- প্রচ্ছদ
- মিডিয়া
- ইহা একটি রম্য রচনা!…… যদি এমন হতো! তবে কেমন হতো ?
ইহা একটি রম্য রচনা!…… যদি এমন হতো! তবে কেমন হতো ?
প্রকাশ: ২০ মে, ২০২১ ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ
বাবুল তালুকদার: অনেক ক্ষোভ, দুঃখ ও হতাশা ঝরছে আমার হৃদয়ে তবুও আজ এই রাতে লিখতে বসেছি। তবে আমি এটাও ভালো করেই জানি, যাদেরকে নিয়ে লিখছি, তাদের নিয়ে আলোচনা অথবা সমালোচনা করার ন্যূনতম যোগ্যতা আমার নেই!
কিন্তু কি করব? যাদের লেখার কথা তারা তো কেউ কিছুই লিখছে না ! যাদের বলার কথা তারা তো কেউ কিছুই বলছেন না! একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমার মত একজন নগন্য মানুষের ক্ষুদ্র এই প্রচেষ্টা! তাই আমার এই লেখায় কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন শুরুতেই “দুঃখ প্রকাশ” করে নিচ্ছি।
প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে শুধু দেশের মিডিয়া নয়, বিশ্ব মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে ব্যাপক তোলপাড় ! পাশাপাশি চলছে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বয়কট!
এদিকে পদলেহনকারী সাংবাদিক ও সম্পাদকরা ছাড়া যে সমস্ত বাঘা বাঘা সাংবাদিক ও সম্পাদকেরা আছেন তারাও নানান প্রতিবাদী কলাম লিখছেন। স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি তাঁরা তুলে ধরছেন নানান যুক্তি ও অসঙ্গতি। এদিকে সব রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনগুলো একাত্মতা পোষণ করে দুঃখ (শোক) প্রকাশ করছেন, আর খ্যাতনামা কবি, কথা সাহিত্যিক আদালতের রাস্তার ধারে বসে দুচোখের অশ্রু ঝরাচ্ছেন!
এত এত প্রতিবাদী মানুষের ভিড় হতে মাত্র দুজনের লেখা নিয়ে আজ কথা বলব। নিশ্চয়ই সে দুজন মহাজ্ঞানী, নিরপেক্ষ, সৎ , সাহসী ও প্রতিবাদী! তারা হলেন, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার শ্রদ্ধেয় সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম ও মতিউর রহমান চৌধুরী।
@ প্রথমে আসি মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদকের লেখা @
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখানে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের লেখাটিতে যে নারীকে নিয়ে লেখা হয়েছে সেই স্থানে তাকে পরিবর্তন করে (আমার দৃষ্টিতে) তার চাইতেও নির্যাতিত ও যোগ্য একজন মহীয়সী নারী বেগম খালেদা জিয়ার নাম ব্যাবহার করে আপনাদের জন্য (সংক্ষিপ্তভাবে) উপস্থাপন করা হলো। তবে মূল লেখাটি লিংক প্রথম কমেন্টসের দেয়া হল, মন চাইলে পরে নিতে পারেন।
পঞ্চাশ বছরেও এমন দেখিনি
এ কোন্ বাংলাদেশ? পঞ্চাশ বছরে তো এমন দেখিনি। তথাকথিত এতিমের টাকা চুরি করার অভিযোগে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে এভাবে নির্যাতন করার ঘটনা নজিরবিহীন। তাও তিনি যদি একজন নারী রাজনীতিবিদ হন। বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে তা দেখে দেশের মানুষ হতবাক, বিস্মিত। নেটমাধ্যমে যেসব ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে তা দেখে বিবেকবান কোনো মানুষই বিচলিত না হয়ে পারেন না। তাই প্রতিবাদ উঠেছে দেশ-বিদেশে। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে একজন নারী নেত্রী কে হেনস্তা বা গ্রেপ্তারের ঘটনায় এমন প্রতিবাদ, ধিক্কার আমার পঞ্চাশ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে দেখিনি। রাজনীতিতে এমন ঘটনা বিরল ।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অপরাধ কি? বলা হচ্ছে, তিনি নাকি এতিমের টাকা তসরুপ করেছেন! কিন্তু দেখা যায় ব্যাংকে গচ্ছিত সেই দুই কোটি টাকা আজ বেড়ে ছয় কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে ।
এদিকে বিচারিক আদালতে অনিয়মের অভিযোগে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে। ৭৬ বছর বয়স্ক নারী এবং অসুস্থ একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিনের অধিকার থাকা সত্বেও জামিন মিলছে না! যদিও পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিশেষ অনুকম্পায় রাজনীতি না করা ও দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে জামিন দিয়েছে। যদিও
তিনি এখনো একপ্রকার বন্দী জীবন যাপন করছেন!
সম্প্রতি তিনি মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক নানা জটিলতায় তার জীবন সংকটাপন্ন ছিল! তার এই মুমূর্ষ অবস্থায় পরিবারের পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন করা হলেও তা সর্বশেষ প্রত্যাখ্যান করে সরকার।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা নানান প্রশ্ন তুলেছেন, তবে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেলে কি এমন ক্ষতি হতো আমার জানা নেই! তবে আমার জানতে ইচ্ছে করে রাষ্ট্র এতটা অমানবিক হলো কবে?
এর আগেও দুনিয়া জেনে গেছে- এদেশে মধ্যরাতে নির্বাচনের কথা! এই বর্বর আচরণের কথা। নিন্দা আর প্রতিবাদে ভারী হয়ে গেছে নেটমাধ্যম। কিন্তু প্রতিবাদ হয়নি কোন। আন্তর্জাতিক দুই-একটি মাধ্যম ছাড়া খবরটি প্রচার হয়নি। জাতিসংঘে পৌঁছালেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়নি। বিভাজন ভুলে দেশের স্বার্থে সাংবাদিকরাও ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি সত্যের পথে। বুদ্ধিজীবীদের কেউই বিবৃতি দেয়নি।
দলমতনির্বিশেষে সবাই একবাক্যে বলেনি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, খালেদা জিয়া মুক্তি চাই। প্রশ্ন উঠেছে- এতে করে কার, কি প্রাপ্তি? আমি মনে করি এক কথায় বলা যায়, তাঁরা কিছুই পায়নি, নিন্দা ছাড়া। মনে হচ্ছে, হিসেবে বড় গোলমাল হয়ে গেছে।
শেষ কথা- খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন ও দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন দিন।
———————————————————
@ এবার দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদকের লেখা @
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখানে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের লেখাটিতে যে নারীকে নিয়ে লেখা হয়েছে সেই স্থানে তাকে পরিবর্তন করে (আমার দৃষ্টিতে) তার চাইতেও নির্যাতিত ও যোগ্য একজন মহীয়সী নারী বেগম খালেদা জিয়ার নাম ব্যাবহার করে আপনাদের জন্য (সংক্ষিপ্তভাবে) উপস্থাপন করা হলো। তবে মূল লেখাটির লিংক প্রথম কমেন্টসের দেয়া হল, মন চাইলে পরে নিতে পারে।
###################
কেন তিনি ৩ দিন কারাগারে থাকবেন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব, তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি স্ত্রী । তিনি দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত। তিনি গণতন্ত্র ও দেশ পুনর্গঠনে সাহসী ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্য আপোষহীন নেত্রী হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। দেশের মানুষ আজও তাকে ঘিরেই মুক্তির পথ অন্বেষণ করেন, কিন্তু তিনি আজ নিজেই পরিপূর্ণ মুক্ত নন, জামিনের আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
যেহেতু বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে, তাই আমরা এই জামিনের বিষয়টি নিয়ে এবং আইনটি আরও ভালোভাবে বোঝার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ–সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করছি।
১. বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগে কেউ যাতে ভোগান্তি বা শাস্তির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করার জন্য জামিনের বিধান রয়েছে। সবচাইতে বড় কথা বেগম খালেদা জিয়া তিনি একজন নারী, তিনি গুরুতর অসুস্থ, তিনি ৭৬ বছরের একজন বৃদ্ধা।
২. আইন অনুযায়ী, তিনটি সুস্পষ্ট কারণ রয়েছে—যার ভিত্তিতে জামিন নাকচ করা যেতে পারে:
ক. অভিযুক্ত ব্যক্তি মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণে অবৈধ হস্তক্ষেপ করতে পারেন,
খ. অভিযুক্ত ব্যক্তি সাক্ষীদের হুমকি দিতে পারেন এবং তাঁর মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে,
গ. অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে যেতে পারেন এবং এভাবে আইনের নাগাল থেকে বাঁচতে পারেন।
এই কারণগুলোর বাইরে দেশের কোনো নাগরিকের জামিন অস্বীকার করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। উল্লিখিত তিনটি শর্তের কোনোটিই বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ (১) ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘কোনো অজামিনযোগ্য অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার বা পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হলে…তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে, তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধে দোষী বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া যাবে না।
‘তবে শর্ত থাকে যে আদালত ১৬ বছরের কম বয়সী যেকোনো ব্যক্তি বা এ–জাতীয় অপরাধে অভিযুক্ত যেকোনো নারী বা অসুস্থ বা জরাগ্রস্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন।’
প্রথমত একজন নাগরিক হিসেবে, তারপর একজন নারী হিসেবে এবং শেষতক একজন অসুস্থ ব্যক্তি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার অধিকারী।
ব্যারিস্টার তানজিব–উল আলমের মতে, অভিযুক্ত হওয়ার পর এবং তা যদি অজামিনযোগ্যও হয়, তবু একজন নারীর জামিন চাওয়ার অধিকার আছে। অপরাধীদের বিচার প্রবিধানের ৪৯৭ নম্বর ধারায় এটি স্পষ্ট করা আছে। একজন ব্যক্তি যদি পালিয়ে না যান, প্রমাণাদি ধ্বংস বা সাক্ষীদের ভয় দেখিয়ে না থাকেন, এ ধরনের ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া হয়েছে—বাংলাদেশ ও ভারতের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে, এমনকি আপিল বিভাগেও এমন বেশ কিছু বিচারিক সিদ্ধান্তের নজির রয়েছে।
************************************************
পরিশেষে আমি বলতে চাই, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী, বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ও নির্যাতিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ।
তিনি দেশ পূর্ণগঠন ও গণতন্ত্র রক্ষায় দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ অবিরাম লড়াই করে যাচ্ছেন। আজও তিনি বন্দী অবস্থায় একাকীত্ব জীবন কাটাচ্ছেন।
তিনি রাষ্ট্র বিনির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি যে ভূমিকা গুলো নিয়েছিলেন সেই ভূমিকাতেই দেশের অর্থনীতি আজ শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন, পরিবেশ, সামাজিক উন্নয়ন, জঙ্গি দমন সহ প্রতিটি সেক্টরে তার নেয়া পদক্ষেপগুলো আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন অপরিসীম। কিন্তু এই দুর্যোগে এই গণমাধ্যম কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না!
এইতো সেদিন, দীর্ঘ ১২ বছরেও বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে দেশের মিডিয়াতে একটি অনুসন্ধানী ও মানবিক সংবাদ পরিবেশন না করায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা আলমগীর আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
সবশেষে, পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে কামনা করি তিনি যেন আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করেন, আমিন।
বাবুল তালুকদার
বৃহস্পতিবার ২০-০৫-২০২১
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: সারারাত জেগে লিখেছি, তাই ভুলভ্রান্তি হতে পারে, প্লিজ ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ)
Please follow and like us:
20 20