আজ শনিবার | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:০৪
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,ঢাকা – গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তরুনদের ‘জেগে উঠার’ আহবান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশকে যদি আমরা আগের জায়গা(গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা) ফিরিয়ে আনতে চাই, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যে, স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই স্বপ্ন যদি পুরণ করতে চাই, জনগনের আকাংখা যদি পুরণ করতে চাই, শহীদ জিয়াউর রহমান অসমাপ্ত কাজ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত কাজ যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই এবং দেশের মানুষের অধিকার যদি ফিরিয়ে আনতে চাই আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নাই।”
‘‘ তরুনদেরকে আহবান জানাতে চাই, সামনে এগিয়ে আসুন। আর সময় নেই। এখন জেগে উঠতে হবে। জেগে উঠতে হবে এবং দেশকে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ এই আন্দোলন এই সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, এই আন্দোলন এই সংগ্রাম কোনো দলের জন্য নয়। এই আন্দোলন, এই সংগ্রাম দেশের মানুষের জন্য, জাতির জন্যে। আজকে আমার জাতির সব কিছু অর্জন তাকে হরণ করে নেয়া হয়েছে, লুট করে নেয়া হয়েছে। আজকে তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
‘‘ সেই দায়িত্ব বিএনপিকেই পালন করতে হবে, সেই দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পালন করতে হবে এবং তার নেতৃত্বে আমরা সবাই দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বো এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করব, গণতন্ত্রকে মুক্ত করব। আমাদের সুভাগ্য যে, আজকে ওই পরিবারের আরেক জন আমাদের ভারপ্রাপ্ত তারেকে রহমান তিনি সেই পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, তার যোগ্য নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ মুক্ত হবে, গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।”
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘ গণতন্ত্রের জন্য তিনি আজোও কারাবরণ করে আছেন। তার মতো মহিয়সী নেতা যিনি এদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে সংগ্রাম করে, লড়াই করে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনে মুখে পড়ে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে দলকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে এসেছেন একবার নয়, তিনবার। প্রতিটি নির্বাচনে এই মহিয়সী নেত্রী যাকে আমার মনে হয়ে সেই হ্যামিলনের বংশীবাদক যার বাঁশির সুরে সমস্ত মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসে সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে আমাদের স্মরণ করাটা অত্যন্ত জরুরী আজকের প্রেক্ষিতে। আজকে সেই দেশনেত্রী কারাগারে, গণতন্ত্র আজকে কারাগারে।”
‘‘ আজকে আমাদের সমস্ত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, শুধু মামলা নয়, আমাদের ৫‘শ অধিক নেতা-কর্মী গুম হয়ে গেছেন।এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে আমাদেরকেই,বিএনপিকেই।”
বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ খালেদা জিয়া পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার দিনটি পালন উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা হয়।
১৯৭১ সালে মালিবাগের একটি বাসা থেকে শিশু তারেক ও কোকোসহ খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে সেনানিবাসে নিয়ে যায়।
জাতীয় কমিটির আহবায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘ আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি যেহেতু আমরা আত্মপ্রচারে বিশ্বাস করি না, এতোদিন পর্যন্ত কিন্তু এই দিনটিকে সেইভাবে আমরা সামনে আনিনি। কখন এনেছি? আজকে যারা ক্ষমতায়, ১২ বছর যাবত গায়ের জোরের ক্ষমতায় আছে আজকে যখন তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরেরে ইতিহাসকে বিকৃত করে বর্তমান প্রজন্মকে এবং দেশে জনগনকে বিভ্রান্ত করছে তখন আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহন করছি।”
‘‘ কেনো ওরা এসব করছে? কারণ জিয়াউর রহমান যে কাজগুলো করেছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা সেই কাজগুলো করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলে সেখানেই আওয়ামী লীগের দূর্বলতা। ষড়যন্ত্র হয় জিয়া্উর রহমানের বিরুদ্ধে, তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তারা মনে করেছিলো বিএনপি শূণ্য হয়ে যাবে। সেখানে জিয়াউর রহমান উত্তরসুরী খালেদা জিয়া সেই দুর্দিনে বিএনপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন এবং এই দলকে সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত করেছেন। আজকে যারা ক্ষমতায় তাদের ভয় জিয়া্উর রহমানকে নিয়ে, তাদের ভয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে, তাদের ভয় দুই জনের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমানকে নিয়ে। সেজন্য তারা একের পর এক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ এই সরকার ভয় পায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, এই সরকার ভয় পায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দল বিএনপিকে, এই সরকার ভয় পায় এদেশের দেশপ্রেমিক নাগরিকদেরকে। যে কারণে আজকে তারা ভোটে যেতে চায় না, যেকারণে আজকে তারা এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে নিচ্ছে। অর্থাত তারা আগামীতে ক্ষমতায় থাকার জন্য এখন থেকে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চাচ্ছে।”
‘‘ এই অবস্থার অবশ্যই অবসান হতে হবে। ইনশাল্লাহ দেশের মানুষ তৈরি হচ্ছে।”
বিএনপির নেতৃত্ব সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতি ইংগিত করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ আজকে পত্র-পত্রিকায় কিছু সুধীজন আমাদেরকে মাঝে মাঝে কিছু কিছু উপদেশ দিয়ে থাকেন, আমাদের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে থাকেন। তাদেরকে স্ববিনয়ে বলব যে, এই কথাগুলো প্রকারান্তরে ফ্যাসিবাদকে উতসাহিত করে, যারা ক্ষমতায় আছে তাদের ক্ষমতায় থাকার পথটাকে প্র্রশস্ত করে।’’
‘‘ জনগনকে বিভ্রান্ত না করে আমাদের যেখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা গণতন্ত্রের, সমস্যা ফ্যাসিজমের, সমস্যা আইনের শাসনের, সমস্যাটা হলো জাস্টিস নাই। আমাদের নেতেৃত্ব কিন্তু পদে পদে তারা পরীক্ষিত, পদে পদে তারা উত্তীর্ণ, তারা শত নির্যাতন-অত্যাচারের কাছে যেমনি বেগম খালেদা জিয়া মাথা নত করেননি, যেমনি জিয়াউর রহমান পাকিস্তানিদের কাছে মাথা নত করেননি, তিনি বুক টান করে একটি দেশ উপহার দিয়েছেন তেমনি আমাদের নেতৃত্বও পরীক্ষিত।”
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম প্রমূখ বক্তব্য রাথেন।
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |