আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:১৪
ডেস্ক:-১৯৯৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রকাশ হয় মানবজমিন। পঁচিশে পা রাখা মানবজমিন হাঁটি হাঁটি পা পা করে নয়, রাতদিন দৌড়াতে দৌড়াতে কাটিয়ে দিয়েছে দীর্ঘ চব্বিশ বছর। এ ২৪ বছরে কত কিছুই না ঘটে গেছে দেশে-বিদেশে! এক শতাব্দী পেরিয়ে নতুন শতাব্দীই শুধু নয়, এক সহস্রাব্দ পেরিয়ে নতুন সহস্রাব্দ শুরু হয়েছে। কতো দেশ স্বাধীন হয়েছে, কতো যুদ্ধ বেঁধেছে, কতো নতুন সরকার এসেছে-গেছে, কতো নতুন সংবাদপত্র আর টেলিভিশন চ্যানেলের আবির্ভাব হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু মানবজমিন ‘কারও তাঁবেদারি করে না’ স্লোগানকে সামনে রেখে ঠিকই এগিয়ে গেছে আপন গতিতে, আপন মহিমায়।
দেশের ভেতর আওয়ামী লীগ সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বিএনপি সরকার, গ্রেনেড হামলা, বাংলাদেশির নোবেল বিজয়, ওয়ান ইলেভেন সরকার, দেশের প্রধান দুই নেত্রীসহ অন্যান্য বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা ও শীর্ষ ব্যবসায়ীদের কারাগারে প্রেরণ, শাহবাগ ও হেফাজত আন্দোলন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা, প্রধান বিরোধী দলের বয়কটের নির্বাচন, হোলি আর্টিজান হামলা, দফায় দফায় রোহিঙ্গাদের আগমন, খালেদা জিয়ার জেল, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ফেইক নিউজের যুগে গণমাধ্যমের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ এসবকিছুই প্রত্যক্ষ করেছে মানবজমিন। তেমনি একুশ শতকের শুরু, নাইন ইলেভেন, ওয়ার অন টেরর, অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান, আরব বসন্ত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তার, ৬টি বিশ্বকাপ ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, করোনা মহামারি এসবও প্রত্যক্ষ করেছে মানবজমিন। কিন্তু শুধুই কী প্রত্যক্ষ করেছে?
মানবজমিনের একজন নগণ্য কর্মী হিসেবে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে পক্ষপাতিত্ব করা হয়ে যেতে পারে।কিন্তু মানবজমিন সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মতি ভাই (মতিউর রহমান চৌধুরী) যে সব সময় শিখিয়েছেন, কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না, একমাত্র সত্য ও ন্যায়ের পথ ছাড়া। সুতরাং, এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নেয়া যাক পাঠকদের কাছ থেকেই। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিতে পারে সহজ সমাধান। কারণ, বিভিন্ন পত্রিকার নানাবিধ সংবাদ পোস্ট করে অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী যেমন বিভিন্ন মন্তব্য করে থাকেন, তেমনি পত্রিকাগুলোর ফেসবুক পেজে শেয়ার করা নিউজ লিংকেও অনেকেই ‘কমেন্ট’ করে থাকেন।
রুবেল আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ীর কথাই ধরা যাক। তিনি ফেসবুকে মানবজমিন সম্পর্কে লিখেছেন, “মানবজমিন মানবিক সংবাদ প্রচারে আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।” সরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ উল্লাহ মনে করেন, “মানবজমিনই হলো পত্রিকা, বস্তুনিষ্ঠ সব সংবাদ ছাপে। একেই বলে গণমাধ্যম।” সোহেল রানা নামের জনৈক প্রবাসীর মতে, “সবসময় ভালো নিউজ করে মানবজমিন! হাজারো চাটুকার সাংবাদিকদের মাঝে এমন সব ভালো নিউজ করা সাংবাদিকরা সত্যিই প্রসংশা পাওয়ার দাবিদার।” ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ লিখেছেন, “আজকাল অনেক পত্রিকাই নিজেদের ফেসবুক পেজের কমেন্টস্ অপশন বন্ধ করে রাখে। মানবজমিনে ঢুকলে বুঝা যায় কেন তারা এমন করে।” মো. রিফাত ছন্দ মিলিয়েছেন এভাবে, “মানবজমিনের সংবাদ সব কড়া, দুর্নীতিবাজরা খায় ধরা।” আইনজীবী মোহাম্মদ জালাল লিখেছেন, “মানবজমিন করে গণমুখী সাংবাদিকতা। সব সময় রিয়েল ইস্যুতে ফোকাস করার জন্য মানবজমিনকে ধন্যবাদ।” অবসরপ্রাপ্ত সচিব শাহ জালাল লিখেছেন, “বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অনেকেই ইংরেজি নিউজের ভুল অনুবাদ করে। মানবজমিন এদিক থেকে ব্যতিক্রম।” স্বর্ণ ব্যবসায়ী হরিপদ দাশ নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, “মানবজমিন ছাড়া অন্য কোনো পত্রিকায় সঠিক নিউজ পাই না। সবাই তাঁবেদারি করে।” ড. মুশফিকা হাসনাইন লিখেছেন, “খুব ভালো লাগলো যে, মানবজমিন ইতিহাসভিত্তিক লেখাও নিয়মিত ছাপে।” অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এর মতে “মানবজমিন পড়লে দেশ-বিদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ খবর একসঙ্গে পেয়ে যাই।”
শুধু সাধারণ পাঠকই নন, বস্তুনিষ্ঠ সকল সংবাদ পেতে সংবাদপত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বা বরেণ্য সাংবাদিকরাও নিয়মিতভাবে মানবজমিন পাঠ করে থাকেন। দীর্ঘদিনের পরিচিত বিবিসির একজন সাবেক বর্ষীয়ান সাংবাদিক মানবজমিন প্রকাশের পর থেকে অদ্যাবধি নিয়মিতিভাবে তার বাসায় মানবজমিন রেখে চলেছেন। তিনি সব সময়ই বলেন, এই একটি পত্রিকা পড়লে একসঙ্গে সবকিছু পেয়ে যাই। সেদিন প্রথম আলোর একজন নিয়মিত কলাম লেখক বিদেশ থেকে ফোনে বললেন, “আমি এই দুটি (মানবজমিন, প্রথম আলো) পত্রিকা পড়লে বাংলাদেশের সব খবর বেশ ভালোভাবেই পেয়ে যাই। এমনভাবে প্রায় প্রতিদিনই দেশ-বিদেশ থেকে কেউ না কেউ, কোনো না কোনো প্ল্যাটফরমে মানবজমিনের প্রতি তাদের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেন।
একথাও ঠিক যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের যতোই সুনাম থাক না কেন তার কর্ণধার বা মূল পরিচালকদের সুনাম না থাকলে সে প্রতিষ্ঠান বেশিদিন নিজ সুনাম ধরে রাখতে পারে না। এদিক থেকে মানবজমিন বড় বেশি ভাগ্যবান। মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। দীর্ঘদিন স্বনামধন্য সব পত্রিকায় সাংবাদিকতা করে হয়েছেন সম্পাদক। বোধকরি সেজন্যই সহকর্মীদের ‘পালস’ তিনি খুব সহজেই সঠিকভাবে ধরে ফেলতে পারেন। কলামিস্ট হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় মতি ভাইয়ের লেখার জন্য পাঠক যেমন আগ্রহভরে অপেক্ষা করেন, তেমনি টেলিভিশন টকশোর সঞ্চালকের ভূমিকায় ও তিনি সমান জনপ্রিয়। অন্যদিকে, মানবজমিনের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহবুবা চৌধুরীও স্বমহিমায় উজ্জ্বল। কি বেতার, কি টেলিভিশনে সংবাদ পাঠক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় মাহবুবা চৌধুরীর শিশু মনস্তত্ত্ব্বের ওপর রয়েছে অসাধারণ দখল। নন্দিত এই শিশুসাহিত্যিকের লেখনীতে শিশুসাহিত্য উপস্থাপিত হয় অন্যরকম নান্দনিকতায়। মতিউর রহমান চৌধুরী এবং মাহবুবা চৌধুরী দম্পতি সমাজের সর্বমহলে সম্মানিত।
বেশ কয়েক বছর ধরে মানবজমিনে প্রথমে লেখক এবং পরবর্তীতে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছি। বলাবাহুল্য এ সময়ে মানবজমিনকে কখনোই ‘পর’ বলে মনে হয়নি। বোধ করি, দেশ-বিদেশে বিভিন্ন স্বনামধন্য গণমাধ্যম ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মানবজমিনের সাবেক সংবাদিকরা একই কারণে এখানে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
পরিশেষে একটি কথাই লিখবো, শুভ জন্মদিবস মানবজমিন। একটি প্রত্যাশাই করবো, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মানবজমিনও স্বমহিমায় থাকবে।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |