আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৮:৩৯
বিডি দিনকাল ডেস্ক:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র দলের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্র লীগের হামলা ‘সরকারের উপরতলা’র নির্দেশেই’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুব দলের এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র দলের মিছিলে ছাত্রলীগ-যু্ব লীগের সন্ত্রাসী গুন্ডারা যেভাবে আক্রমন করেছে, আমাদের ছেলেদের শরীর থেকে রক্ত ঝরিয়েছে, ছাত্র নেত্রীদের যেভাবে নির্দয়ভাবে আঘাত করেছে, প্রহার করেছে, আহত করেছে এই সবই দেশে-বিদেশে পত্র-পত্রিকায় ভাইরাল হয়ে গেছে। আমরা নিন্দা জানাই এই ধরনের ঘৃণ্য কাজের জন্য।”
‘‘ আমি শুধু বলতে চাই, আজকে যারা এই অপকর্মের সাথে জড়িত তারা তাদের উপরতলার নেতাদের নির্দেশেই এই কাজ করেছে, তারা আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ জায়গা, সরকারের সর্বোচ্চ স্থান থেকে এসব নির্দেশে তারা অপকর্ম করছে।”
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘ আমি স্মরণ করে দিতে চাই, এই নেতাদের নির্দেশে এই যুবলীগ-ছাত্রলীগের পান্ডারা নিউমার্কেটে ঘটনা ঘটিয়েছিলো। পার পায়নি, তারা কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। গতকাল বলেছিলেন যে, প্র্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছিলো তারা কিন্তু তাদের নেত্রী ক্ষমতায় থাকা সত্ব্বেও রেহাই পায় নাই। বিশ্বজিত যারা সেই যুবলীগ-ছাত্র লীগ রাস্তায় প্রকাশ্যে তাকে হত্যা করেছিলো যাদের নির্দেশে তাদের দল ক্ষমতা থাকা অবস্থায়ও তারা সেখান থেকে রেহাই পায়নি।”
‘‘ আমরা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যারা আজকে এই নির্দেশ তোমাদের দিচ্ছে? আজকে কাদের রক্ত নিচ্ছো? তোমাদের মতো আরেকজন ছাত্রের রক্ত তোমরা নিচ্ছো। তোমাদের ভাই, তোমাদের বোনকে তোমাদের উপরতলার নেতাদের কু-পরামর্শে আজে তাদের রক্ত নিচ্ছো। যদি অতীতের ঘটনায় ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও তাদের রেহাই হয় নাই, তোমাদের এই কু-কর্মের জন্য আগামীদিনে জনতার আদালতে তাদের বিচার হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক বলেন, ‘‘ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম। আজকে আমার কষ্ট হয় এই ছাত্ররা যাদের আমরা সোনার ছেলে বলি, সারা বাংলাদেশ থেকে বেঁছে বেঁছে যে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো সেই সোনার ছেলেদেরকে আজকে এই গায়ের জোরের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ব্যবহার করছে, তোমাদেরকে দানবে পরিণত করছে।”
‘‘ আমি ছাত্রদের বলতে চাই, ওই ধরনের নেতাদের প্ররোচনার তোমাদের নিজের জীবনকে শেষ করবে না। এখনো সময় আছে তোমাদের সংগিত ফিরে আসুক।”
জাতীয়তাবাদী যুব দলের নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণার পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র দলের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্র লীগের হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এতে যুব দলের বিভিন্ন স্তরের সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেয়।
‘সরকারকে একটা ধাক্কা দিতে হবে’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘ এই সরকারের দেশে-বিদেশে তাদের সমর্থন শূণ্য হয়ে গেছে। তারা একা হয়ে গেছে। এই সরকার দূর্বল সরকার। এই দেশের মানুষ এই স্বৈরচার সরকারের থেকে মুক্তি চায়।আমি বিশ্বাস করি, এই ফয়সালা রাজপথেই হবে। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাজপথে ফয়সালা হবে।”
‘‘ এই রাজপথ থেকে আমাদেরকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। আমাদের ছাত্র দল তাদের শরীরের রক্ত ঢাকা শহরে ঝরিয়ে দিয়ে এই ধাক্কা দেয়ার আন্দোলনের সূচনা করেছে। আমি আশা করি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, আমাদের সকল অঙ্গসংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র দলের পাশে থেকে একই ইস্যুতে আমাদেরকে আন্দোলনে নামতে হবে। আন্দোলনের বিকল্প নাই।”
তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের আন্দোলনের ইস্যু এই সরকারের পদত্যাগ, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু অবৈধ সংসদ বাতিল, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পূর্নাঙ্গ মুক্তি, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার পরিবেশ সৃষ্টি করা, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু নির্বাচনকালীন সময়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা যে নির্বাচনে জনগনের নিজের হাতে ভোট দেবে, ইভিএমের নয়।”
‘‘ ইস্যু পরিস্কার। এই ইস্যু বিএনপির, এই ইস্যু সকল অঙ্গসংগঠনের, এই ইস্যু বাংলাদেশের সকল জনগনের। আামি আহবান জানাব, এই ইস্যুতে দেশে সকল গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চায়, দেশকে রক্ষা করতে চায়, দেশের জনগনের যে মালিকানা জনগনের হাতে ফিরিয়ে দিতে চায় -আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই লক্ষ্যে কাজ করি। আমি অত্যন্ত আশান্বিত, আমরা সেই লক্ষ্যে ইনশাল্লাহ অনতিবিলম্বে পৌঁছবো।”
নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে যুব দলের বিদায়ী সভাপতি সাইফুল আলম নিরব বলেন, ‘‘ টুকু-মুন্নার নেতৃত্বেই যুব দল আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে এই সরকারের পতন ঘটাবে ইনশাল্লাহ। ছাত্র দলের ওপর হামলায় আমি বলতে চাই, এখন থেকে আমরা যুবদলসহ সকল অঙ্গসংগঠন তাদের পাশে থাকব।”
যুব দলের নতুন সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু বলেন, ‘‘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র দলের নেতা-কর্মীদের হামলা করা হচ্ছে, রক্ত ঝরানো হচ্ছে, রক্তাক্ত করা হচ্ছে। আমি এই সকল সন্ত্রাসীদেরকে এবং প্রশ্রয়দাতাদেরকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই, আমাদের সহযোদ্ধা ছাত্র দল নেতা-কর্মীদের শরীরে কয়েক ফোটা রক্ত রয়েছে প্রত্যেকটি হিসাব আমরা নেবো ইনশাল্লাহ।”
‘‘ আমরা বলতে চাই, যেভাবে একাত্তরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে বাংলাদেশের জনগন-সাধারণ ছাত্ররা রাস্তায় নেমে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো, ঠিক সেইভাবে শহীদ জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী দেশনায়েক তারেক রহমানের ডাকে আমরা আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে করতে চাই। সেজন্য সকলকে প্রস্তুত হতে হবে। আগামী দিনে আমরা যুব দল শপথ নিতে চাই, হাসিনার পতন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।”
যুব দলের নতুন যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও গোলাম মওলা শাহীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুব দলের বিদায়ী সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, যুব দলের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সহসভাপতি কামরুজ্জামান দুলাল, সাংগঠনিক ইসাহাক সরকারসহ মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে যুব দলের সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, জগলুল পাশা পাপেল, এনামুল হক এনামসহ ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:11 PM |
Magrib | 5:32 PM |
Isha | 6:51 PM |