আজ বুধবার | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৭:১৫
এম, এ কাশেম চট্টগ্রাম ঃ উত্তর চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ধুমঘাট এলাকা দিয়ে প্রবাহীত ফেনী নদীর মুহুরী সেচ প্রকল্প বাঁধের মাটি কেটে নিজেদেও দখলে নিয়ে যাচ্ছেক্ষমতাসী দলীয় যুবলীগ ক্যাডাররা। ফলে, বর্ষা মৌসুমে ১৬৪ কোটি টাকা ব্যয় নির্মিত ওই বাঁধটি ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এশাধিক সূত্র তা নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, মাটি কাটতে বাঁধা দেয়ায় আনসার সদস্যদের ওপর ও হামলা চালিয়েছে ওই ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। এমনটির অভিযোগ ও হামলার শিকার আনসার সদস্যদের। সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ধুমঘাট এলাকা দিয়ে প্রবাহীত ফেনী নদীতে অবস্থিত মুহুরী সেচ প্রকল্পের বাঁধের মাটি কেটে পাড় দখলে নিতে নেমে পড়েছে স্থানীয় যুবলীগ ক্যাডাররা। মীরসরাই উপজেলার ৫নং উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাঁধের অন্তত: ২শ ফুট এলাকা মাটি কেটে সমান করে সেখানে পোল্ট্রি ফার্ম করার পাঁয়তারা করছে তারা। ফলে, আশির দশকে ১৬৪ কোটি টাকা ব্যয় এ নির্মিত এই বাঁধটি আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকিতে পড়ার আশংকা রয়েছে। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় লোকজন জানায়, গত শনিবার (২৬ মার্চ) থেকে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী ফরহাদ হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, মোবারক হোসেন ও সাইফুল ইসলাম ও তাদের আরো সাঙ্গপাঙ্গ মিলে স্কেভেটর দিয়ে বাঁধের মাটি কাটা শুরু করে। স্থানীয় অধিবাসীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রভাবশালী ওই সকল যুবলীগ ক্যাডাররা বাঁধের মাটি কেটে সেখানে পোল্ট্রি ফার্ম তৈরি করবে এ জন্য মাটি কেটে পাড় সমান করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্রে পাওয়া তথ্যে আরো জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ন জনপদকে বঙ্গোপসাগরের ভাঙ্গণ থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্পের (সিডিএসপি) আওতায় বাস্তবায়ন করা হয় ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যওে এ বাঁধটি। এ বাঁধের কারণে এখানকার বাঁশখালী ও ইছাখালী এলাকায় গড়ে ওঠে হাজার হাজার একর মৎস্য ঘের। যা থেকে চট্টগ্রামের মৎস্য খাদ্য চাহিদার ৭০ ভাগ উৎপাদিত হয়। এদিকে স্থানীয় অধিবাসীরা আরো জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফেনীর নির্দেশে প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আনসার বিডিপির সদস্যরা মাটি কাটায় বাধা দিলে মাটির কাটার সাথে যুক্ত প্রভাবশালী ওই মহল তাদের মারধর ও করে। পরে গত রবিবার (২৭ মার্চ) পাউবোর ফেনী অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নুরুন নবী মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানায় মাটি কাটার সাথে যুক্ত ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দিয়ে যান। অভিযোগের পর থানা পুুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ও দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধ গতকাল মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো রকম আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় ওচমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘মাটি কাটার সাথে যারা জড়িত তারা কেউ যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আসার পর তাদেরকে কেনো কর্মসূচিতে দেখিনি। যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এ কাজ করছে তারা।’ এদিকে সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে যান মীরসরাই উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস, এম জামিউল হিকমা। তিনি সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে কথা বলে ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে তথ্য নেন। মীরসরাই উপজেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জড়িদের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে ও জানান্ দেন্ তিনি।’ এ সব বিষয়ে পাউবো ফেনী অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নুরুন নবী বলেন, ‘বাঁধের মাটি কাটার খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমি প্রকল্পে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের পাঠিয়েছি। সেখানে ফরহাদ ও তার সাথে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা আনসার সদস্য দুলাল, ইলিয়াছ, আবুল হাসেম, আব্দুর রশিদ, কার্তিক দাশকে মারধর করে। পরে আমি বিষয়টি প্রথমে মুঠোফোনে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে জানাই এবং পরদিন থানায় দায়িদের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসি।’ মাটি কাটার সাথে জড়িত নন দাবি করে যুবলীগ কর্মী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবার আমার একটি মৎস্য খামারে পানি দেয়ার ইস্যু নিয়ে আনসার সদস্যদের সাথে বাক বিতন্ডা হয়। তাদের মারধর করার বিষয়টি সত্য নয়। এরপর কোথায় কোন্ মাটি কাটা উস্যুতে ইচ্ছে করে আমাদের নাম জড়িয়ে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।’ এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, ‘পাউবোর তরফ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:38 AM |
Zuhr | 11:59 AM |
Asr | 2:59 PM |
Magrib | 5:19 PM |
Isha | 6:40 PM |