আজ শুক্রবার | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১:১০
সরকার ‘বিষাক্ত ফুল’ দিয়ে ভোটের মাঠ সাজিয়ে ‘একতরফ’ নির্বাচনের যে খেলা শুরু করেছে তা রুখে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই হুশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের ফুল নাকি ফুটতে শুরু করেছে। এই ফুল বাগানের ফুল না, এই ফুল প্লাস্টিকের ফুল… ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখে… যার কোনো গন্ধ নেই, দুর্গন্ধ নেই সেই ফুল দিয়ে তিনি বাগান সাজানোর চেষ্টা করছে।”
‘‘ আপনারা জানেন যারা বিজ্ঞানের ছাত্র কোনো কোনো ফুলের রেনু যদি আপনার নাকের মধ্য যায় অনেক সময়ে মানুষের শ্বাস পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়, মানুষ মারা পর্যন্ত যেতে পারে… এরকম বিষাক্ত ফুলের কিছু কিছু রেনু আছে .. আজকের সরকার সেই পথে হাটছেন, আজকে সরকার মানুষের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন সেজন্য নতুন প্রজন্ম না আগামী প্রজন্ম আপনাদেরকে শুধু ভোট চোর না, শুধু ভোট ডাকাত না .. জনগনের বিরুদ্ধে গণশত্রু হিসেবে আপনাদের আখ্যায়িত করবে।”
হুশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের কথা খুব পরিস্কার, এসব সমস্ত খেলা বন্ধ করেন…বাংলাদেশের মানুষ ধরে ফেলেছে। এই খেলাটা বন্ধ করেন না হলে বাংলাদেশের মানুষ এবার একটা আখেরি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, জীবনমরণের জন্য প্রস্তুত। এবার জনগন রাজপথে নেমেছে কেবলমাত্র বিএনপিকে ক্ষমতা যাবার জন্য না, ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য…. এই লড়াইয়ে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র মঞ্চ রাজপথে থাকবে, সকল বিরোধী দল জনগনের সফল অংশ গ্রহনে রাজপথে নেমে এসে এই গণজাগরণকে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে কান ধরে পদত্যাগে বাধ্য না করা পর্যন্ত রাজপথ আমরা ছেড়ে যাবো না।”
‘‘এই লড়াইয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ হউন। আগামী সাপ্তাহটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ… অবরোধের কর্মসূচি আসবে, হরতালের আসবে, ঘেরাও আসবে… নানা ধরনের কর্মসূচি বিরোধী দল থেকে ঘোষণা করা হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাথে নিয়ে সেই কর্মসূচিগুলো আমরা সফল করব।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘‘ ওবায়দুল কাদের সাহেব প্রায়ই খেলতে চান। তারা নাকি সেমি ফাইনাল খেলে ফেলেছেন, এখন ফাইনাল খেলা বাকী। আমরা তো জানতাম আওয়ামী লীগ প্রিমিয়ার লীগে খেলে। আমরা যখন কিশোর বয়সে.. এই দেশে প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগ সবশেষে ছিলো প্রাইনিয়ার লীগ। তারপরে আমরা যখন আরেকটু বড় হলাম… প্রিমিয়ার লীগ চালু হলো।”
‘‘ আমরা তো ভেবেছিলাম যে, আওয়ামী লীগ প্রিমিয়ার লীগে খেলে, এখন দেথি পাইওনিয়ার লীগে খেলার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে।পাইওনিয়ার লীগের দলকে বাগিয়ে নিয়ে গিয়ে ‘ফুল ফুটতে শুরু করেছে’… এই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের নির্বাচন, এই হচ্ছে তাদের ফাইনাল খেলা।”
তিনি বলেন, ‘‘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী তিনি একদিন নিজেই বলেছেন যে, তাকে ছাড়া আওয়ামী লীগের সবাইকে নাকী কেনা যায়।উনি ভেবেছেন, বাংলাদেশের বোধহয় সব দলের সবাইকে নাকী কেনা যায়। দল হিসেবে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যখন অপরাপর রাজনৈতিক নেতাদের কেনাবেচার কাজকে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তিনি(প্রধানমন্ত্রী) অনুমোদন করেন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার যে আর কোনো জায়গা থাকে না… এটা পরিস্কার। তিনি কি আর রাজনৈতিক নেতা আছেন?”
‘‘রাজনৈতিক নেতাকে কেনা-বেচার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে তিনি নানারকমের নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভাবছেন এভাবে কেনা-বেচা করে পাইওনিয়ার লীগের দলদের নিয়ে তারা একটা একতরফা নির্বাচন করবেন.. সেটা নাকি অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের মানুষ বোকা না, বাংলাদেশের মানুষ জানে তাদের(সরকার) পায়ের তলায় মাটি নেই, বাংলাদেশের মানুষ জানে, আপনার দলের লোকেরা আজকে যারা নমিনেশনের জন্য ভিড় করছে…. অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এদের কারো টিকিও নাগাল পাওয়া যাবে না।”
সকাল সাড়ে ১১টায় তোপখানা রোড থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিল শুরু হয়ে বিজয়নগর, শিল্পকলা একাডেমী সড়ক হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এই মিছিলে নেতা-কর্মীরা ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন, অ্যাকশন’ ‘শেখ হাসিনা তফসিল, জনগন মানে না’ ইত্যাদি শ্লোগান দেয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রীতম দাস প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া ১২ দলীয় জোটের নওয়াব আলী আব্বাস, রাশেদ প্রধান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং অপর অংশের সদস্য সচিব ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন. নয়া পল্টনের সড়কে মিছিল করেছে।
Dhaka, Bangladesh বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:08 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |