আজ রবিবার | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:৪৭
মো. নূর-উল-আলম, এসিএস, এলএলবি: সময়ের প্রবাহে ধাপে ধাপে ব্যবসায় সংগঠনের বিবর্তন ঘটেছে। বাজার ব্যবস্থার বিবর্তনের সাথে সাথে অধিক মূলধনের প্রয়োজনে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালন পদ্ধতিরও বিবর্তন ঘটেছে।এ বিবর্তের শুরুতে এসেছে এক মালিকানা ব্যবসায় এবং অতঃপর অংশীদারী ব্যবসায়। যৌথমূলধনী কোম্পানী ব্যবসায় প্রচলন হলো বিবর্তনের তৃতীয় ধাপ। কোম্পানী ব্যবসায়ের প্রকৃতি প্রথম দু’টি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ, এর রয়েছে আলাদা আইনগত ভিত্তি। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের পর নানাবিদ কারণে যৌথমূলধনী কোম্পানি ব্যবসায় সংগঠনের এই বিবর্তনের সর্বশেষ এবং জনপ্রিয়তম সংযোজন হয়। যৌথমূলধনী কোম্পানির একটি বিশেষ ধরন হলো সাধারণ সীমিত দায় কোম্পানি (পিএলসি)। এ ধরনের কোম্পানি আরো অধিকতর মূলধন সংগ্রহের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত হয়ে জনগণের সামনে তাদের সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগের নতুন বিকল্প তৈরী করে একটি দেশে অর্থনীতিকে অধিকতর গতিশীল রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
একটি সাধারণ সীমিত দায় কোম্পানি বা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী(পিএলসি) সহ সব ধরনের যৌথমূলধনী কোম্পানি’তে সকল শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানা থাকলেও সবাই কোম্পানি পরিচালনার সুযোগ পান না। প্রতিবছর অনুষ্ঠিত ‘বার্ষিক সাধারণ সভা’ বা এজিএম এ সকল শেয়ার মালিকের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সকল প্রতিনিধি তথা ‘বোর্ড অব ডিরেক্টর্স’ বা পরিচালকমন্ডলী তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত পর্ষদসভায় গৃহীত যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সকলে যৌথভাবে কোম্পানির সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পাশাপাশি তারা পরিচালনা ‘পর্ষদ সভা’ পরিচালনার জন্য তাদের মধ্য থেকে একজনকে ‘চেয়ারম্যান’ নির্বাচিত করেন। কোম্পানির দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার জন্য নিজেদের কাজের সুবিধার্থে পরিচালকবৃন্দ তাদের মধ্য থেকে এক জনকে ‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর’ বা ‘এমডি’ নির্বাচিত করে থাকেন। উক্ত ‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর’ নিয়মিত অফিস করেন, বেতন পান এবং তার কাজের জন্য তাকে পরিচালনা পর্ষদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। পরিচালকবৃন্দর মধ্য থেকে ‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর’ পাওয়া না গেলে বাইরে থেকে যোগ্য কাউকে ‘সিইও’ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
একটি সাধারণ সীমিত দায় কোম্পানি (পিএলসি)’র নাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে কার্যারম্ভ কিংবা পরবর্তীতে কোম্পানি পরিচালনার জন্য পরিচালকগণ কোন পারিশ্রমিক পান না। পরিচালকগণ পর্ষদ সভায় উপস্থিত থাকার জন্য শুধুমাত্র ‘বোর্ড ফি’ প্রাপ্য হন। সাধারণভাবে, এছাড়া পরিচালকবৃন্দ অন্যকোন প্রকাশ্য অথবা গোপন অর্থিক সুবিধা বা ‘অফিস অব প্রফিট’ গ্রহণ করতে পারেন না। এটি হলো সাধারণ সীমিত দায় কোম্পানি (পিএলসি) পরিচালনায় পারিতোষিক বিষয়ক প্রচলিত নিয়ম।কোম্পানি পরিচালনা তাদের উপর বিশ্বাসপূর্বক ন্যস্ত দায়িত্ব; যা তাদেরকে সততা এবং বিশ্বস্ততার সাথে পালন করতে হয়।
পরিচালকদের দায়-দায়িত্ব এবং ক্ষমতা বিষয়ে বহুবিদ মামলার ফল স্বরুপ অনেকগুলো ডকট্রিন বা মতবাদের সূচনা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে,কোম্পানি পরিচালকদের দায়-দায়িত্ব এবং ক্ষমতার ক্ষেত্র পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত হয়েছে। এছাড়া, কোম্পানি পরিচালনায় যে কোন ব্যর্থতায় পরিচালকদের একক এবং যৌথ দায় রয়েছে; আছে সিভিল বা দেওয়ানী দায়, হতে হয় দেওয়ানি মামলার শিকার। একটি সাধারণ সীমিত দায় কোম্পানি (পিএলসি) কিংবা একটি ঘরোয়া সীমিত দায় কোম্পানি (প্রাইভেট কোং)’তে পরিচালকবৃন্দ তথা নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরা শুধুমাত্র পর্ষদ সভায় উপস্থিত থাকার জন্য ‘ফি’ প্রাপ্য হন । যা কোম্পানি ‘সংঘ বিধি’ বা ‘পরিমেল নিয়মাবলি’ বা ‘আর্টিকেলস অব এসোসিয়েশন’ দ্বারা নির্ধারিত।সাধারণভাবে, এছাড়া পরিচালকবৃন্দ অন্যকোন প্রকাশ্য অথবা গোপন অর্থিক সুবিধা বা অফিস অব প্রফিট গ্রহণ করতে পারেন না। এটি হলো আমাদের দেশে যৌথমূলধনী কোম্পানি পরিচালনায় পারিতোষিক বিষয়ক প্রচলিত নিয়ম।অথচ,যৌথমূলধনী কোম্পানির আতুরঘর ইউরোপের সবদেশেই কোম্পানী আইন সংশোধন করে পরিচালকদের পারিশ্রমিক বিষয়ক পলিসি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে l আছে উল্লিখিত বিষয়ে সুস্পষ্ট নিয়ম-নীতি l
অপরপক্ষে, পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি পরিচালনা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং, শ্রমঘন এবং সময় সাপেক্ষ বিষয়। এক্ষেত্রে কোম্পনিগুলোর ‘পরিচালনা পর্ষদ’ প্রচলিত আইনের পাশাপাশি তাদের স্ব স্ব প্রাথমিক রেগুলেটর এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিভিন্ন শর্তাবলী পরিপালন করে কোম্পানি পরিচালনা করতে হয়। কোম্পানি উপস্থাপিত বা প্রদর্শিত পাবলিক ডকুমেন্টের সকল ভুলভ্রান্তির দায় বহন করতে হয় পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদকে l প্রায়শই আপনারা বিএসইসি,ডিএসসি এবং সিএসি কর্তৃক বিভিন্ন কোম্পানীর ‘পরিচালনা পর্ষদ’কে কারন দর্শানোর নোটিশ কিংবা জরিমানা করতে দেখে থাকবেন l উপরন্তু, কোম্পানির পরিচালনায় যে কোন ব্যর্থতায় পরিচালকদের একক এবং যৌথ দায় রয়েছে l প্রসপেক্টাস এবং আর্থিক বিবরণী সংক্রান্ত ভুল-ভ্রান্তির জন্য যৌথ ভাবে সকল পরিচালকের রয়েছে সিভিল তথা দেওয়ানী দায়। হতে হয় দেওয়ানি মামলার শিকার।
অথচ, এ বিষয়ে তাদের জন্য কোন ধরনের পারিশ্রমিক বিবেচনা করা হয়নি। আবার, স্বতন্ত্র পরিচালকদের জন্যও ‘পর্ষদ ফি’র বাইরে কোন ধরনের পারিশ্রমিক বিবেচনা করা হয়নি। অথচ, অডিট কমিটির মত স্পর্শকাতর বিষয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালকে। ‘এনআরসি’ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালকেই। ‘পরিচালনা পর্ষদ’এ জ্ঞান এবং দক্ষতায় বৈচিত্র আনার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চত করতে ‘পরিচালনা র্পষদ’এ স্বতন্ত্র পরিচালকের অন্তর্ভূক্তির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে যা বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট সুশাসনের অন্যতম মূল স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু, তাদের উক্ত কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে যে সময় এবং শ্রম দিতে হবে তার জন্য কোন পারিশ্রমিকের কথা বিবেচনায়ই নেয়া হয়নি ।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এর মার্চ ২০২০ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বতন্ত্র পরিচালকদের স্বরুপ’ নামক একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলোর ‘পরিচালকদের’ আয়ের করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে আরো জানা যায়, এদেশে পরিচালকের গড় পারিশ্রমিক তাদের যোগ্যতা এবং দায়িত্বের সাথে কোনভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কোম্পানি থেকে তাদের বার্ষিক গড় আয় প্রায় মাত্র দেড় লাখ টাকা। মাসে ১২,৫০০ টাকারও কম! অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে একজন স্বতন্ত্র পরিচালক বছরে গড়ে তার চাইতে সাত গুণ বেশি আয় করেন। এত নিম্ন আয় তাদের পেশাদারী দায়িত্ব, অভিজ্ঞতা এবং অবদানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। উপরন্তু, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দিয়েছে কিন্তু কোন দায় দেয়নি। তাই হয়নি তাদের সত্যিকারের ক্ষমতায়ণও। অথচ, অডিট কমিটির মত স্পর্শকাতর বিষয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালকে। অডিট কমিটির প্রধান হিসেবে তার কাজ কোম্পানির সকল প্রকার আর্থিক অনিয়ম এবং অসঙ্গতি উদ্ঘাটন করা এবং তদানুযায়ী পর্যদ সভাকে অবহিত করা। পাশাপাশি বার্ষিক সাধারণ সভায় সকল শেয়ারহোল্ডারকেও বিষয়টি অবহিত করার বিধান রাখা হয়েছে। তাদের উক্ত কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে যে সময় এবং শ্রম দিতে হবে তার জন্য কোন পারিশ্রমিকের কথা বিবেচনায়ই নেয়া হয়নি। পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি পরিচালকের দায়িত্ব পালন যেন চ্যারিটি! এ বিষয়টি দেশের ভালো ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত হবার অনিহার অন্যতম কারনও বটে !
লাভজনক কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আকৃষ্ট করতে পরিচালকদের জন্য বিদ্যমান পারিশ্রমিক মোটেও যথেষ্ট নয় ! অধিকন্তু, উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্পূর্ণ শেয়ার দীর্ঘদিন ‘লকইন’ রাখার বিনিয়োগবান্ধব বিকল্প খুঁজতে হবে ; যাতে করে সব ধরনের শেয়ার মালিক পুঁজিবাজার থেকে লাভবান হতে পারেন।নিজেদের পরিশ্রমের ন্যায্য হিস্যা পাওয়া উদ্যোক্তা পরিচালকদের অধিকার। সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার নামে সংখ্যাগুরুদের অধিকারের প্রতি উদাসিন থেকে বিনিয়োগবান্ধব ভালো পুঁজিবাজারে রুপান্তর কখনো সম্ভব নয় !
ব্যবসা পরিচালনায় অন্যতম জনপ্রিয়তম নীতি হলো ‘টাইম ইজ মানি’।তাই, নিম্ন পারিশ্রমিক দিয়ে কখনো টেকসই কোম্পানি পরিচালানা আশা করা যায় না।উপরন্তু, উপযুক্ত পারিশ্রমিকের অনুপস্থিতিতে অদক্ষতা ঝেঁকে বসবে।স্বল্প সন্মানীর কারনে স্বতন্ত্র পরিচালকসহ অপরাপর সকল পরিচালকদের বস্তুনিষ্ঠতা এবং কর্মতৎপরতা হয়ে পড়বে আপসমূলক এবং নিয়ম রক্ষার আনুষ্ঠানিকতার মতো।কোন দক্ষ লোকই আপসমূলক হয়ে নিজের সুনাম এবং সময় নষ্ট করতে চাইবে না।ফলে, কোম্পানিগুলো না পারবে যোগ্যতা সম্পন্ন লোকদের আকৃষ্ট করতে এবং না পারবে তাদের দীর্ঘদিন ধরে রাখতে। তাছাড়া যথেষ্ট সময় না দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হবার কিংবা ভুল সিদ্ধান্তে পর্যবসিত হবার ঝুঁকিতে থাকবে। তবে এ বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে কোম্পানির পরিচালকদের পারিশ্রমিক বিষয়ক পলিসিটি যেন অবশ্যই কোম্পানির ঝুঁকি গ্রহণ কৌশল এবং মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। অধিকন্তু, সকল পরিচালকের পারিশ্রমিক অবশ্যই একই সমান হবে না। বরং এটি হতে হবে তাদের দক্ষতা, কাজের চাপ এবং দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সম্প্রতি পুনরুজ্জীবিত পিপলস লিজিং এর আদালত নির্ধারিত পরিচালকদের পারিশ্রমিক বিষয়ক নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। বিষয়টি এক্ষেত্রে প্রসঙ্গিক বলে উপস্থাপন করছি। ১৩ই জুলাই ,২০২১ এ এক রায়ে ঋণ জালিয়াতি, অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবতে বসা ‘পিপলস লিজিং’কে অবসায়নের পরিবর্তে পুনরুজ্জীবিত করতে দশ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। যাদের সকলেই স্বতন্ত্র পরিচালক! আদালতের আদেশে নবগঠিত পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পরিচালকসহ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সম্মানীও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতি পর্ষদ সভার জন্য সম্মানী হিসেবে চেয়ারম্যান পাবেন ৫০ হাজার টাকা। প্রতি বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) জন্য পাবেন ৩ লাখ টাকা। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কত পারিশ্রমিক পাবেন তা পরিচালনা পর্ষদকে নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে আদেশে। এছাড়া প্রতি পর্ষদ সভার জন্য সদস্যদের সম্মানী ধরা হয়েছে ২৫ হাজার টাকা এবং এজিএমে পাবেন ১ লাখ টাকা। পিপলস লিজিং এর পরিচালকদের সম্মানী বিষয়ে আদালতের উল্লিখিত আদেশ স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে তাদের দক্ষতা, কাজের চাপ এবং দায়িত্ব এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের পর্ষদ সভার জন্য সম্মানী নির্ধারণ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিরবই বলা চলে । ব্যাংক এবং বীমা কোম্পানিগুলো তাদের নিজ নিজ প্রাথমিক রেগুলেটরের নির্দেশনা মেনে চলেন। এক্ষেত্রে একজন ব্যাংক পরিচালক পর্ষদ সভা প্রতি সম্মানী হিসেবে আট হাজার টাকা পান এবং একজন বীমা কোম্পানি পরিচালক পর্ষদ সভা প্রতি সম্মানী হিসেবে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা পান। যার উপর আবার দশ শতাংশ হারে অগ্রীম আয়কর প্রদান করতে হয়। এর বাইরে পুঁজিবাজারে অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের ‘পরিমেল নিয়মাবলী’ তথা ‘আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন’ অনুযায়ী পর্ষদ সভার জন্য সম্মানী প্রদান করে। এটা সুস্পষ্ট যে বাংলাদেশে প্রচলিত কোম্পানি পরিচালকদের সম্মানীর পরিমাণ এতই অপ্রতুল যে তা তাদের দক্ষতা, কাজের চাপ এবং দায়িত্বের সাথে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
উন্নত দেশসমূহে পরিচালকদের মানোন্নয়ন বিষয়ে কাজ করতে রয়েছে ‘ইনস্টিটিউট অব ডিরেক্টরস’। রয়েছে ‘পরিচালকদের পারিশ্রমিক পলিসি’ বিষয়ক সুস্পষ্ট নিয়ম-নীতি।তাই, টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশেকেও উক্ত দ্বিভিদ বিষয়ে নজর দিতে হবে।টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনের স্বার্থে গড়ে তুলতে হবে টেকসই কর্পোরেট সংস্কৃতি । বাংলাদেশ ‘মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ বা এমডিজি অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে। সবাই পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে এসডিজি অর্জনও সম্ভব হবে। তবে এত বিশাল কাজ সম্পন্ন করতে হলে টেকসই কর্পোরেট সংস্কৃতির কোন বিকল্প নেই ।
লেখক: সহযোগী সদস্য, ইনস্টিটিউট অব চাটার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি);
ই-মেইল: csnoor.bd@gmail.com ।
মোবাইল : ০১৬১০-১২৩২২৩
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:16 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:57 AM |
Asr | 2:57 PM |
Magrib | 5:17 PM |
Isha | 6:38 PM |