আজ মঙ্গলবার | ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:০০
মাত্র ১৭ মিনিটের যাত্রা। এ যাত্রা ছিল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ। পদ্মা সেতুর পর এবার বাঙালি জাতির আরও একটি অবিশ্বাস্য স্বপ্নপূরণ হলো। যানজটের নগরী ঢাকায় বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে নতুন এক মাইলফলকে প্রবেশ করলো দেশ। গতকাল বেলা ১১টার পর উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নামফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। এসময় তার সঙ্গে জাতির পিতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। পরে সুধী সমাবেশ শেষে দুপুর দেড়টায় মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশনে গিয়ে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বৃক্ষরোপণ করেন এবং দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর অর্থ পরিশোধ করে মেট্রোরেলের টিকিট কাটেন তিনি।
এসময় শেখ রেহানাও টিকিট কাটেন। পরে একে একে দুই শতাধিক সফরসঙ্গী টিকিট কাটেন। স্বপ্নের মেট্রোরেলে চড়ে মাত্র ১৭ মিনিটে উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী মেট্রোরেলটি দুপুর ১টা ৫৪ মিনিটে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুর ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে এসে পৌঁছায়। প্রায় ১২ কিলোমিটারের এই পথে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী মেট্রোরেলের চালক ছিলেন মরিয়ম আফিজা। প্রথম যাত্রায় প্রধানমন্ত্রীর ভ্রমণসঙ্গী হয়েছেন তার ছোটবোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের ১০ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম, পোশাককর্মী, রিকশাচালক, সবজি বিক্রেতা, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী আর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এ ছাড়া প্রথম ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন- স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী, ৩ জন উপমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর ছয় উপদেষ্টা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৯ সদস্য, ঢাকা মহানগরের ১২টি আসনের সংসদ সদস্য, সচিব এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র। মেট্রোরেলের উদ্বোধনী যাত্রায় মোট যাত্রী সংখ্যা ছিল ২২০ জন। আজ থেকে বাণিজ্যিক ভাবে সাধারণ যাত্রীদের নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। শুরুতে আগারগাঁও থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ি যাবে ট্রেন। মাঝের কোনো স্টেশনে থামবে না। আগামী ২৬শে মার্চ থেকে সব স্টেশনে থামবে।
এদিকে মেট্রোরেল উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাঙালির গৌরব ও বাংলাদেশের উন্নয়ন মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হয়েছে। সব বাধা মোকাবিলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। বলেন, পদ্মা সেতুর পর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় জনগণের মাথার মুকুটে অহংকারের আরও একটি পালক যোগ হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ৬ মাসের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করে দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর এক নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লা নুরী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপসসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সারা বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। আর মেট্রোরেল চালু হওয়ার মধ্যদিয়ে দেশ বৈদ্যুতিক, দূর নিয়ন্ত্রিত এবং দ্রুততম যোগাযোগের যুগে প্রবেশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতি সারা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। আজকে আমরা আরেকটি নতুন অহংকারের পালক বাংলাদেশের জনগণের মাথার মুকুটে সংযোজিত করলাম। সরকার প্রধান বলেন, যেকোনো কাজ করতে গেলে অবশ্যই সাহসের প্রয়োজন হয়, সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে প্রতিটি কাজ পরিকল্পনা নিয়ে সম্পন্ন করেছে। যে কারণে মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, মেট্রোরেলের উদ্বোধনের ফলে একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে চারটি মাইলফলক ছুঁলো বাংলাদেশ। প্রথমত, মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক যানের যুগে প্রবেশ করলো। তৃতীয়ত, ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যান এটি, যেটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি ধাপ। চতুর্থত, বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন যানের যুগে প্রবেশ করলো। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মেট্রোরেল। শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল পরিচালনায় অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা থাকবে না। এটি পরিচালনায় আমরা নিজেরাই স্মার্ট নাগরিক তৈরি করবো। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব হবে।
মেট্রোরেল ব্যবহারে সবাইকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক টাকা খরচ করে মেট্রোরেল করা হয়েছে। এটা সংরক্ষণ করা, মান নিশ্চিত করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ব্যবহারকারীদের দায়িত্ব। ডিজিটাল ডিভাইস যেন নষ্ট না হয়, ব্যবহারের ক্ষেত্রে যত্নবান হবেন। কেউ যেন আবর্জনা না ফেলে, খেয়াল রাখবেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার অংশ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসম সাহসে আমরা অসীম, সম্ভাবনার পথে ছুটিয়া চলেছি। এগিয়ে যাব আমরা দুর্বার গতিতে, এগিয়ে যাবে বাঙালি দুর্বার গতিতে। গড়ে তুলবো সব বাধা অতিক্রম করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ। ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জয়ী করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মেট্রোরেলের পাশে নিহত জাপানি কর্মীদের স্মরণে স্মৃতিফলক করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে সারা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছি। আজ আরেকটি সাফল্য সংযোজিত হলো। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন নির্মাণ হবে। মোট ২১.২৬ কিলোমিটার পথ নির্মাণ হবে। আমরা নির্বাচনে ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম ৬টি লাইন করবো। যা ২০৩০ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। বাকিগুলোর সমীক্ষা চলছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, আমাদের দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি যারা, তারা যেন সহজে মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারেন সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা কোচ, মুক্তিযোদ্ধারাও চলবেন বিনা পয়সায়। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরবাসী ও অংশীজনের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছাড়া মেট্রোরেল নির্মাণ দুরূহ কাজ ছিল। একটি সুন্দর মহানগরী বিনির্মাণে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও নির্ধারিত সময়ের আগে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন আওয়ামী লীগ সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা, টিম ডিএমটিসিএল, প্রকল্প কর্তৃপক্ষ, নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একীভূত প্রচেষ্টার ফসল। আগামী প্রজন্মের জন্য ঢাকা মহানগরীকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় আমরা এগিয়ে যাবো নিরন্তর-ইনশাআল্লাহ। আমি মেট্রোরেলের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। এদিকে মেট্রোরেল উদ্বোধন ঘিরে সকাল থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ি ও আগারগাঁও স্টেশনে উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও অনেকে মেট্রোরেল দেখতে আসেন। সরকারের এ সাফল্যে তাদের উচ্ছাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
সবইতো করছে শেখ হাসিনার সরকার-ওবায়দুল কাদের: এদিকে মেট্রোরেলের উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে রাজধানীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বেলা ১২টার পর উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী-সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আজ মেট্রোরেল দৃশ্যমান। আজ বাংলাদেশের জন্য আনন্দের দিন। রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নপূরণের দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য ও সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশের মানুষ একের পর এক অর্জন করছেন স্বাধীনতার সুবর্ণ ফসল। মেট্রোরেলের উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী আপনার সরকারের সাফল্যের মুকুটে যোগ হতে যাচ্ছে আরেকটি হিরন্ময় পালক। তাই আজ দিকে দিকে ধ্বনিত হচ্ছে শেখ হাসিনার অর্জন, গণপরিবহনে মেট্রোরেল সংযোজন। শেখ হাসিনার অবদান বাংলাদেশের ঢাকায় মেট্রোরেল দৃশ্যমান। তিনি বলেন, সবই তো করছে শেখ হাসিনার সরকার। শত সেতু একদিনে উদ্বোধন দেখেছেন কোথাও, গুগলেও নেই। শত রাস্তা, শত সড়ক একদিনে। মেট্রোরেল ঢাকায় প্রথম, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রথম, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে আসছে সামনের বছর এটাও প্রথম, ঢাকা থেকে গাজীপুর বাস র?্যাপিড ট্রানজিট এটাও প্রথম। এসব প্রকল্প আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আপনি (প্রধানমন্ত্রী) উদ্বোধন করবেন, আমরা আশা করি। সবই শেখ হাসিনা করছে, শতভাগ বিদ্যুৎ এতো বড় বিশ্বকাপ হয়ে গেল কোথাও লোডশেডিং হয়েছে কেউ বলতে পারবে। মেট্রোরেল করে তিনি আবারো প্রমাণ করছেন ‘ইয়েস ইউ ক্যান’। কেন আমরা পারবো না, আমরা বীরের জাতি। বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে, তারা অপবাদ দিয়েছে। আমি বলতে চাই আমরা বীরের জাতি, চোরের জাতি নই। তিনি বলেন, বিভিন্ন অপবাদ দেয়া ব্যক্তিরা মেট্রোরেল নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, তা বলতে পারছেন না। তারা এখন বলছেন, মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি। আসলে সবই তাদের মনের জ্বালা।
ঢাকার চেহারা বদলে দেবে মেট্রোরেল: জাপানি রাষ্ট্রদূত: ‘আমরা সত্যিই গর্বিত যে জাপান কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের ইতিবাচক উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে। রাষ্ট্রদূত হিসেবে এই উন্নয়নের সঙ্গে চলতে চাই। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করবো। আমি বিশ্বাস করি ঢাকার চেহারা বদলে দেবে মেট্রোরেল।’ গতকাল মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর সুধী-সমাবেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দ্রুতগতির মেট্রোরেল সেবার মধ্যদিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে। সত্তর দশকের শুরু থেকে জাপান বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও নিরলস কাজ করছে। বাংলাদেশ এখন এশিয়ায় দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখছে তা পূর্ণতা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইওয়ামা কিমিনিরো। ‘আমরা খুবই গর্বিত যে জাপান কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের এই ইতিবাচক উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে এই উন্নয়নের সঙ্গে চলতে চাই। তিনি বলেন, ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।
থিম সং: অর্থনীতির চাকা ঘুরবে পেছনে ফেলে যানজট: উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এরিয়াল ভিউ প্রদর্শনীতে বাংলাদেশে মেট্রোরেল নির্মাণযজ্ঞের ইতিবৃত্ত তুলে ধরা হয়। পরে মেট্রোরেলের থিম সং ‘অর্থনীতির চাকা ঘুরবে পেছনে ফেলে যানজট’ পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী, এমপি মমতাজ বেগম। তার গানের কথা বলা হয়- বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়, স্বপ্নের মেট্রোরেলের শুভ যাত্রায়। শেখ হাসিনা আজ অনন্য উচ্চতায়; মেট্রোরেল, আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেল। বাঁচবে সময়, বাঁচবে পরিবেশ; অর্থনীতির চাকা ঘুরবে পেছনে ফেলে যানজট, এগিয়ে চলবে বাংলাদেশ।
জাপানিদের বাংলায় মুগ্ধ দর্শকরা: মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা এবং জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে বাংলা কথায় মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি ইওয়ামা তার বক্তব্যের সূচনা করেন বাংলায়। মাত্র ১০ দিন আগে রাষ্ট্রদূত হয়ে ঢাকায় আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, আমি সেই সম্পর্কে আরও গভীর করতে চাই। অতীতের মতো বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় ভবিষ্যতেও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল দুই দেশের সহযোগিতার ‘প্রতীক’ হয়ে থাকবে। জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে-ও তার বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমি এখানে এসে খুবই খুশি হয়েছি। মেট্রো কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে, তা অল্প কিছুদিনের মধ্যে দৃশ্যমান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ এই পরিবহন ঢাকার সাধারণ মানুষের জীবনকে বদলে দেবে। তাদের আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক। এমএএন সিদ্দিক বলেন, সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে মেট্রোরেল আজ অনন্য, দৃশ্যমান। লক্ষ্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তিনি বলেন, আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসে এমআরটি-৬ লাইন চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই প্রথম অংশ উদ্বোধন করতে সক্ষম হয়েছি। ডিএমটিসিএল এমডি জানান, এমআরটি লাইন-৬ এর মতিঝিল অংশ আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুন মাসে উত্তরা-কমলাপুর ট্রেন চালানো সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:20 AM |
Sunrise | 6:40 AM |
Zuhr | 12:01 PM |
Asr | 3:02 PM |
Magrib | 5:22 PM |
Isha | 6:43 PM |