আজ রবিবার | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:৪৪
ঢাকা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে নিত্য রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ। হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকুলান হচ্ছে না, আইসিইউ নিয়ে চলছে হাহাকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের পরিকল্পনা করছে সরকার।
এমন পরিস্থিতিতে লকডাউনেও শিল্প-কারখানা খোলা রাখতে গত শুক্রবার থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। লকডাউনে সরকার কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশাবাদী তারা। একইসঙ্গে আসছে রমজান মাসকে সামনে রেখে রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধে ১০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন ব্যবসায়ীরা। দুই একদিনের মধ্যেই প্রস্তাবনাটি তারা সরকারের কাছে পেশ করবেন বলে জানা গেছে।
লকডাউনে কারখানা খোলা থাকবে কি না সে বিষয়ে আজ রবিবার বিকেলে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বিকেল ৩টায় ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্প কারখানায় সংক্রমণের হার নির্ণয় করেই কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন যেভাবে চলছে সেভাবে সরকারকে আরও কিছুদিন দেখা উচিত। এই সময়ের মধ্যে সরকারকে দেখতে হবে গার্মেন্টসসহ শিল্প-কারখানা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর হার কেমন। এক সপ্তারের মধ্যেও যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে তখন সরকার লকডাউনে যেতে পারে। আর শিল্প-কারখানা খোলা রাখার বিষয়েও তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’
লকডাউনে শিল্প-কারখানা খোলা রাখতে ব্যবসায়ীদের তৎপরতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আশাবাদী যে (শিল্প-কারখানা) খোলা থাকবে। তারপরও দেখি, কালকের (আজ রবিবার) মধ্যে কোনো ফয়সালা হয় কি না। আমরা যতটুকু যোগাযোগ করেছি, পজেটিভই পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টস, স্পিনিং, টেক্সটাইল এগুলো বন্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর গার্মেন্টসসহ শিল্প তো আমরা এতদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চালিয়েছি। কোনো ক্ষয়ক্ষতিও কিন্তু হয়নি। গার্মেন্টস যদি ছুটি দেওয়া হয় তাহলে তারা যেকোনো মূল্যে গ্রামে যেতে চাইবে। তখন কিন্তু এটা (করোনার সংক্রমণ) আরও ছড়াবে। আমাদের শ্রমিকরা কারখানা থেকে হাঁটাপথের দূরত্বে থাকেন। তাই তাদের (আনা-নেওয়া) নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে লকডাউন ঘোষণা হলে রপ্তানি পণ্যের সময়মতো শিপমেন্ট (জাহাজীকরণ) নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী গত মার্চে ৩০৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে ১০০ মিলিয়ন বা ৮৫০ কোটি টাকার রপ্তানি হয়েছে। এপ্রিলের প্রথম ৮ দিনেও রপ্তানির হার প্রায় একই।
নিট কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শ্রমিকদের গ্রামে যাওয়া ঠেকাতে হলেও কারখানা খোলা রাখতে হবে। গত বছর কারখানা বন্ধ দেওয়ার পর আমরা কোনোভাবেই কিন্তু তাদের ঠেকাতে পারিনি। পরে কী অবস্থা হয়েছিল আপনারা সবাই দেখেছেন। এর চেয়ে ভালো কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু রাখা। তবে যদি কেউ অবহেলা করে তার বিরুদ্ধে মালিক সংগঠন ও সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আজ (গতকাল শনিবার) আইইডিসিআর যে তথ্য দিয়েছে সেখানে কিন্তু করোনা ছড়ানোর উৎস হিসেবে গণপরিবহন, বাজার এগুলোর কথা বলেছে। গার্মেন্টসের কথা উল্লেখই নেই। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালাতে হবে। রপ্তানি ঠিক রাখতে হবে। জীবন ও জীবিকা একসঙ্গে চলতে হবে।’
বাংলাদেশ পাটপণ্য রপ্তানিকারক সমিতির পরিচালক ইসরাত জাহান বলেন, ‘করোনায় গত বছর যে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল, আমাদের মতো ছোট উদ্যোক্তারা তা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ব্যাংকের সঞ্চয় ভেঙে, ঋণ করে অনেকেই বেতন পরিশোধ করেছেন। এবারও যদি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তো পথে বসতে হবে।’
কারখানা যদি খোলা থাকেও তবুও সবার শতভাগ শ্রমিক নিয়ে উৎপাদন পরিচালনার সক্ষমতা নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এছাড়া লকডাউন চলাকালীন নিত্যপণ্য ও জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকা অবস্থায় কারখানা চালাতে হবে। তারমধ্যেই নিয়মিত কারখানাগুলোকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |