আজ রবিবার | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৬:১৬
আবুবকর সিদ্দিক, জয়পুরহাট ঃ–জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটারে আঞ্চলিক সড়কের উপরে দু-পাশে ধানের খড়ের স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ওইসব গ্রামীণ জনগুরত্বপুর্ন ও ব্যস্ততম সড়ক দখল করে স্থানীয় কৃষকেরা চলতি বোরো মৌসুমে ফসলের ধানের খড় শুকানোর কাজ শেষে সড়কের উপরে দু-পাশে সারি সারি করে খড়ের স্তুপ করে রেখেছেন। এর ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে। সড়কের চলাচলের সঠিক আইন থাকলেও তার সঠিক ভাবে ব্যবহার করছেনা ওইসব কৃষকেরা। তাদেরকে সড়কের আইন সম্পর্কে সচেতন করতে তেমন কোন পদক্ষেপও নিচ্ছেনা উপজেলার প্রশাসন। এর কারণে সড়কের আইনের সুফল নিরবেই থেকে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানের খড় সড়েকের দু-পাশে রাখার ফলে সড়কগুলো সরু হয়ে এসেছে। এত করে পথচারীদের চলাচলের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মাত্রাই থেকে হাতিয়র পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কে এবং বৈরাগীরহাট থেকে কুশুমসাড়া পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে দু-পাশে সারি সারি ভাবে খড়ের স্তুপ রয়েছে। এলাকার কৃষকেরা কোন কিছু তোয়াক্কা না করে খেত থেকে ধান কেটে এনে সড়কের উপর দখল করে প্রতি বছর বোরো ধান মাড়াই, ধান পরিষ্কার, ধান ও খড় শুকানো কাজ করেন তারা। খড় শুকানোর কাজ শেষে এরপর তারা সড়কের উপর দু-পাশে দীর্ঘদিন যাবৎ সারি সারি করে খড়ের স্তুপ করে রাখেন। সড়কের দু-পাশে খড় রাখার কারণে সড়কগুলো এখন সরু হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত ওইসব সড়ক দিয়ে চলাচলের সময়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে শুকনা খড়গুলো সড়কের উপরে দু-ধারে রাখার ফলে খড়কুটোগুলো বাতাসে উড়ে এসে পথচারীদের চোখে-মুখে ও নাকে পড়ছে। খড়ের স্তুপের কারণে সড়কের উপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে অনেক খড়। এর ফলে একটু বৃষ্টির পানিতে খড়গুলো ভিজে পচে গিয়ে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এর মধ্যেই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে নানা যানবাহন। আর সেখানে প্রায় সময় ছোট-বড় অনেক দূর্ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার মাত্রাই গ্রামের বাসিন্দা আল-আমিন ও বিপ্লব বলেন, এ মৌসুমে মাত্রাই থেকে হাতিয়র পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের উপর দু-পাশে দীর্ঘদিন যাবৎ সারি সারি করে খড়ের স্তুপ রাখার ফলে সড়ক সরু হয়ে গেছে। এতে মোটরসাইকেল চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। গত বছরে বাড়ি থেকে কালাই সদরে যাওয়ার পথে সড়কের উপরে খড়ের স্তুপের কারণে অনেক লোক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
মাত্রাই-কালাইয়ের আঞ্চলিক সড়কের অটোভ্যান চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সড়কের উপরে শুকনো খড়ের স্তুপ করে রাখার কারণে একটি অটোরিকশা নছিমনকে সাইড দিতে দেরি করায় নছিমনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খড়ের স্তুপের মধ্যে ঢুকে য়ায়। এতে অল্পের জন্য যাত্রীদের কোন হতাহত ঘটেনি।
উপজেলার কুশুমসাড়া গ্রামের বাসিন্দা মামুনুর রশিদ মন্ডল বলেন, সড়কে থাকা শুকনোখড় থেকে খড়কুটোগুলো বাতাসে উড়ে এসে পথচারীদের চোখে-মুখে ও নাকে পড়ছে। তাছাড়া সড়কের উপর অনেক খড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকছে। এর ফলে একটু বৃষ্টি হলেই খড়গুলো ভিজে গিয়ে পচে সড়কগুলো পিচ্ছিল হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে নানা যানবাহন।
মাত্রাই-কালাইয়ের সড়কের উপরে খড়ের স্তুপ করে রেখেছেন উপজেলার ভেরেন্ডী গ্রামের কৃষক আজিজ ও তার স্ত্রী বুলবুলি। তারা বলেন, উৎপাদিত ফসলের কাজের জন্য আগের মতো আমাদের উঠান অনেক ছোট হয়ে গেছে। এই জন্য জমির ধান একসঙ্গে এনে ধান মাড়াই, খড় শুকানো ও খড় রাখা অনেক অসুবিধা হচ্ছে। তাই এই সড়কের ধারে খড় স্তুপ করে রেখেছি। একটু সুবিধা হলেই সড়ক থেকে খড়ের স্তুপ সরে নিয়ে যাবো।
সেখানে আরেক জন কৃষক জাহিদুল বলেন, এখন বর্ষাকাল ঘনো ঘনো বৃষ্টি হচ্ছে। খড় রাখার জন্য আমার কোন আঙ্গিনা নেই। অনেক বছর থেকে সড়কের ধারে খড় রাখছি। এই কাজের জন্য যদি কোন অন্যায় হয় তাহলে আমার করার কিছুই নেই। আর যদি কেউ এই ধরনের কাজ না করে, আমিও করবোনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নীলিমা জাহান বলেন, আমি দেখেছি অন্যান্য উপজেলা কৃষকদের উঠান আছে। এই উপজেলা কৃষকদের কৃষি কাজের জন্য উঠান নেই বলেই চলে। কৃষকেরা মাটির বাড়ি থেকে ইটের বাড়ি করছেন। কিন্তু তারা উঠান রাখতে চাইনা। সড়কের উপরে এই ধরনের কাজ করা তাদের পক্ষে শোভা পায়না
এই বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট টুকটুক তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, উপজেলার প্রতিটি সড়ক জনসাধারণের চলাচলের জন্য, অন্য কোন কাজের জন্য নয়। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। আর সড়কের উপরে এ ধরনের কর্মকান্ড করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:04 PM |
Asr | 3:05 PM |
Magrib | 5:26 PM |
Isha | 6:46 PM |