আজ রবিবার | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:৩০
✍ বাবুল তালুকদার: সময়কাল ২০০৪ অফিসের কাজ শেষে আগামীকালের এসাইনমেন্ট নিতে গিয়ে দেখি, সকাল ছয়টায় বনানীস্থ বিএনপি’র কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনের সংবাদ চিত্র সংগ্রহ চট্টগ্রাম যাত্রা- রির্পোটার কাদের গনি চৌধুরী ও ছবি বাবুল তালুকদার।
শীত এখনো আসেনি, আসবে আসবে করছে এমনই আবহাওয়ার বার্তা, খুব সকালে নিজেকে গুছিয়ে চলে এলাম বনানীস্থ বিএনপি’র কার্যালয়ে। একে একে অনান্য মিডিয়া কর্মীরাও এসে পৌছুলো নিজেদের অফিসের গাড়ি নিয়ে। এদের মধ্যে ছিল তৎকালীন বিটিভির সিনিয়র রিপোর্টার পবন ভাই, বেসরকারী স্যাটেলাইট টেলিভিশন এটিএন বাংলার রিপোর্টার মোহাম্মদ ফারুক, চ্যানেল আই এর সিনিয়র রিপোর্টার সালে বিপ্লব ভাই, বাংলা ভিশনের জাহাঙ্গির, চ্যানেল ওয়ান এর ইলিয়াছ, দিগন্ত টেলিভিশনের রেমান, এনটিভির (ঠিক মনে পড়ছে না) ।এছাড়া প্রিন্ট মিডিয়ার মধ্যে ছিল মানবজমিনের বাসির জামাল ভাই, ইনকিলাবের হাই সিদ্দিকি ভাই, প্রথম আলো’র আরিফুর রহমান দোলন ভাই, ইত্তেফাকের আনোয়ার আলদ্বীন ভাই, যুগান্তরের লোটন একরাম ভাই, জনকণ্ঠের বাবলুসহ আরো অনেকে।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন-মহাসচিব তারেক রহমান ভবনের দোতলা থেকে নিচে নেমে, আমাদের সকল মিডিয়া কর্মীকে কাছে ডাকলেন। আমরা বৃত্তাকার করে বসলাম। কুশল বিনিয়ম শেষে তিনি বললেন, আজ আমরা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রাওনা দিচ্ছি। পাড়ি দিতে হবে দির্ঘ পথ। আগামী কাল আমাদের সম্মেলন, আজ রাতে আপনারা চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় একটু অবকাশ যাপন করবেন। এ সময় তিনি বললেন, এবার আপনাদের বহনকারী গাড়ি চালকদের একটু ডাকুন। সকল মিডিয়ার নিজ গাড়ি থাকলেও প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে একটি রাখা হয়েছিল । কিছুক্ষণের মধ্যেই সকল গাড়ি চালক হাজির হল। তারেক রহমান তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছেন আপনারা? রাতে ঘুমিয়েছেন ঠিক মত? সবাই হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়লো। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, নাস্তা করেছেন? সবাই বলল জি। তিনি বললেন, ‘এবার শুনুন আপনারা খুব ভালোভাবে গাড়ি চালাবেন, কেউ কাউকে ওবারটেক করবেন না। ইনশা’আল্লাহ্ আমরা কুমিল্লায় যাত্রা বিরতি করব’ এ বলে সবাইকে বিদায় দিলেন। আমরাও সকলে রাওনা দিলাম।
রাজাধানীর যানযট পেরিয়ে আমরা দাউদকান্দি ব্রিজের কাছা কাছি এসে পৌছলাম। হটাৎ আমাদের গাড়ি থেমে গেল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কৌতূহলবশত আমিও গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালাম। এসময় দেখতে পেলাম তারেক রহমানকে ঘিরে রেখেছে কিছু মানুষ। আমি দৌড়ে গেলাম কী হয়েছে জানার জন্য। দেখলাম পাঁচ জন বয়োবৃদ্ধ জরাজীর্ণ মানুষ তারেক রহমানের মাথায় ও শরীরে হাত বুলিয়ে দোয়া করছে। তাদের মুখে হাসি, চোখে ছিল অশ্রুজল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারেক রহমান আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যাও গাড়িতে উঠ’। আমি চলে এলাম গাড়িতে। পরে গাড়িতেই জানতে পারলাম তিনি ঐ বৃদ্ধদের কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তখন গাড়ির সব সাংবাদিকরা আমাকে ভৎসনা করে বলল, এ ঘটনার একটা ছবি তুললাম না কেন। আমি বললাম, আমিতো ক্যামেরা গাড়িতে রেখে গিয়েছি। ছবিটি না তুলতে পারায় মনের মাঝে একটি আক্ষেপ থেকে যায়।
যাই হোক, আমাদের বহনকারী গাড়িটি ব্রিজের উঠতেই আবারও থেমে গেল। তাকিয়ে দেখি পুরো ব্রিজ জুড়ে শ’শ’ গাড়ি দাড়িয়ে আছে। যার বেশির ভাগই ছিল বনভোজনের যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাস। রাস্তার অন্য পাসটি ছিল একে বারেই ফাঁকা, আমরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর তারেক রহমানও গাড়ি থেকে নেমে এলেন। তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা ছুটে এসে। তারেক রহমান তার কাছে জানতে চান কি হয়েছে? কর্মকর্তাটি জানালেন, স্যার গতকাল রাত বারোটায় ব্রিজের উপর দুটো ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আপনি আসবেন তাই সকালে অনেক চেষ্টা করে একটি গাড়ি যাওয়ার রাস্তা বের করেছি। আপনি এপাশ (রং সাইড) দিয়ে চলে যান। তখন তারেক রহমান বললেন, আপনি এটা কি বলছেন! রাস্তার রঙ সাইড দিয়ে আমি যাবো ? তাছাড়া, রাত বারোটায় এক্সিডেন্ট করেছে, এখন দিন বারোটা বাজতে চলল, দুটো ট্রাক ব্রিজ থেকে সরাতে পারলেন না! আর আপনি এটা লক্ষ্য করেছেন? এ সারি বদ্ধ পিকনিক বাসগুলোর যাত্রীদের কথা? কখন তারা গন্তব্যে পৌঁছাবে, কখন রান্না-বান্না করবে?
এ সময় তারেক রহমান বললেন, আমি যাবো না, আগে রাস্তা ক্লিয়ার করুন, তারপর আমি যাবো। তখন পুলিশ কর্মকর্তা দুরে গিয়ে তার ওয়াকি টকিতে কথা বলছিলেন। আমরা সবাই অপেক্ষা করতে লাগলাম। এরই মধ্যে পিকনিক বাসের যাত্রীরাও রাস্তায় নেমে পড়েছিল। আশ্চর্য ব্যাপার তিরিশ মিনিটের মধ্যে একটি র্যাকার গাড়ি চলে এলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাক দুটোকে সরিয়ে নেওয়া হল। তখন পিকনিক যাত্রীরা সবাই উল্লাসিত হয়ে চিৎকার দিতে দিতে তারেক রহমানের গাড়ি ঘিরে তাকে অভিনন্দন জানাতে লাগল। আর সবাই একবাক্যে বলতে লাগলো ‘আপনি না আসলে হয়তো আমাদের এখানেই পিকনিক করতে হতো’।
তারেক রহমান তাদেরকেও ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, আপনারা গাড়িতে উঠুন, আপনাদের অনেক তাড়া আছে। কিন্তু অবাক করার বিষয় কেউ গাড়িতে উঠল না, সবাই দাড়িয়ে রইলো। তারা বলতে লাগলেন, আগে আপনি যান তারপর আমরা যাবো। তখন তারেক রহমান বললেন আগে আপনারা যান, তারপর আমি যাবো। কারন আপনারা আপনাদের মা-বোনদের নিয়ে এসেছেন। তাদের গন্তব্যে পৌঁছানো সবচেয়ে জরুরী।
এরপর আমরা সেই পিকনিক গাড়িগুলোর পেছনে পেছনে কুমিল্লা পর্যন্ত পৌঁছলাম। সেখানে একটি হোটেলে সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খেয়ে রাওনা হলাম। চট্টগ্রামে পৌঁছে জানতে পারলাম এখানে সবচেয়ে ভালো হোটেলে সাংবাদিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোটেল লবিতে তারেক রহমান আমাদের সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন রুমে গিয়ে রেস্ট নিন। আগামি কাল সকালে তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় আপনাদের সাথে দেখা হবে। আমরা সবাই সে রাতে অনেক মজা করেছি। রাতে গিয়েছিলাম সাগর পাড়ে । পরদিন সকালে আমরা তৃণমূল সভার দিকে চললাম। রাস্তার দু’পাসে রং বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও নানান কারুকাজ দিয়ে তৈরি নানান জিনিস। এ যেন এক উৎসবের নগরী।
গলায় পরিচয় পত্র, কপালে দলীয় পতাকা, পরনে সাদা গেঞ্জি, হাতে উনিশ দফা ঘোষনা পত্র ও কিছু বই নিয়ে সারি বদ্ধভাবে দলীয় তৃণমূল প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগদান করতে সমাবেশস্থলের প্রবেশ করছে। আমরাও ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখি সারি বদ্ধভাবে তৃণমূল নেতারা বসে আছেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কর্ণেল অলি আহম্মেদ এম.পি. বীর বিক্রম। সভায় তারেক রহমান পৌঁছেই অথিতিদেও নিয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন। এ সময় সমস্ত নেতা কর্মীরা দাড়িয়ে অভিবাদন জানায় । মুহুর্মুহু করতালিতে মুখরিত সভা প্রাঙ্গন। এ সময় তারেক রহমান স্টেজে না উঠে সরাসরি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে চলে যান এবং ঘুরে ঘুরে সকলের সাথে কর্মদন করতে থাকেন। কর্মদন পর্ব শেষ করে যখন তিনি স্টেজে উঠলেন তখন দেখতে পেলাম তার হাত দু’টো লাল হয়ে গেছে। সেখানে উপস্থিত প্রায় ২০০০ নেতাকর্মীর সাথে একটানা কর্মদন করতে করতে তার হাতের এ অবস্থা রূপ নিয়েছে।
এ সময় প্রধান অথিতি কর্নেল অলি আহম্মেদ সবাইকে নিয়ে স্টেজে উঠলেন। কিন্তু থমকে গেলেন তারেক রহমান। তিনি বললেন আমি এ স্টেজে উঠব না, কারন আমার জন্য নির্ধারিত চেয়ারটি দেয়া হয়েছে সেটি আগে নামাতে হবে, তারপরই আমি উঠব। আমরা স্টেজের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম তার জন্য রাজকীয় একটি চেয়ার বসানো হয়েছে। তখন স্টেজে সবাই দাড়িয়ে ছিল। কর্নেল অলি আহম্মেদ আবারো আমন্ত্রন জানালে, তারেক রহমান বললেন, অনুষ্ঠানের আপনি প্রধান অথিতি, ঐ চেয়ারে বসলে আপনি বসবেন। তারপর চেয়ারটি সরিয়ে নিলে তিনি স্টেজে উঠেন।
এ সময় তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বললেন, এ অনুষ্ঠান শুধু আপনাদের জন্য। আপনারাই তৃণমূল মানুষদের অভাব অভিযোগ ভালো জানেন। আমরা আপনাদেও কাছ থেকে মতামত নিব এবং সমস্যা সমাধানে দলীয় প্রধান ও সরকারের কাছে উপস্থাপন করবো এবং তা বাস্তবায়নের চেস্টা করবো।
এরপরই বক্তব্যের পালা শুরু হল। প্রথমে তৃণমূল নেতারা বক্তব্য দিতে এসে স্টেজের সকল অতিথিদের নাম ও পদবী সম্বোধন করতে লাগলেন। তখন তারেক রহমান বললেন, এই যে নেতা, আপনি প্রথমে আপনার পরিচয় দিন, এরপর আপনি এক বাক্যে অতিথিদেরকে সম্বোধন করে বলবেন, কেন আপনি বিএনপি করেন এবং পাশাপাশি আপনার এলাকার অভাব অভিযোগের কথা বলবেন।
তারপর শুরু হল একে একে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বক্তব্য দেযার পালা। তারেক রহমানের হাতের সামনে রাখা ল্যাপটপে ডেটাবেইজ দেখে প্রতিটি তৃণমূল নেতার নাম পরিচয় উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ার আমন্ত্রণ জানান। একটানা বক্তব্য চলে ২টা পর্যন্ত। তারপর দুপুরের খাবারের বিরতি। তারেক রহমান স্থানীয় ও ঢাকা থেকে সফর সঙ্গী সাংবাদিকদের নিয়ে খাবারের জন্য এক সাথে বসলেন ।
একর্পযায়ে বহরের সকল গাড়ীর চালকদের ডাকলে, সবাই এসে উপস্থিত হল। এসময় তারেক রহমান বললেন আপনার ঠিক মতো খেয়ে নিবেন, তারপর হোটেলে চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে ঘুমাবেন, কারণ রাতে গাড়ী চালিয়ে আপনাদের ঢাকায় যেতে হবে। আরেকটি কথা দয়া করে আপনাদের রুমের টেলিভিশনটা চালাবেন না। চালকদের উদ্দেশ্য করে আবারো বললেন, কি বুঝতে পারছেন আপনারা ? তখন চালকরা মাথা নেড়ে হ্যা সূচক উত্তর দিল। এ সময় তিনি বললেন, ঠিক আছে এবার তাহলে যান।
এরপর দ্বিতীয় অধিবেশন চলল বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। উপস্থিত অতিথিরা ধৈর্য সহকারে সকলের কথা শুনলেন। পরিশেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অলি আহমেদের বক্তব্য শেষে তারেক রহমান সমাপনি বক্তব্য রাখলেন। পিন পতন নীরবতার মধ্য দিয়ে সমাপনী বক্তব্য শেষ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে আমরা আমাদের অফিসের কাজ শেষ করে হোটেলে চলে গেলাম। রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের গুছিয়ে নিলাম। এসময় হোটেল লবিতে তারেক রহমান এসে হাজির হলেন। আমরা খবর পেয়ে সবাই তার কাছে ছুটে গেলাম বিদায় নিতে। তারেক রহমান তখন আমাদের সকলের সাথে কথা বললেন এবং জানতে চাইলেন কোন সমস্যা হয়েছে কিনা? আমরা সবাই এক বাক্যে বললাম কোন সমস্যা হয়নি। তিনি বললেন ঠিক আছে তাহলে, ভাল থাকবেন। এ সময় তিনি আবারও বললেন আপনাদের গাড়ী চালকদের কে একটু ডাকুন আমি কথা বলি। যথারীতি সবাই চলে এলো, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি আপনারা কি সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন? সবাই হ্যা বলল। এসময় আমাদেও প্রিন্ট মিডিয়ার গাড়ী চালক আনোয়ারের উদ্দেশ্য বললেন, কি আনোয়ার সাহেব আপনি তো ঘুমাননি। নিশ্চয় টিভি দেখেছেন। আনোয়ার জবাব দিল, না, স্যার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। তারেক রহমান বললেন, নাহ, আপনি বললেই হবে, আমি বলছি আপনি ঘুমাননি। এসময় আমাকে উদ্দেশ্য করে তারেক রহমান বললেন, এই বাবুল তুমি গাড়ীর সামনের সিটে বসবা আর ওর দিকে খেয়াল রাখবা, আমি মাথা নেড়ে বললাম জি ভাইয়া।
আমরা বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। আমাদের গাড়ীতে মানবজমিনের সাংবাদিক বাছির জামল ভাই বললো, বাবুল ভাই আমি সামনে বুঝতে চাই। আমি তাকে সম্মান করে ভিতরে চলে গেলাম, এসময় গাড়ীতে ছিল বড় ভাই, ইনকিলাবের হাই সিদ্দিকি, জনকন্ঠের বাবলু, দিনকালের কাদেও গণি চৌধুরী, ইত্তেফাকের আনোয়ার আলদীন, যুগান্তরের লোটন একরাম, প্রথম আলোর আরিফুর রহমান দোলনসহ ১২ জন সাংবাদিক। ফটো সাংবাদিকদের মধ্যে আমি একাই ছিলাম, এরি মধ্যে ফৌজদারহাটের কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা। আমি পেছন থেকেই গাড়ী চালকের দিকে লক্ষ্য করছিলাম, আমার মনে হচ্ছিল ও যেন কিভাবে গাড়ী চালাচ্ছে, যদিও আমি বাছির ভাইকে কয়েক বার কানে কানে বলছিলাম, চালক মনে হয় ঘুমাচ্ছে, মাঝে মধ্যে ওর সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু বাছির ভাই নিজেই ঘুমাচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎই গাড়ীটি হার্ট ব্যাক করে থেমে গেল। সারাদিন ধকলের পর গাড়ির মধ্যেই প্রায় সকল সাংবাদিকরা ঘুমাচ্ছিল, সবাই ঘুম থেকে একপ্রকার লাভ দিয়ে উঠে আমাকে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে বাবুল ভাই? তখন আমি বললাম ভাই, ড্রাইভার ঘুমাচ্ছে। এমন সময় আমরা ট্রেইনের হর্ণ শুনতে পেলাম। আর দেখতে পেলাম আমাদেও গাড়ীটি রেললাইনের উপর দাড়িয়ে আছে। সাথে সাথে ড্রাইভারকে গাড়িটি সরিয়ে রাখতে বললাম। ড্রাইভার গাড়ি সড়িয়ে একটি চা এর দোকানের সামনে রাখল। সবাই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। আমরা গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভারকে বললাম, আপনি গাড়িতেই একটু ঘুমান। আমরা ঘন্টাখানিক অপেক্ষা করে তারপর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিব।
এর পর আমি সবাইকে নিয়ে চায়ের দোকানে গেলাম, চা-বিস্কুট-কলা সবাই খেয়ে নিলাম। আমি বিল দেয়ার জন্য পকেটে হাত দিতে গিয়ে দেখি মানি ব্যাগটি আমার ক্যামেরার ব্যাগে রেখে এসেছি। আমি দৌড়ে গাড়ির কাছে গিয়ে গ্লাসে নক করতে লাগলাম, তখন দেখি ড্রাইবার গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। অনেক ডাকাডাকি করেও ড্রাইভার সাহেব কে জাগাতে পারিনি। এত অল্প সময়ে মানুষ ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতে পাওে সেটা আমার জানা ছিল না। যদিও সে দিনের বিলটি আমি দিতে পারিনি। বাছির ভাই তার পকেট থেকে বিলটি পরিষদ করেছিলেন।
তারপর থেকে আজ অবধি বাছির ভায়ের সাথে অনেক বার ঢাকার বাহিরে গিয়েছি, কিন্তু কোনদিন তাকে গাড়ীতে ঘুমাতে দেখিনি। এই সফরের অনেকগুলো স্মৃতিকথা আজও ভুলতে পারিনি।
আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে কাছ থেকে দেখেনি। কিন্তু তার জীবন সর্ম্পকে শুনেছি, তারই মতো একজনকে পেয়েছি, যে জাতির প্রয়োজনে সাংগঠনিক, সাহসী এবং জাতীয় সামগ্রিক উন্নয়নের গতিধারায় অদ্বিতীয় নেতার দায়িত্ব পালনে সাফল্যও স্পষ্ট ছাপ রেখে চলেছেন।
তারেক রহমান রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা পরিশুদ্ধ, তিনি তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকমীদেও কে সংগঠিত করেছেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশের উন্নয় ও জনগনের সম্মৃদ্দি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেছেন। তিনি আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়ে রাজনীতির কঠিনতম পথে হাঠতে শূরু করেছিলেন। তার গৃহিত কার্যক্রম নিয়ে আমাদের আগামীর স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার সহযাত্রী ছিলাম, আছি এবং থাকব। এটা কোন গতানুগতিক অঙ্গীকার নয়। এটা আমার আগামীর প্রত্যাশিত কর্মসূচি। অগণতান্ত্রিক, বৈরিতা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির রোষানলে পড়ে নির্যাতিত তারেক রহমান এখন প্রবাসে দিন কাটাচ্ছেন।
দেশের কোটি কোটি জনতা তার আগমনের অপেক্ষায়।
দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তার নেতৃত্বে দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে প্রহর গুনছে, তিনি আসবেন, এবং নেতৃত্ব দিবেন নিশ্চয়ই জননেতা হিসেবে। দেশ দরদী নেতার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হবে জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ।
✍ বাবুল তালুকদার
১১/১৮/২০২০ বুধবার
রাত ১২টা বেজে ৪০ মিনিট
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: ৪০ মিনিটে লেখাটি লিখেছি , ভুল ত্রুটি মার্জনীয়। লেখাটি প্রিয় নেতার জন্মদিন কে সামনে রেখে লেখা )
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |