আজ শনিবার | ২০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৪ঠা রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৪:৫২
ঢাকা:- আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে কেনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরেও কী কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ভারতে চলে যাচ্ছে? কারণ কী?”
‘‘ এটাই কারণ এই সময়ে তাদের ওপর নির্যাতনের পরিমান আরো বেশি করে বেড়ে গেছে এবং লক্ষ্যই হচ্ছে এটা তাদের সম্পত্তি দখল করা, তাদের বিভিন্ন রকমের সুযোগ-সুবিধা গ্রহন করা এবং মালামাল লুট করা।”
পাকিস্তান আমলে তৈরি শত্রু সম্পত্তি আইন সরকার বাতিল করছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব।
‘‘ আওয়ামী লীগে মুখে বলে যে, তারা হচ্ছে আপনারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে চান, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ তারা রক্ষা করতে চান। কিন্তু এখন পর্যন্ত শত্রু সম্পত্তি আইন তারা বাতিল করেনি, তাদের যে ন্যায্য অধিকারগুলো রয়েছে তা দেয়নি।”
বিএনপির শাসনামলে ২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের দেশ ছাড়া মাত্রা বেশি ছিলো বলে আওয়ামী লীগ বলছে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমি যে বক্তব্য দেবো যেটা আমার দলীয় বক্তব্য হবে- তাই না। আপনারা যে ইনভেস্টেগেটিভ জার্ণালিজম করছেন সেখান থেকে তো আপনারা দেখতে পারবেন। প্রত্যেকটা রিপোর্টে যেটা আসছে যে, এই সময়ের বেশি বেড়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভারতে যাওয়া।”
সেটা কী ২০০১ সালের থেকেও বেশি কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ অনেক বেশি, অনেক বেশি..। নিসন্দেহে। এটা আমার কথা না তো আমেরিকা্ই তো পারসেন্টেজ বলে দিয়েছি কত পারসেন্ট যাচ্ছে। তাদের পত্র-পত্রিকায় আসছে তো।”
সুনামগঞ্জের শাল্লায় উপজেলায় নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ বছর দুইয়েক আগে ঠাকুরগাঁওয়ে একজন প্রভাবশালী এমপি তিনি কয়েক‘শ জমি দখল করেছিলেন। সেটার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মিছিল করেছে, মানববন্ধন করেছে কিন্তু কোনো সুরাহা বা সমাধান পায়নি। ফরিদপুরেও এরকম ঘটনা। এবারে দেখেন, শাল্লার ঘটনার নেতৃত্বে দিচ্ছে সবখানে এসছে যে, যুব লীগের নেতা। অথচ ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন যে, এখানে বিএনপি নেতৃত্ব দিয়েছে। বিএনপির নাম গন্ধ নেই এখানে। অর্থাত এটা হচ্ছে যে, মানুষকে যে বিভ্রান্ত করা, মানুষকে ভুল বুঝানো, মানুষকে যে একটা ভুল রাস্তায় নিয়ে যাওয়া সেটাই তাদের লক্ষ্য।”
‘‘ আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনোই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষের শক্তি ছিলো না বা এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে তারা কখনোই ছিলো না। বরাবরই তারা যেমন সন্ত্রাসী কায়দায় ক্ষমতায় টিকে আছে ঠিক একই সম্পত্তি দখল করেছে সেই কায়দায়।”গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শাল্লায় ঘটনা সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘ সম্প্রতি শাল্লা উপজেলায় হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁ গ্রামে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়ি, মন্দিরে উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও নারকীয় ধ্বংসযোগ্য চালানো হয়। আমরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ ভুক্তভোগীদের বাড়ী ঘরে, উপাসনালয়ে অবর্ণনীয় ধ্বংস লীলা দেখতে পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থরা ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় অকপটে বলেছেন, ঘটনার দিন মাইকে প্রচার করে ঘটনার সময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা স্বাধীন মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারী শত শত মানুষ ঐ গ্রামে উপস্থিত হয়ে প্রায় ৬০/৭০টি বাড়ী ঘরের সমস্ত মালামাল ও আসবাবপত্র লুটপাট করতে থাকে, বাড়ী ঘরের জানালা, দরজা, বেড়া কুপিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে, নারী পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে।”
‘‘ শিশু বাচ্চাদের নিয়ে বাথরুমে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে থাকা মহিলাদের বের করে এনে লাঞ্ছিত করে। আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসী হারমাদ বাহিনী হিন্দুদের বাড়ীঘর, মন্দির উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।”
প্রশাসনের গাফিলতি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের প্রচ্ছন্ন মদদে শাল্লার নোয়াগাঁ গ্রামে ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ ঘটনা ঘটার পরেও স্থানীয় প্রশাসন তাতক্ষনিক কোন ব্যবস্থা নেয় নাই। পরবর্তীতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার প্রধান আসামী স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি স্বাধীন মিয়া। অন্যান্য আসামীরাও ক্ষমতাসীন দলের। এ পর্যন্ত ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক।”
‘‘ আমরা সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ন্যাক্কারজনক নির্মম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঘটনার সাথে জড়িত সকলের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করছি। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ী, মন্দির, উপাসনালয় পুনঃনির্মাণ ও পুনর্বাসনে সরকারকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে আসার এবং ঐ এলাকাসহ হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত অন্যান্য এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”
গত ২০ মার্চ নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী শাল্লায় গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্থদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে একটি প্রতিবেদন দলের কাছে জমা দেন।
গুলশানের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:21 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:03 PM |
Asr | 3:05 PM |
Magrib | 5:25 PM |
Isha | 6:46 PM |