েশা দম্পতি খুনের ঘটনার ১১ বছর পর গোলাম সরোয়ার নামে এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মতিগঞ্জ আরএম হাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি।
ফেনী কোর্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম জিলানী জানান, মঙ্গলবার বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন সরোয়ার। আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহমদ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সূত্রে জানা গেছে, ভাদাদিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিন ও মো. শাহ আলম পরিবারের সঙ্গে এক শতক জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে ২০০৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জামাল উদ্দিনের স্ত্রী বিবি আয়েশাকে হুমকি-ধমকি ও মারধর করেন মো. শাহ আলম, তার ছেলে রিয়াদ, স্ত্রী আজিমা আক্তার, সমাজপতি রফিকুল ইসলাম মাস্টার ও গোলাম সরোয়ার।
ওই রাতেই বিবি আয়েশা মারা গেলে অজ্ঞাত আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের মেয়ে হাজেরা আক্তার লাইলী। আয়েশার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডে মূল আসামিকে বাদ দিয়ে নিহতের স্বামী জামাল উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বাদী তাতে আপত্তি জানালে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। সিআইডি চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার বাদী হাজেরা আক্তার লাইলী জানান, ঘটনার পর সৌদি আরব চলে যাওয়ার পর তার বাবা জামাল উদ্দিন ২০১৭ সালের নভেম্বরে দেশে ফিরেন। এদিকে বিরোধীয় এক শতক সম্পত্তি নিয়ে ২০১৪ সালে আদালতে আরেকটি মামলা করেন তিনি। এ ঘটনায় ২০১৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর আদালতের রায় পেয়ে দখলে নিতে যান জামাল উদ্দিন। আসামিপক্ষের লোকজন মামলাটি তুলে নিতে এমনকি ওই জায়গায় না যেতে একাধিকবার হুমকি-ধমকি দেন।
২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ওই জায়গায় বসতি স্থাপন করতে গেলে জামাল উদ্দিনকে ব্যাপক মারধর করেন শাহ আলম ও রফিকুল ইসলাম মাস্টার গংরা। ঘটনার পরদিন জামাল উদ্দিন থানায় মামলা করেন। সব মামলা তুলে নিতে তারা হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। ৩১ জুলাই রাত ২টার দিকে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর শেষে জামাল উদ্দিনকে বেধড়ক পিটিয়ে মুখে বিষ দেন তারা। পরে তাকে স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরবর্তীতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরদিন ১ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।
জামাল উদ্দিন বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন বলে চিকিৎসকরা জানালে এ ঘটনায় তার পুত্রবধূ জাকিয়া আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্তাধীন রয়েছে।
এদিকে জামাল উদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনায় তার দায়ের করা মামলায় পুলিশ তদন্ত শেষে ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
হাজেরা আক্তার লাইলী জানান, বিভিন্ন সময় দায়ের করা মামলা তুলে নিতে তাকেও হুমকি দেয়া হচ্ছে। ২০১০ সালের শেষের দিকে আসামিপক্ষের লোকজন তাকেও মারধর করে। ২০১৮ সালের ১৫ মে সকালে শাহ আলম ও তার জামাই দাউদুল ইসলামসহ পরিবারের লোকজন হামলা চালান। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে একপর্যায়ে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। এ ঘটনায় তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যৌন হয়রানির মামলা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু জানান, আসামিপক্ষের লোকজন একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাদীর পরিবারকে ন্যায্য বিচার পেতে আইনি সহায়তা দেয়া হবে।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |