আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:৩২
মনির হোসেন জীবন-রাজধানীর দক্ষিণখানে ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নীচে লাফিয়ে পড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্নহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম সানজানা (২৩)। নিহত সানজানা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে, আত্নহত্যার আগে ওই ছাত্রী একটি চিরকুট লিখে যান। সেখানে তিনি তার বাবাকে ‘পশু ও রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকার একটি ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে সানজানা (তার) মৃত্যু হয়। ঘটনার পর দক্ষিনখান থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্বার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে, আজ রোববার সকালে দক্ষিণখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি কাছ থেকে ছাদের চাবি নেয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সানজানা। এরপর সে ছাদে গিয়ে তাদের ১০তলা ভবন থেকে আত্নহত্যা করার জন্য নীচে লাফিয়ে পড়েন। এতে সে গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে স্হানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে চার টার দিকে সানজানাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন বলছে, নিহত শিক্ষার্থী সানজানার বাবা শাহীন আলম গত পাঁচ বছর আগে তাদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানা জানি হলে দুই পরিবারের মধ্যে টানাটানি ও মনোমালিন্য দেখা দেয়। এনিয়ে মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়া হত। এঘটনাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হলে এরপর সানজির মা কিছু দিন আগে সানজির বাবাকে ডিভোর্স দেন। এজন্য তার বাবা শাহীন আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসহ আনুসঙ্গিক সাংসারিক খরচাদি দিতেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওসি মামুনূর রশীদ জানান, আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লেখে গেছেন ওই শিক্ষার্থী । পরে চিরকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবাই দায়ী। একটা ঘরে পশুর সঙ্গে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সঙ্গে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।
পুলিশ জানান, আমরা নিহত শিক্ষার্থীর (তার) কিছু প্রেসক্রিপশন পেয়েছি। মার্চেও সানজানা মানসিক রোগের জন্য চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাতে তার আত্মহত্যার প্রবণতা আছে বলে দেখা গেছে।
নিহত শিক্ষার্থীর মা উম্মেসালমা ও তার আত্নীয়রা অভিযোগ করে জানান, আমার স্বামী সানজানার বাবা শাহীন আলম আমাকে না জানিয়ে গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছে। বিয়ের পর থেকে সংসারে ঝামেলা ও অশান্তি বিরাজ লেগেই ছিল। সেই সাথে আর্থিক টানাপোড়া চলছি। মাঝে মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া হত। একদিকে পাষণ্ড পিতার নানাবিধ অত্যাচার ও অনাচার সহ্য করতে না পেরে আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে সানজানা আত্নহত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ট বিচার দাবী করছি।
এদিকে, দক্ষিনখান থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল হক মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, পুলিশ একটি চিরকুট ও বেশ কিছু কাগজপত্র ইতিমধ্যে উদ্বার করেছে। এবিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচেছ বলে জানান তিনি।
দক্ষিণখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আত্নহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় আজ একটি মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে, তবে, ওই মামলায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সানজানার পিতা শাহীন আলমকে অভিযুক্ত (আসামী) করা বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |