আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:০২
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল একমন্তব্য করে বলেছেন ,দেশের অর্থনীতি ‘পুরোপুরি রসাতলে যাচ্ছে’ ।
তিনি বলেন, ‘‘ আমার মনে আছে, এখনো তথন শেখ মুজিবুর রহমান সরকার, অর্থনীতি সমিতির একটা সভা হচ্ছিল সেই সভাতে ড. মুজাহারুল হক সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে পাশে বসিয়ে যে কথাটি বলেছিলেন যে, মাননীয় রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অর্থনীতি অতি তীব্র গতিতে রসাতলে যাচ্ছে। আজকে আবার সেই সময় উপস্থিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি পুরো রসাতলে যাচ্ছে।”
‘‘ গতকাল একটা ফোরামে নোয়াব(সংবাদপত্র মালিক সমিতি) এর একটা সেমিনারে দেশের সবচেয়ে স্বনাম ধন্য অর্থনীতিবিদরা তারা বলেছেন যে, অর্থনীতি একটা বিপর্যয়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ তারা(সরকার) স্বীকার করতে চায় না। তারা সবসময় বলে যে, অর্থনীতি খুব ভালো আছে। কারণ তাদের দূর্নীতি তো চলছেই। তারা নতুন নতুন উপায় খুঁজছে কি করে আরও দূর্নীতি করবে। মেগা প্রজেক্ট দিয়ে তারা মেগা দূর্নীতির ব্যবস্থা করছে।”
‘‘ শুনলে অবাক হবেন আপনারা। এই যে, প্রজেক্টগুলো আসে এগুলোর বেশিভাগই চায়না থেকে অর্থায়ন করা হয়… বাংলাদেশ সরকারকে দেয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার আবার তার পছন্দসই লোকজনকে কাজ করার জন্য টেন্ডার দেয়… সেটা কোটি বিলিয়নস দেয়। সেখান থেকে সরকারের এক-দুইজন লোক, সরকারের মদদপুষ্ট তারা ৫% কমিশন পায় ওই টাকাটা আনার জন্য এবং পরবর্তি কালে কাজ বন্টন করার জন্য ৫% নেয়। এই কথাটা আমরা অনেকে জানি না। অর্থাৎ চীন থেকে যে টাকা আনা হচ্ছে সেই টাকাতেও কমিশন বা ভাগ বসানো হচ্ছে।”
‘প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার কমিশন খাচ্ছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখবেন তারা(সরকার) কমিশন ছাড়া কোনো কাজ করে না। শুধু তাই না। এখানে কয়েকটি নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে … আপনারা জানেন। ‘নগদ’ বলে একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে…নগদ।”
‘‘ এই নগদের টাকা প্রতিটি ট্রানজিশন থেকে পাঁচ করে কমিশন পায়… সেই কমিশন কোথায় যায়? সেই কমিশন দেশের বাইরে চলে যায়। আমি কারো নাম বলতে চাই না। কিন্তু এই টাকাও দেশের বাইরে বিশেষ কোনো ব্যক্তির কাছে চলে যায়। এই রকম একটা-দুইটা বিষয় নয় আরও আছে।”
মানিকগঞ্জের মুন্নু সিটি গিলন্ডে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া্উর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র উত্তরণ, মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও খাল খনন কর্মসূচি: জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ারি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচকদের আলোচনা শুনেন।
‘এই আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নয়’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ কয়েকদিন আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছিলো। সে যখন আমার সাথে পড়তো তখন ছাত্রলীগ করতো। পরে আওয়ামী লীগ করেছে, আওয়ামী লীগের এমপিও হয়েছিলো। তো এখন সে আর রাজনীতি করছে না… গত ১০ বছর ধরে রাজনীতি করছে না।”
‘‘ আমি তাকে বিজ্ঞাসা করলাম যে, তুমি রাজনীতি করছো না কেনো? বলছে, কোন রাজনীতি করব? আমি তো আওয়ামী লীগ করতাম। এখন তো আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নাই। এটা হচ্ছে আজিজ আর বেনজীরের আওয়ামী লীগ। এখন ঘটনা তাই। এখন আর আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়… তার চরমভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাই সম্পূর্ণভাবে এই সমস্ত দূর্নীতিবাজ আমলাদের ওপরে, দূর্ণীতিবাজ রাজ-কর্মচারিদের সাথে আতাঁত করে তাকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে।”
‘আর চুপ করে থাকলে চলবে না’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমাদের আর এভাবে চুপ করে থাকলে চলবে না। আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি, আমাদের মধ্যে অনেক বন্ধু নিহত হয়েছে, প্রাণ দিয়েছেন, ২২ জন প্রাণ দিয়েছে শুধুমাত্র এক বছরে রাজপথে। আমাদের বিরুদ্ধে ৬০ লক্ষ মামলা দিয়েছে। গত বছরে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পরে ২৭/২৮ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার নিয়েছিলো।আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি আমাদের আশা-ভরসার স্থল তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হযেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি আজকে গোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আমাদেরকে জাগিয়ে তুলছে সেই নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।”
‘‘ সেজন্য তুরণ-যুবকদের বলতে চাই, আপনাদের আর বসে থাকলে চলবে না। এখনই সময় হয়েছে আপনাদের দেশমাতৃকার ডাকে জেগে উঠাবার… আপনারা জেগে উঠুন। অতীতে ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে জেগে উঠেছিলো, যেভাবে নব্বইয়ের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব গণঅভ্যুত্থাতনে স্বৈরাচারের পতন হয়েছিলো সেইভাবে সকলকে জেগে উঠতে হবে এবং পরাজিত করতে হবে এই ভয়াবহ দানবকে যারা আমাদের সবকিছু তচনচ করে দিয়েছে।”
জিয়াউর রহমানের বর্নাঢ্য কর্মজীবনীর ওপর ছোট বই প্রকাশ ও তৃনমূল পর্যায়ে সেমিনার করে জিয়ার আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার পরামর্শও দেন বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদের সভাপতিত্বে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো ও কাজী সায়েদুল আলম বাবুলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, আফরোজা খানম রিতা, রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামুন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে দুপুরে শহরে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারে বই মেলার উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও আফরোজা খানম রিতা, জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এ কবির জিন্নাহসহ মানিকগঞ্জের নেতেৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |