আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১১:৩৭
মনির হোসেন জীবন- রাজধানীর মিরপুর ও যশোর এলাকায় পৃথক দু’টি অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল এবং গাড়ী চোরচক্রের অন্যতম মূলহোতা মাহামুদসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এ চক্রের মূলহোতা সৈয়দ মাহামুদ হাসান (৩৭) এবং তার প্রধান দুই সহযোগী মিরাজ হোসেন (৩২) ও মোঃ আল আমিন (৪৩)।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর পৃথক দু’টি দল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মিরপুর ও যশোর জেলার কোতয়ালী থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের তিন জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এসময় তাদের নিকট থেকে একটি চোরাই মোটরসাইকেল এবং একটি চোরাই মাইক্রোবাস উদ্বার করেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২ টায় রাজধানীর টিকাটুলি র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) ফারজানা হকসহ র্যাবের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারগন এসময় উপস্হিত ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা র্যাবকে জানান, তারা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এ কাজ করতে। প্রথমত মাহামুদের নেতৃত্বে একদল মাঠপর্যায়ে মোটরসাইকেল/গাড়ী চুরির উদ্দেশ্যে টার্গেট করে। ওই টার্গেটকে সামনে রেখে রেকির মাধ্যমে মোটরসাইকেল রাখার স্থান বা বাসা চিহ্নিত করে। পরবর্তীতে সময়-সুযোগ বুঝে তারা মোটরসাইকেলের তালা ভাঙা ও কাটার মতো কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে রাতের আধারে টার্গেটকৃত বাসায় ঢুকে মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা র্যাবকে আরো জানান, তারা কৌশলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চুরিকৃত মোটরসাইকেল নিয়ে তারা রাজধানী ছেড়ে দেশের কোন দূরবর্তী জেলায় চলে যায়। সেখানে ওই চোরচক্রের অপরাপর সদস্যদের কাছে মোটরসাইকেল হস্তান্তর করার পর তারা অতি দ্রুততার সাথে তাদের নিজস্ব ওয়ার্কশপে নিয়ে মোটরসাইকেলের রং, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর, নম্বর প্লেট ইত্যাদি পরিবর্তন করে ফেলে। পাশাপাশি তারা ওই মোটরসাইকেলের কিছু পার্টস পরিবর্তন বা সংযোজন করে দেয় যাতে করে প্রকৃত মালিক গাড়ীটিকে সহজে চিনতে না পারে।
র্যাব বলছে, মোটরসাইকেলের যন্ত্রপাতি পরিবর্তনের কার্যক্রম চলমান থাকার পাশাপাশি ওই চক্রের আরেকটি দল বিআরটিএ’তে দালালদের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তনের কার্যক্রম চালায়। এক্ষেত্রে আটক আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বিআরটিএ’র সুজন নামক একজন দালালের নাম উঠে আসে এবং ওই চোরচক্রটির একজন অন্যতম মূলহোতা। তার মাধ্যমেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন করতঃ ভুয়া ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট, ফিটনেস সনদ, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয়ে থাকে। এরপর মোটরসাইকেলটি ওই চক্রের আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম দুই সহযোগী আল আমিন এবং মিরাজের নেতৃত্বে সেই দলটি চোরাই মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিক সেজে বিভিন্ন প্রতারণামূলক পন্থা অবলম্বন করে সাধারণ মানুষের নিকট তা বিক্রয় করে থাকে। এভাবেই এই বৃহৎ সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোরচক্রটি পরষ্পরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল ও গাড়ী চুরি করে সেগুলো সাধারণ মানুষের নিকট বিক্রয় করে আসছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানায়, মূলহোতা মাহামুদ অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফার আশায় বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের পথ বেছে নেয়। ২০২২ সালের শুরুর দিক থেকে সে মোটরসাইকেল চোরচক্রের একটি বৃহৎ সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। রাজধানীসহ সারাদেশে তাদের নাশকতামূলক চুরির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার ফারজানা হক।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |