আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৫৭
মনির হোসেন জীবন – ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ বরণ) উদযাপনকে ঘিরে সরাসরি কোনো জঙ্গি থ্রেট বা হুমকি নেই। রমনা বটমূলকে ঘিরে পুলিশ ও বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় ব্যবস্হা গড়ে তুলা হয়েছে। যারা নববর্ষ উপভোগ করতে চান তারা নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে রমনার বটমুলে অনুষ্ঠানকে ঘিরে কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই। তবে, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
উড়োচিঠির হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, জঙ্গি নয়, কিছু দুষ্টু পোলাপান চিরকুট লিখে হুমকি দিয়েছে। তবে, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১ টার দিকে রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদা কর্মকর্তারা এসময় উপস্হিত ছিলেন।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, যে উড়োচিঠি এসেছে তা দেওয়া হয়েছে দাজ্জাল বাহিনী নামে। দাজ্জাল বাহিনী নামে বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই। কোনো দুষ্টু পোলাপান অতিউৎসাহী হয়ে চিরকুট লিখছে।
আদালতপাড়া থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ১০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছি। পলাতক জঙ্গিরা নজরদারিতে, তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরাসরি কোনো জঙ্গি থ্রেট বা হুমকি নেই।
তিনি আরো বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আনন্দমুখর করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। রমনা, টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরবরসহ যে সকল স্থানে নববর্ষের আয়োজন করা হবে সব খানেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
আমরা বীরের জাতি উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি বাঙালি হিসেবে মনে করি, দুই-একটা বোমা দিয়ে দমন করা যাবে না। ১৯৭১ সালে পাকহানাদার বাহিনী তাদের দোসররা কামান-বন্দুক নিয়ে এই বাঙালিদের দমন করতে পারেনি। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। কেউ কোনো ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘হুমকি দিয়েছে দাজ্জাল বাহিনী। এই নামে দেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই। কোনো দলও নেই। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে কোনো দুষ্ট পোলাপান অতিউৎসাহী হয়ে এমন চিরকুট লিখেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজকদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। তারপরও এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
ব্যাগ নিয়ে রমনা বটমুলে প্রবেশ করা যাবে না উল্লেখ করে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, রমনার বটমূলে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য ৯টি গেট থাকবে। তারমধ্যে চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। প্রতিটি গেটেই আর্থওয়ে থাকবে। ব্যাগ নিয়ে রমনায় প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়া সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান করা যাবে। এরপর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, পহেলা বৈশাখে অনেক সময় দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা ভুভুজেলাসহ বিভিন্নভাবে উচ্চ শব্দ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের শব্দ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রত্যকের চেক-ইন করা হবে। তাই বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে রমনায় আসবেন না।
রমনা বটমূলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,প্রতি বছর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রমনা বটমূলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। আমাদের সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট আন্তর্জাতিক মানের। যদি কোথাও বোমা পাওয়া যায় তাহলে সিটিটিসির রোবোটিকস সিস্টেম ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা যাবে। পরবর্তী সময়ে রোবটের মাধ্যমে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা যাবে। এরমধ্যে যদি কোনো দুষ্কৃতিকারী ঢুকে যায় তাহলে সোয়াত টিম সেই মহড়া দিয়েছে। তাদের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে।
তিন স্তরের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রমনাকেন্দ্রিক মোট ৯টি গেট থাকবে। এরমধ্যে চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। বাকি ৫টি গেট দিয়ে প্রবেশ-বাহির হওয়া যাবে। প্রত্যকটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। প্রত্যকেককে সার্চ করে রমনায় প্রবেশ করানো হবে।
ডিএমপির পুলিশ প্রধান বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখ যেন ঢাকাবাসীসহ সব বাঙালি উৎসবমুখরভাবে পালন করতে পারে সেজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে। রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রবীন্দ্রসরোবর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক প্রায় ২৭০০ পুলিশ কাজ করছে।
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, পহেলা বৈশাখে অনেক সময় দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা ভুভুজেলাসহ বিভিন্নভাবে উচ্চ শব্দ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের শব্দ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রত্যকের চেক-ইন করা হবে। তাই বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে রমনায় আসবেন না।
রমনায় লোক সমাগম বেশি হলে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রমনা পার্ক সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ৪টার মধ্যে সব অনুষ্ঠান শেষ করে রমনা ত্যাগ করতে হবে। চারটার পর আর কাউকে রমনায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, এরপরও যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। কেউ কোনো ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে চারুকলা অনুষদ পশ্চিম পাশের দেওয়ালে রঙের কাজ তদারকি করার সময় প্লাস্টিক চেয়ারের ওপর সাদা কাগজে ৫০ টাকার নোট পাওয়া যায়। ওই কাগজে লেখা ছিল- ‘শোভা যাত্রা কাজটা শিরকের এখানে এসে ক্ষতি করোনো তোমাদের। হামলা হতে পারে এনি টাইম ঐদিনের দাজ্জালি বাহিনী পাবেনা টের মোদের।’
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আবতাহী রহমান (২৫) ডিএমপি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন কমিটির অর্থ ও নিরাপত্তাবিষয়ক সদস্য।
এদিকে, মঙ্গল শোভযাত্রা বের করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে বের হওয়ার কথা রয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |