আজ শনিবার | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৫৪
নজরুল ইসলাম মানিক, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর মহাসড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু এ সড়কের ইউনিক থেকে জামগড়া চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত সড়কের বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা এবং দীর্ঘদিনেও ড্রেনেজের কাজ সম্পন্ন না হওয়ার কারণেই পানি জমে পুরো সড়কে খনাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে থাকা এবং ড্রেনেজ করার জন্য রাস্তার পাশ খুরে রাখায় সড়কের পাশের দোকানপাটগুলোতে কোন ক্রেতা আসছে না। ফলে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে বৃষ্টির কারণে কাজের ধীরগতি। বৃষ্টি প্রবণতা কমলেই শীগ্রই ওই সড়কের সংস্কার কাজ করা হবে।
সরেজমিনে বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর মহাসড়কের ইউনিক থেকে জাগড়া মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার পাশে ড্রেনেজ করার জন্য খুড়াখুড়ি চলছে। সেই সাথে চলছে বৃষ্টি। আবার শিল্প কারখানার পানি সরাসরি রাস্তায় ও ড্রেনে পড়ার কারণে পানি জমে থাকছে। পানি জমে থাকার কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সড়কে হাটু পানি জমে থাকা এবং গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘিœত হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। পানির নীচে গর্ত থাকার কারণে অনেক সময় ছোট-বড় যানবাহ উল্টে যাচ্ছে।
মহাসড়কের পাশের এক দোকানদার মিজানুর রহমান বলেন, নয়নজুলি খাল নামের একটি খাল ছিল এ অঞ্চলে। কিন্তু ওই খালের এখন কোন অস্তিত্ব নেই। রয়েছে এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা। শিল্পকারখানার পানি সরাসরি রাস্তায় এসে পড়ে। আবার চলছে রাস্তার পাশে ড্রেনের খুরাখুরি। কয়েকদিন ধরেই চলছে বৃষ্টি। তাই রাস্তায় পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি। আর সবচেয়ে বেশী দূর্ভোগে আমরা যারা সড়কের পাশে ব্যবসা করছি। কোন ক্রেতা আসেনা পানির জন্য। আর কিছুদিন এই অবস্থা থাকলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী, স্থানীয় ব্যক্তিদ্বয় ও পথচারিরা অভিযোগ করেন, সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ ওই সড়কের ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নির্মান ও সংস্কার করার জন্য শ্রমিকলীগ নেতা লায়ন ইমাম নামের এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি মাঝে মাঝে লোক দেখানো কয়েকজন লেবার নিয়ে নাম মাত্র কাজ করে থাকেন। এইযে দেখেন রাস্তার পাশে ড্রেনেজ করার জন্য খুরে রেখেছেন। কিন্তু কোন ড্রেনেজ করছেন না। খুরে রাখা ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা গিয়ে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। রাস্তার পাশের কোন একটা দোকানে বেচা বিক্রি নাই। কিভাবে বিক্রি হবে বলেন, মানুষতো আর পানি-কাদা ভেঙ্গে কোন কিছু কিনতে আসবে না। আমরা পড়েছি মহাবিপদে। আর কতদিন এই অবস্থা থাকবে তার কোন ঠিক নেই। শীগ্রই যাতে রাস্তা সংস্কার ও ড্রেন নির্মান কাজ শেষ হয় এমনটাই দাবী জানান তারা।
এব্যাপারে সৌরব পরিবহনের মালিক স্বপন মিয়াসহ কয়েকজন পরিবহন মালিক জানান, এই সড়কে প্রতিনিয়ত হাটু পানি ও খনাখন্দের কারনে আধ ঘন্টার যাতায়াতের সময় ২ ঘন্টায়ও হয়না। এতে সময় নষ্ট হয়, যান্ত্রিক সমস্যা হয়, চাকা নষ্ট হয়, ফুয়েল জ্বালাণী তিন ডাবল খরচ হয়, এসকল সমস্যার কারণে অনেকদিন আয় খুজে পাওয়া যায়না। এভাবে এই সড়কে যে সকল মালিকরা যাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য পরিবহন চালিয়ে থাকেন তারা সকলেই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তারা আরোও বলেন, সড়ক ও জনপদের কর্তৃপক্ষ নিতি নৈতিকতা ঠিক রেখে সঠিক ঠিকাদার দিয়ে সংস্কারের কাজ করলে এই জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হতো না।
এ ব্যাপারে লায়ন ইমাম জানান, আমি ঠিকাদার না, আমি সড়ক ও জনপদের ঢাকা বিভাগের কর্তৃপক্ষ রক্ষনাবেক্ষনের যেভাবে কাজ করতে বলেন আমি সেই ভাবেই কাজ করি। কাজ করলে সড়কের বেহাল অবস্থা কেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নয়নজুলি খালটি এখন প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় ড্রেনের পানি নদীতে নামতে পারেনা। তাছাড়া এই এলাকায় প্রায় অর্ধমতাধিক ওয়াশিং ও ডাইং কারখানা থেকে পানি নির্গত হয়। যার মধ্যে পলমল গ্রæপের কয়েকটি ওয়াশিং ও ডাইং প্লান্টের নির্গত পানি আনুমানিক পরিমান ঘন্টায় ৭০ হাজার লিটার। যা সরাসির সড়কে পড়ছে। এই কারণে এই সড়কে বৃষ্টি না থাকলেও হাটু পানি থাকে। আর এখনতো দিনরাত বৃষ্টি বর্ষিত হচ্ছে। সড়ক ও জনপদের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ওই কোম্পানী গুলোকে চিঠি দেওয়া হয়। তারা যদি কর্নপাত না করে তাহলে কর্তৃপক্ষ কি করবে। তাদের ক্ষমতা বেশী, তাদের বানিজ্য মন্ত্রনালয় আছে, বিজিএমই, বিকেএমই আছে ।
সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী বদিউজ্জামান বলেন, এক একটি কারখানা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানি ছাড়ে। সেই পানি সরাসরি সড়কে এসে পড়ে। আমাদের সড়কের পানি নির্গমনের জন্য যে পথ বের করা হয়েছিল সেই পথ দিয়ে সড়কের পানি সুন্দর করে যেতে পারবে। কিন্তু যখন এলাকা ও কারখানার পানি সড়কের পানির সঙ্গে মিশে যায় তখন আর সেই পথ দিয়ে পানি যেতে দেরি হয় এবং সড়কে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কারখানার মালিকরা নিজেদের মন্ত্রনালয়ের উদ্ধ্যোগে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা উচিৎ আমাদের ড্রেন দিয়ে তাদের পানি নামার কথা নয়। তবুও আমরা চেষ্টা করছি যেন সড়ক থেকে পানি নামিয়ে ফেলা যায়। ঠিকাদার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই খানে কাজের জন্য কোন ঠিকাদার নেই। সম্পুর্ন ডিপার্টমেন্টাল মেইন্টেন্সের মাধ্যমে সংস্কারের কাজ করানো হয়। কবে নাগাদ এই সমস্যার সমাধান হবে জানতে চাইলে উত্তর না দিয়ে তিনি লাইনটি কেটে দেন।
Dhaka, Bangladesh শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:30 PM |
Isha | 6:50 PM |