আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:২৬
এস,এম,আশরাফুল হক রুবেল,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :- কুড়িগ্রামে চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৯ উপজেলায় ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে চিকন ধান আবাদ করা হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে। এসব চিকন ধানেই দেখা দিয়েছে নেক বøাস্ট রেগের আক্রমণ। বিশেষ করে ব্রি ধান-২৮ ও ব্রি ধান-৮১ যারা লাগিয়েছেন তারা পরেছেন বিপাকে। ফলে এসব কৃষকের দিশেহারা অবস্থা। কৃষি বিভাগ বলছে, বিরূপ আবহাওয়া এবং কীটনাশক কাজে না লাগায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বোরো ধান নেকবøাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে চিটা হয়ে গেছে। নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে আরও অনেক বোরো ক্ষেত। ফলে এ বছর আশানুরুপ ফলন পাবেনা কৃষকরা। এই ধান দিয়েই বছরের বেশিরভাগটা সময় খাবার যোগান দিত যে কৃষক পরিবার; এখন তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ। কৃষি বিভাগের পরামর্শ এবং সংক্রমিত জমিতে কীটনাশক স্প্রে করেও শেষ রক্ষা হয়নি এবার।
কৃষি বিভাগ বলছে বিরূপ আবহাওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে কীটনাশক কাজে না লাগায় ধান ক্ষেতে দেখা দেয় এই নেক বøাস্ট (ধানের গলাপচা রোগ)। সংক্রমিত জমিতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও পুরোপুরি কাজ হচ্ছে না। একরের পর একর জমিতে পাকা ধানে চিটা হয়ে যাচ্ছে।উপর থেকে দেখা যায় ধানের সোনালী রং কিন্তু হাতে নিলে বোঝা যায় এগুলো চিটা হয়ে গেছে। যে ধান পরিবারের খাদ্য মেটানোর পর খরচ ওঠানোর কথা; সেই কাঙ্ক্ষিত ধান না পেয়ে হতাশ ক্ষতিগস্ত কৃষকের মাথায় হাত।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের জয়দেব হায়াত গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ কৃষক আয়মন বেওয়া আক্ষেপ করে বলেন।‘পঁচিশ শতক ধানের ভুঁই গাড়ছি। তাক হিনা আপদ ধরছে। এ্যালা কি খায়া বাঁচমো বাবা কনতো বাচ্চা কোচ্চাক নিয়া! করোনার জন্য মানুষের দেহো কি দুর্গ-দশা হয়া গেইচে। মানুষ বাঁচপের নাগছে না। এ্যালা কি করমো কনতো!’ তিনি পঁচিশ শতক জমিতে ব্রি ধান-২৮ লাগিয়েছিলেন যা নেক বøাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে সব চিটা হয়ে গেছে।
রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের জয়দেব হায়াত গ্রামের নুর মোহাম্মদ (৫০) জানান, ‘এক একর জমির ভাতই আমি খাই এবং ২/৪ মন বেঁচি কামলা কৃষাণের দাম দেই। এখন বেঁচাতো দূরের কথা নিজের ভাতও হবার নয়। পরামর্শ মোতাবেক আমি খরচো করছি, ওষুধ পাতিও দিছি। ট্রিটমেন্ট ঠিকি করছি অথচ ধান চিটা হইছে।’
একই গ্রামের কৃষক গোলজার হোসেন জানান, ‘আমার জমি হলো ৬০ শতক। মোটা লাগাইছি ৩০ শতক আর চিকন ২৮ ধান লাগাইছি ৩০ শতকে। ঔষধও ঠিকমতো দিছি। তিনবার ঔষধ দিছি। তারপরও কোন কাজ হয় নাই। না হওয়াতে একবারে সাদা হয়া গেইছে শীষ। কাটার উপযোগী নয়। এখন মনে হয় ২মন ধানও হবে না।’
একই অভিযোগ জানালেন অচিনগাছ এলাকার কৃষাণি আমিনা ও জয়গুন।গর্ভের দোলা বিলের আকলি সহ অনেকের এবার ধান চিটা হওয়ায় ছেলেমেয়ের খাবার নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। করোনার কারণে স্বামীরা শ্রম দিতে বাইরে যেতে পারছে না। এদিকে অনেক টাকা খরচ করে ধানও পাওয়া গেল না। ফলে চরম হতাশার ছাপ তাদের চোখেমুখে।
সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, মাঠে মোটা ধানের কোন সমস্যা হচ্ছে না। চিকন ধানে নেক বøাস্ট দেখা দিচ্ছে। সঠিক নিয়মে ঔষধ দেয়ার পরও কৃষকরা ব্যর্থ হচ্ছে। মনে হচ্ছে ঔষধের মান কাজে দিচ্ছে না। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জরুল ইসলাম জানান, এখন ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রথম দিকের ফলনগুলো একটু কম আসলেও পরবর্তীতে যে ধানগুলো কাটা হবে সেগুলো খুবি ভাল অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে নেক বøাস্টের আক্রমণ নাই। সাধারণত কৃষক আক্রান্তের পরে কীটনাশক স্প্রে করায় ফলাফল পাচ্ছে না। আগে থেকেই ঔষধ দিলে এমন ক্ষতি হত না।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |