আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৮:৩৯
বিডি দিনকাল ডেস্ক: গত পরশু আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সশস্ত্র সহিংস আক্রমণে ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুরুতর জখম হয়। শহীদ মিনারের সামনে বেলা ১১-৩০ টা থেকে দফায় দফায় ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখনও তারা শঙ্কামুক্ত নন। ছাত্রলীগের হামলায় রেহাই পায়নি ছাত্রদল নেত্রীরাও। রড, হকিস্টিক, রামদা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মেয়েদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হায়েনার মতো। দুই জন ছাত্রদল নেতাকে ঢাবি’র শহিদুল্লাহ হলের নির্জন কক্ষে উঠিয়ে নিয়ে এসে আবরার স্টাইলে শারীরিক নির্যাতন চালায়। তাদের রক্ত শুকাতে না শুকাতেই আজ সকালে আবারো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদলের মিছিলে আক্রমণ চালায়। ছাত্রদল নেতারা হাইকোর্ট চত্তরে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানেও ছাত্রদল ও আইনজীবীদের ওপর রক্তাক্ত হামলা চালায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাদের আক্রমণে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্রদলের মিছিলে গুলিবর্ষণ করছে। বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠা স্টাইলে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি সাধারণ আইনজীবীরাও। ছাত্রলীগের হামলায় আজ সুপ্রীম কোর্টও রক্তাক্ত হয়েছে। ছাত্রলীগের এই আচরণ সম্পূর্র্ণরুপে মানবাধিকার লঙ্ঘন।
বন্ধুরা,
শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে তৈরী করেছেন গণতন্ত্র ও বিএনপি’র বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধে লিপ্ত থাকার জন্য। অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য জনগণকে শেখ হাসিনার প্রয়োজন নেই। তাঁর খুবই প্রয়োজন সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। আর এই প্রয়োজন মেটাতেই ছাত্রলীগ-যুবলীগকে এখন অস্ত্র দিয়ে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাহবা কুড়ানোর জন্য তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে বিরোধী দলের রক্ত নিংড়িয়ে নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর এই খুনী বাহিনী বাংলাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে শ্রমিক বিশ^জিত, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ওমর ফারুক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ের যুবায়েরসহ বিরোধী ও নিজ দলের অসংখ্য ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ^বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত ১৩ বছরে অর্ধ শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। ময়মনসিংহের কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গোলাগুলিতে নিহত হয় শিশু রাব্বী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়গুলো সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এরা শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রী-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের জীবনই কেড়ে নেয়নি, সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে নানাভাবে হয়রানী, হুমকি ও ভয়ভীতির শিকারে পরিণত করেছে।
সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে মনের মতো সাজিয়েও ভরসা পাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই ছাত্রলীগকে তিনি সাজিয়েছেন বিরোধী দল বিনাশে অস্ত্র হিসেবে। জাতির ললাটে একমাত্র মহিলা ফ্যাসিষ্টের শাসন এখন দুর্বিষহ রুপ নিয়েছে। নানা কারণে এই সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে মানুষ। তাই জনরোষ থেকে বাঁচতে সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগকে সশস্ত্র অবস্থায় মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। তবে ছাত্রলীগকে দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে শেখ হাসিনার মসনদ টেকানো যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত নেতাকর্মীদের নামের তালিকা
ক্র. নং পদবী নাম
১. ছাত্রদল নেতা শাহীনুর রহমান শাহীন (গুরুতর আহত)
২. ছাত্রদল নেতা সাহবুদ্দিন আহমেদ (গুরুতর আহত)
৩. ছাত্রদল নেতা আবদুল কাইয়ুম (গুরুতর আহত)
৪. ছাত্রদল নেতা নাহিদ চৌধুরী (গুরুতর আহত)
৫. ছাত্রদল নেতা রাজু হাসান রাজন (গুরুতর আহত)
৬. আহবায়ক আক্তার হোসেন
৭. সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান
৮. যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম (গুরুতর আহত)
৯. যুগ্ম আহবায়ক শাকির আহমেদ (গুরুতর আহত)
১০. যুগ্ম আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাসুদ
১১. যুগ্ম আহবায়ক এইচ এম আবু জাফর
১২. সদস্য,ঢাকা বিঃবিঃ ছাত্রদল নাছির উদ্দিন শাওন
১৩. সাঃ সম্পাদক-এফ এইচ হল শাহাদাত হোসেন
১৪. সভাপতি-জিয়া হল তারেক হাসান মামুন
১৫. ছাত্রদল নেতা সালেহ মোঃ আদনান
১৬. যুগ্ম আহবায়ক(বিজয় ৭১ হল) তানভীর আজাদী (গুরুতর আহত)
১৭. ছাত্রনেতা আতিক মোর্শেদ
১৮. সদস্য নাছির উদ্দিন নাছির
১৯. সভাপতি,বিজয় ৭১ হল সোহেল রানা
২০.ছাত্রদল নেতা রিয়াদ আহমেদ ,তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।
২১. ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ
২২. ছাত্রদল নেতা বাহারুল ইসলাম
২৩. ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিম রাজু
২৪. ছাত্রদল নেতা সজীব রায়হান
২৫. ছাত্রদল নেতা মোঃ শামীম আকন
২৬. ছাত্রদল নেতা মোঃ ইজাবুল মলি-ক
২৭. ছাত্রদল নেতা সরদার মিলন
২৮. ছাত্রদল নেতা জুবায়ের আল মাহমুদ
২৯. ছাত্রদল নেতা নাজমুল ইসলাম বাহার
৩০. ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানা রিয়াজ
৩১. ছাত্রদল নেতা আরিফ মোল-া
৩২. ছাত্রদল নেতা আবুল হোসেন হাওলাদার আশিক
৩৩. ছাত্রদল নেতা রিমু হোসেন
৩৪. ছাত্রদল নেতা কাওছার হোসেন
৩৫. ছাত্রদল নেতা মোঃ শামীম হোসেন
৩৬. ছাত্রদল নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম মিঠুন
৩৭. ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান আসলাম
৩৮. ছাত্রদল নেতা গোলাম মওলা লিখন
৩৯. ছাত্রদল নেতা রাকিব ইসলাম আলভী
৪০. ছাত্রদল নেতা সজিব হাওলাদার
৪১ ছাত্রদল নেতা এস এম শামীম হোসেন
৪২ ছাত্রদল নেতা করিম প্রধান রনি
৪৩ ছাত্রদল নেতা আতাউর রহমান খান
৪৪ ছাত্রদল নেতা নাহিদ শাহ পাটোয়ারি
৪৫ ছাত্রদল নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস
৪৬ ছাত্রদল নেতা কাজী রফিকুল ইসলাম
৪৭ ছাত্রদল নেতা আতাউর রহমান বুলেট
৪৮. ছাত্রদল নেতা মোঃ মানিক হোসেন
ছাত্রলীগ কর্তৃক আজ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা ও তাদেরকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
বন্ধুরা,
এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কটুক্তির প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিএনপি’র প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। হামলায় নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন এবং বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খুলনা জেলা ও মহানগরে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের পেটুয়া বাহিনী হামলা করে সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় খুলনা মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব- শফিকুল আলম তুহিন ও মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক- রেহানা আক্তার ঈসাসহ ১০/১২ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশের হামলায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য- জনাব নজরুল ইসলাম খান।
নড়াইল জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে স্থানীয় এমপি মাশরাফি বিন মর্তূজার পিতা গোলাম মর্তূজা স্বপনের নেতৃত্বে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঘরের ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর করে। এবং কেন্দ্র ঘোষিত দলের বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করতে গেলে সেখানেও আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা প্রদান করে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে জেলা বিএনপি সাংবাদিক সম্মেলন করতে গেলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেখানে হামলা করে ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীদের আহত করে।
কুষ্টিয়া জেলায় আজকের বিক্ষোভ সমাবেশের উদ্দেশ্যে নেতাকর্মীরা আসার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হেলমেট পরে রড এবং লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। এতে ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমাবেশ করতে দেয়নি। এছাড়াও জেলা বিএনপি’র সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমিসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পটুয়াখালী জেলায় আজকের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের পেটুয়া বাহিনী হামলা করে সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ এসময় মৎস্যজীবী দল নেতা- আরাফাত জাহান বাপ্পিসহ ৭ জন বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে।
আমি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।PRESS BRIEFING OF BNP SR JOINT SEC GENERAL-26-05-22
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:11 PM |
Magrib | 5:32 PM |
Isha | 6:51 PM |