আজ রবিবার | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:৫২

শিরোনাম :

‘বিগত ১৫ বছরের তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রাট রয়েছে, তথ্য লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে:অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ‘চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে ,সেই কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি’র সমমনা দল ও জোট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তার ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ আর নেই(ইন্না লিল্লাহি……রাজিউন) প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ খেতাবে ভূষিত করেছে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার বিষয়ে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশন করা হয়েছে:ড. বদিউল আলম মজুমদার নতুন করে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো উচিত

কালোত্তীর্ণ ৭ মার্চের ভাষণ

প্রকাশ: ৫ মার্চ, ২০২১ ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ,উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় :- বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম প্রেরণা। ৭ মার্চের ভাষণই নিরস্ত্র একটা জাতিকে সশস্ত্র হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে সবচেয়ে বেশি উদ্ধুদ্ধ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা তার অনুপস্থিতিতে সমগ্র জাতিকে ৯ মাস যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দিকনির্দেশনা, সাহস ও শক্তি জুগিয়েছিল। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাঙালির আরাধ্য স্বাধীনতা। ইতিহাস সাক্ষী দেয় এ বাঙালি জাতির কোনো দিনই একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মালিকানা ছিল না। জাতিভিত্তিক রাষ্ট্রের চেতনা বলতে যা বুঝায় তার কোনো কিছুই ছিল না। বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের স্বপ্ন কখনই স্পষ্ট রূপ নেয়নি। একমাত্র ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এই জনপদে ও বাঙালির ইতিহাসে প্রথম স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই রাষ্ট্রের স্থপতি।
জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিখ হেগেলের (১৭৭০-১৮৩১) ভাষায়, ‘মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে রাষ্ট্র সৃষ্টি করা।’ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল ইতিহাসের অনিবার্যতা। ৭ মার্চ ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলোর একটি। বিভ্রান্তি ছিল প্রচুর, তবে সেটা ছিল কিছু তরুণ নেতাকর্মী ও জনতার একাংশের মধ্যে। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য অর্জনের জন্য কৌশল ও কর্মপরিকল্পনার মধ্যে কোনো বিভ্রান্তি বা দোদুল্যমানতা ছিল না। ১ মার্চ পাকিস্তানের সেনা শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খাঁন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নবগঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের আহ্বানকৃত সভা স্থগিত করার পরক্ষণেই উত্তাল হতে থাকে ঢাকার রাজপথ। ২ মার্চ থেকে অসহযোগের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু, পুরো দেশ অচল হয়ে পড়ে। ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু পল্টনে ঘোষণা করলেন ৭ মার্চ জনসভায় তিনি জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। দেশে-বিদেশে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ওইদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন।

৬ মার্চ বিশ্ববিখ্যাত ‘দি ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার এক নিবন্ধে বলা হয়, শেখ মুজিব একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেন। ৭ মার্চ সকালে করাচি থেকে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোতেও এমন আশঙ্কাই ব্যক্ত হয়েছিল। অনেক তথাকথিত বিশ্লেষক তাদের লেখায় ও বক্তৃতায় এখনো বলেন, শেখ মুজিব যদি ৭ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা দিতেন তাহলে লক্ষ জনতা ঢাকা সেনানিবাস আক্রমণ করত, এতেই অনেক কম মূল্যে আমরা স্বাধীনতা পেয়ে যেতাম। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস সচেতনতা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির বাস্তবতার সম্যক ধারণা এত প্রগাঢ় ছিল, তিনি কোনো অবস্থাতেই একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা (ইউডিআই) করে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের তকমা লাগানোর সুযোগ দেননি। দেশে দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং এসব আন্দোলনের আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সচেতন ছিলেন।
বিশ্ব পরিস্থিতি আমাদের কতটা প্রতিকূল ছিল তা বুঝার জন্য একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমেরিকা, চীন, ও ইসলামিক দেশগুলোর বিরোধিতার কথাই বহুল প্রচারিত। ভারতসহ বিশ্বের গুটিকয়েক দেশ ছাড়া কেউই আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধেও আমাদের পক্ষ অবলম্বন করেনি। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে, ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে আমাদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল ১০৪টি দেশ, পক্ষে মাত্র ১১টি, আর ভোটদানে বিরত ছিল ১০টি দেশ। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাযুদ্ধের সব প্রস্তুতির সার্বিক দিকনির্দেশনা দিলেও পরিপূর্ণ স্বাধীনতার ঘোষণা আনুষ্ঠানিকতাটি বাদ রাখেন। ২৫ মার্চের রাতে জাতি যখন পাকিস্তানিদের একতরফা যুদ্ধের শিকার হলো তখনই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হওয়ার আগেই একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করলে আমাদের কী পরিণতি হতো তার প্রমাণ হলো সাম্প্রতিককালের স্পেনের কাছ থেকে কাতালোনিয়ার একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা করে ওই দেশের নেতা কার্লোস পুজেমন বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু পৃথিবীর একটি দেশও একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণাকারী কাতালোনিয়ার পাশে দাঁড়ায়নি বা দেশটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু সবই বলেছিলেন শুধু একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণাটি ছাড়া। ‘…তোমাদের কাছে অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা (আক্রমণ নয়) করতে হবে। …আমরা ভাতে মারবো, আমরা পানিতে মারবো…।’ যেমনটি পাওয়া যায় উইনস্টন চার্চিলের ৪ জুন ১৯৪০-এর ‘উই শ্যাল ফাইট অন দি বিচেস’ বক্তৃতায়, ‘…আমরা সাগরে লড়বো, মহাসগরে লড়বো… আমরা অবশ্যই লড়বো… আকাশে, আমরা আমাদের দ্বীপকে সুরক্ষা দিব… এতে যত ত্যাগই স্বীকার করতে হয়। আমরা সৈকতে লড়বো। আমরা অবশ্যই লড়বো, …মাঠে, রাস্তায়। আমরা অবশ্যই লড়বো পাহাড়ে; আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করব না।’. বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ করে নিয়েছে এবং ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এখন শুধু বাঙালির নয়, সারা বিশ্বের তথা মানব সভ্যতার অহঙ্কার। এ ভাষণ কালোত্তীর্ণ বিশ্ব ক্লাসিক। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে অনেক কিছুই রয়েছে যা চলমান সমসাময়িক বিশ্বে খুবই প্রাসঙ্গিক। বিশ্বের দেশে দেশে আঞ্চলিক ও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিরসনে সমঝোতাকে প্রথমে বেছে নিতে হবে। সমঝোতার সব পথ রুদ্ধ হলেই অন্য পথ ধরতে হবে। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘…আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি…।’ রক্তক্ষয় ও হানাহানির পথে প্রথমেই না গিয়ে বরং এ পথকে পরিহার করে সমঝোতার চেষ্টা বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

গণতন্ত্র মানেই সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে প্রাধান্য দেওয়া নয়, এটা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অন্যতম একটি শিক্ষা। বেশিরভাগ লোক যা বলবে তাই গণতন্ত্র, এটা বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক উপলব্ধি ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ভাষায়, ‘…যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজন যদিও সে হয় তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।’ বঙ্গবন্ধুর গণতন্ত্র কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর নয় বরং বঙ্গবন্ধুর গণতন্ত্র ছিল ন্যায্য কথার গণতন্ত্র। সেটা একজনে বলুক, আর অল্প কয়েকজনে বলুক বেশিরভাগ লোকে বলুক বা সবাই মিলে বলুক। দুর্বল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার নিপীড়ন আজকে বিশ্বের একটা অন্যতম সমস্যা। একটা সমাজের সংখ্যাগুরুদের দায়িত্ব হচ্ছে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর হেফাজত করা। যদিও মূলত, পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বনকারী বিহারিদের উপলক্ষ করেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘…এই বাংলায় হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি, অ-বাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের এই অংশটুকু কতটা কালোত্তীর্ণ তা আজকের বিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝা যায়।

ইরাক ও তুরস্কের কুর্দিদের বা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দুরবস্থার দিকে তাকালে আরও বেশি স্মরণে আসবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ। রামু, নাসিরনগর বা গাইবান্ধার ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধেও প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর এই দার্শনিক উক্তির অনুসরণ। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শাশ্বত আহ্বান ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাষণে।

১ মার্চ থেকেই উত্তাল হতে থাকে রাজপথ। সারা দেশজুড়ে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে হতাহত হয় অনেকেই। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে তাদের কথাও ভুলেননি। তিনি বলেন, ‘…আর যে সমস্ত লোক শহীদ হয়েছে, আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে, আমরা আওয়ামী লীগের থেকে যদ্দুর পারি সাহায্য করতে চেষ্টা করবো। যারা পারেন আমার রিলিফ কমিটিতে সামান্য টাকা-পয়সা পৌঁছে দেবেন।’. বঙ্গবন্ধু এক বাক্যে বাঙালির ভবিষ্যৎ রচনা করে বলেছিলেন বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। তার শুধু একটি উদাহরণ পদ্মা সেতু। দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে কাল্পনিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংক যখন সরে গেল তখন এডিপি, জাইকাসহ আরও নানা উন্নয়ন সহযোগী পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবেন অনেকটা যেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের বক্তব্যেরই প্রতিফলন, ‘…৭ কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।’

রাজনীতি যারা করবেন তারা ক্ষমতাকে ভোগ করার জন্য রাজনীতি করবেন না। জনগণের জন্য আত্মত্যাগই হচ্ছে রাজনীতির মহৎ উদ্দেশ্য। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের জীবন-মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখাই রাজনীতি। বঙ্গবন্ধু তার সারাটি জীবন মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন, যৌবনের তেরোটি বছর জেলখানায় নির্জন প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও ক্ষমতার সিঁড়িকে প্রত্যাখ্যান করে ৭ মার্চ বলেছেন, ‘…আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই।’

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার সংগ্রাম কথাটা বলেই ক্ষান্ত হননি, মুক্তির সংগ্রামের কথাটাও যোগ করেছিলেন, যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধুর মনে মুক্তির সংগ্রামের তাৎপর্য লুকানো ছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে, ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি একবার উচ্চারিত হলেও ‘মুক্তি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন কয়েকবার, ‘‘…আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়’, ‘…এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে’, ‘…যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হয়’, ‘…এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ’, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারে সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’।”. স্বাধীনতার সংগ্রামের চেয়ে মুক্তির সংগ্রাম অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও মুক্তির জন্য স্বাধীনতা অপরিহার্য। স্বাধীনতা লাভের মাধ্যমে পরাধীনতার অবসান হলেও মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি অর্জন করে না। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি প্রথম একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের মালিক হয়।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির সংগ্রাম শুরু হতেই সেই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়া হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ছিল সবাই মিলেমিশে একটি বহুমাত্রিক বহুবাচনিক উদার গণতান্ত্রিক সমাজ। যার মধ্য দিয়ে মানুষের মুক্তি আসবে। মুক্তি বলতে সব বঞ্চনা, বৈষম্য, শোষণ, সংকীর্ণতা, কূপমণ্ডূকতা, চেতনার দীনতা থেকে মুক্তিকে বুঝিয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

অর্থনৈতিকভাবে আমরা দ্রুত এগুচ্ছি। এ বছরেই আমরা অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় নাম লেখাচ্ছি। ২০২১ সালে বিশ্বব্যাংকের নির্ধারিত মানের বিচারে মাথাপিছু ডলারের হিসাবে আমরা মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পাব। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব, তবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দৃঢ়ভাবে না ধরলে এ উন্নয়ন টেকসই হবে না।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মুক্তির সংগ্রাম চলে নিরন্তন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষের মুক্তির সংগ্রাম অব্যাহত থাকুক এটাই আজকের প্রত্যাশা।

Please follow and like us:
error20
fb-share-icon
fb-share-icon20

লেখকের কলাম

আরও পড়ুন

গত ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ

  • আর্কাইভ

    আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা দূর্নীতি করে সেকেন্ড হোম বানিয়ে পালিয়ে আছে : আমিনুল হক

    ‘বিগত ১৫ বছরের তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রাট রয়েছে, তথ্য লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে:অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

    ‘চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে ,সেই কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী

    “প্রথম বাংলাদেশ-আমার শেষ বাংলাদেশ”

    আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি’র সমমনা দল ও জোট

    কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ১ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার

    কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যান পুত্রের উপর জাসদ গণবাহিনীর হামলা

    আগামীকাল উত্তরা পর্ব থানা বিএনপির কর্মিসভা ও ৩১ দফার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে:প্রধান অতিথি থাকছেন আহ্বায়ক আমিনুল

    তারেক রহমানের নির্দেশনায় গাবতলী উপজেলার পদ্মপাড়া গ্রামে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্র বিতরণ করবে “কৃষিবিদবৃন্দ”

    ইতালিতে বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করলো কিশোরগঞ্জের সায়ক মিয়া

    টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেইলি ব্রিজ ভেঙে পাথর বোঝাই ট্রাক তুরাগ নদীতে

    “যুবলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের সহযোগী সন্ত্রাসী পিস্তল জাহিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট”

    অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ নারী দল

    প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন

    উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন তার ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত

    “পতিত” আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসন রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে : আমিনুল হক

    চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান— রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শহীদ ও আহত পরিবারের পাশে তারেক রহমান

    উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ’র মৃত্যুতেবিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান-এর শোকবার্তা

    বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ আর নেই(ইন্না লিল্লাহি……রাজিউন)

    প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ খেতাবে ভূষিত করেছে

    আদানি পাওয়ারের বিরুদ্ধে এবার শত শত কোটি ডলারের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার

    পূর্বাচলে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী এক শিক্ষার্থী নিহত ,আহত আরও দুই শিক্ষার্থী

    ফিনল্যান্ড বিএনপির আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

    আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

    আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার বিষয়ে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশন করা হয়েছে:ড. বদিউল আলম মজুমদার

    নতুন করে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো উচিত

    ফরিদগঞ্জে চাঁদপুর খবর’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

    আজকের যুদ্ধ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার: তারেক রহমান

    দেশ ও জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে গতির ভূমিকা অপরিহার্য : বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান

    যুক্তরাজ্যের লেবার মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত ঘুষ নেয়ার অভিযোগ

    • Dhaka, Bangladesh
      রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
      SalatTime
      Fajr5:16 AM
      Sunrise6:37 AM
      Zuhr11:57 AM
      Asr2:57 PM
      Magrib5:17 PM
      Isha6:38 PM
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুল হাসান বাবলু
    ই-মেইলঃ dk.kamrul@gmail.com
    copyright @ বাংলাদেশ দিনকাল / বিডি দিনকাল ( www.bddinkal.com )
    বিডি দিনকাল মাল্টি মিডিয়া (প্রা:) লিমিটেড প্রতিষ্ঠান।