আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:২৫
‘কালো টাকা’ হিসেবে অপ্রদর্শিত আয় সাদা বা বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে ‘বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকারের সাথে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রীর যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে ‘ধুম্রজ্বাল’ সৃষ্টির কৌশল’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম্ আলমগীর।
শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী দেয়া বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ এটা(বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকার) হাস্যকর কথা। আমরা তো দেখলাম যে, আপনারা ওই মাছের টোপ দিয়ে যাদেরকে ধরেন তারা ….আপনার নিজেরাই তো এর সঙ্গে (দূর্নীতি) সাথে জড়িত। আপনি বাজেট দেখলেই বুঝতে পারবেন যে, রাঘর-বোয়ালদের খাবারের আরেক ব্যবস্থা করেছে। প্রত্যেক বছর একই ঘটনা ঘটছে এবং এর মধ্যে যারা অর্থনৈতিক বিশ্লেষক তারা বলছেন, এটা শুধুমাত্র ক্ষতি ছাড়া আর কিছু করবে না।”
‘‘ যেখান সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্যে ইনফ্লুয়েশন… দ্রব্যমূল্য এতো বেশি বেড়ে গেছে যে, এটা সাধারণ মানুষের কাছে সহনীয় হচ্ছে না। আজকে এই সমস্যা কথাগুলো বলে একটা ধুম্রজ্বাল সৃষ্টি করে মানুষকে কতদিন প্রতারিত করে রাখা হবে।”
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশের পরদিন শুক্রবার বিকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালো টাকা’ হিসেবে অপ্রদর্শিত আয় সাদা বা বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে ‘বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকারের’ সঙ্গে তুলনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বলি, মাছ ধরতে গেলে তো আধার দিতে হয়, দিতে হয় না? আধার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেই রকম একটা ব্যবস্থা, এটা আসলে আগেও হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই শুরু করেছিল, আর পরেও প্রত্যেক সরকারই করে।
“সেই সুযোগটা আমরাও দিয়েছি। অল্প ট্যাক্স দিয়ে সেই টাকাটা তোমরা ব্যাংকে নিয়ে আস, সেই ব্যবস্থাটাই হয়েছে। এটা নিয়ে নানা জনে নানা কথা। কিন্তু তারপরেও যেগুলো মানুষের প্রয়োজন সেই ক্ষেত্রে ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছি।”
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অরথ বছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত এই বাজেটে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ শতকরা ১৫ ভাগ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির উদ্যোগে প্রয়াত সিরাজুল আলম খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাঙালির জাগরণে করণীয় ও সিরাজুল আলম খান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
সিরাজুল আলম খানের প্রতি দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শ্রদ্ধা জানানোর কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমি মাহমুদুর রহমান মান্না সাহেবের পাশে বসে ছিলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম সিরাজুল আলম সাহেবের মৃত্যুর পরে আওয়ামী লীগ থেকে কি কোনো শোকবানী দেয়া হয়েছিলো। উনি বললেন যে, না দেওয়া হয়নি।”
‘‘ একবার ভাবুন কত বড় অকৃতজ্ঞ হলে একটি দল যাদের মূল চালিকা শক্তির মধ্যে এই মানুষটি ছিলেন তাতে কারা সহানুভূতি দিতে চায়নি। আজকে সেই একই কারণে জিয়াউর রহমানকে তারা সহ্য করতে পারে না, অনেককে পারে না। এতো বছর পরে প্রত্যেকেই যারা এদেশের জন্য অবদান রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের অবদানকে অস্বীকার করাটা সম্পূর্ণনভাবে অকৃজ্ঞ ছাড়া আর কিছু না। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সিরাজুল আলম খানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”
‘দেশের ভয়াবহ অবস্থা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখানে যারা বসে আছে আমরা সবাই বাংলাদেশের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। মুক্তি চায় বলেই আজকে আমরা একসাথে কাজ করছি। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশ একটা ভয়ংকর সংকটের মধ্যে পতিত হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজকে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।এমন একটা শাসকগোষ্ঠি জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে যারা দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে।”
‘‘ ১৯৭১ সালে এরা প্রায় সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলো, আপনারা অনেকই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আপনাদের কোনো স্বপ্নই বাস্তবায়িত হবে দূরে থাক সেই স্বপ্ন থেকে বহুদূরে বাংলাদেশকে তারা ছিটকে দিচ্ছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আজকে সিরাজুল আলম খানকে আবার নতুন করে মনে করা দরকার।মনে করা দরকার যে তার অসাধারণ সাংগঠনিক শক্তি, তার সেই তাত্ত্বিক দর্শনিক যে যোগ্যতা সেই যোগ্যতার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং সেই নামে স্বাধীন হতে তিনি সাহায্য করেছিলেন।”
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে আমরা এমন একটা শাসকগোষ্ঠির যাতাকলে পড়েছি যারা মানুষের কল্যাণের জন্য কিছু করা তো দূরে থাক… তারা মানুষকে শোষন করছে, নিগৃত করছে, নিপীড়ন করছে এবং প্রতি মুহুর্তে বাংলাদেশের যে ভবিষ্যত সেটাকে তারা ধবংস করে দিচ্ছে।”
‘আসুন গণতন্ত্র ফেরাতে একট্টা হই’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা সবাই একসাথে যুগপৎ আন্দোলন করছি। কেনো করছি? আমরা সবাই মনে করি যে এখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা একমাত্র উপায়। আমাদের অধিকারকে ফিরিয়ে আনা, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, বেঁচে থাকার অধিকারকে নিশ্চিত করা, আমাদের কথা বলার অধিকারকে নিশ্চিত করা…. এই বিষয়গুলো আজকে আমাদের সবচেয়ে বেশি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সেই আমাদের অর্জন করতে হবে।”
‘‘ আজকে এখানে সকল রাজনৈতিক কর্মী ও নেতৃবৃন্দ আছেন, আপনাদের কাছে আমাদের একটাই আবেদন… দলমত নির্বিশেষ আমাদের ছোটখাটো দোষ-ত্রুটি ভুলে গিয়ে আসুন আমরা সবাই একসাথে আমাদের সেই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা, এই মানুষগুলোর যে স্বপ্ন ছিলো সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা আবার সেই একজোট হয়ে সেই লড়াইটা শুরু করি। এই লড়াইয়ে অবশ্যই আমরা ওদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাসদের নুরুল আম্বিয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপ্ন, কেন্দ্রীয় নেতা তানিয়া রব, মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |