আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:৫৪
বিডি দিনকাল ডেস্ক : -সম্প্রতি বাংলাদেশে একজন বেসামরিক নাগরিকের কাছ থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত উজি পয়েন্ট টু-টু বোর পিস্তল উদ্ধারের পর থেকে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
একদিকে পুলিশ বলছে যে, এ ধরণের অত্যাধুনিক অস্ত্র সাধারণ মানুষের হাতে থাকাটা উদ্বেগজনক। যা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে শিগগিরই চিঠি দেবেন তারা।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানান, অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি সামনে আসার পর, এ সম্পর্কিত আইনে কোন ত্রুটি বা ঘাটতি আছে কিনা সেটি তারা খতিয়ে দেখবেন।
চলতি বছরের অগাস্টে মাদক ব্যবসার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে পাওয়া একটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জের ধরে উদ্ধার করা হয় একটি উজি পয়েন্ট টু-টু বোর পিস্তল।
এই অস্ত্র মিলিটারি গ্রেডের উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের বেসামরিক নাগরিকদের এই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি নেই। এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “পুলিশের কাছে যে অস্ত্র আছে, র্যাবের কাছে যে অস্ত্র আছে, সাধারণ মানুষের কাছে যদি তার চেয়ে অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র থাকে, তাহলে তো বোঝাই যায় যে উদ্বেগের জায়গাটা কোথায়।”
আইনের ফাঁক গলে অনেক ব্যবসায়ী এই অস্ত্র আমদানি করছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের কাছে বিক্রি করছে।
“তারা বলেছে যে তারা টু-টু বোর রাইফেল আনছে, কিন্তু এটা টু-টু বোর রাইফেল না, এটা পয়েন্ট টু-টু বোর পিস্তল।”
মি. ইসলাম বলেন যে, আইন অনুযায়ী টু-টু বোর অস্ত্র আমদানি বৈধ। কিন্তু অটোমেটিক বা সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র মানুষের কাছে বিক্রি করা যাবে না।
“এই বিক্রির বিষয়টা অ্যাভয়েড করে, উল্লেখ না করে তারা অস্ত্র আমদানি করছে আরকি।” তিনি বলেন।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মুনীরুজ্জামান বলেন, যে অস্ত্র নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেটি সাব মেশিনগান ক্যাটাগরির একটা অস্ত্র। যেটা সাধারণত ইসরায়েলে তৈরি করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, এটা যে ধরনের অস্ত্র সেটা জনগণের কাছে থাকার কথা না এবং জনগণের কাছে বিক্রি করারও কথা না।
“এটার যে ধরনের ক্ষমতা আছে, সেটা একজন সাধারণ ব্যক্তিরও প্রয়োজন হওয়ার কথা না।”
আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ীরা বলছেন যে, বৈধ উপায়েই এই অস্ত্র আমদানি এবং খালাস করেছেন তারা। সেই সাথে বৈধ ক্রেতা যাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি সম্বলিত লাইসেন্স রয়েছে, শুধু তাদের কাছে এই অস্ত্র বিক্রি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আগ্নেয়াস্ত্রের একজন ডিলার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ক্রেতাদের লাইসেন্স দিয়ে থাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
“অস্ত্র কেনার যে লাইসেন্স সেটা মিনিস্ট্রি অব হোম(স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) থেকে ইস্যু করে এবং স্বয়ং মিনিস্টার এটার রেকমেন্ডেশন না দিলে লাইসেন্স ইস্যু হয় না,” বলেন ওই ডিলার।
অস্ত্র বিক্রেতারা বলছেন, লাইসেন্সধারী ক্রেতাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করার পর তা সরকারি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়। সেক্ষেত্রে তাদের কোন দায় নেই।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরণের অস্ত্রের প্রসার রোধ করতে হলে বিদ্যমান আগ্নেয়াস্ত্র আইন বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনে সংশোধন করা উচিত।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মুনীরুজ্জামান বলেন, আগ্নেয়াস্ত্র আমদানি প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্ত্র সম্পর্কিত নিয়ম কানুন সঠিকভাবে বোঝাটা জরুরি।
“দরকার হলে এই প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা যেতে পারে,” তিনি বলেন।
পুলিশ বলছে, এই বিষয়টি তারা মন্ত্রণালয়কে জানাবেন এবং অনুমতি পেলে এ ধরণের যতগুলো অস্ত্র আছে সেগুলো তারা জব্দ করবেন এবং সেগুলো কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারে জমা থাকবে।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |