আজ মঙ্গলবার | ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৮:৪৬
শরীয়তপুর প্রতিনিধি: চলছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ইতোমধ্যেই গত বুধবার প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ মে। ওইদিন শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায়ও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই উপজেলায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তথ্য গোপন করে মনোনয়নপত্র বৈধতা পাওয়ার। অভিযোগের আঙ্গুল উঠছে রিটার্নিং অফিসারের দিকেও।
জানা যায়, গত ৫ মে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ইচ্ছুক প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে যে, সেখানে নির্বাচনী বিধি মোতাবেক দুইজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিলকৃত হলফনামায় তাদের মামলা সংক্রান্ত কোনো সঠিক তথ্য উপস্থাপন করেন নাই। তথাপিও রিটার্নিং অফিসার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারফ হোসেন এবং জাকির হোসেন দুলালের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
কিন্তু আমাদের প্রতিনিধির তদন্তে উঠে এসেছে ভিন্নচিত্র। যেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারফ হোসেন তার হলফনামায় একাধিক মামলার তথ্য গোপন করেছেন। সেগুলো হলো (১) ২০০২ সালের মোহাম্মদপুর থানায় দন্ড বিধি ৩০২/৩৪ অনুযায়ী মামলা নং-৩৯/২০০২। (২) ২০০৬ সালের তেজগাঁও থানায় অস্ত্র আইনের ধারা ১৯ (ক) অনুযায়ী জি আর নং-৭৯৮/২০০৬। (৩) ২০০৪ সালের মিরপুর থানাতে দন্ড বিধি ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৫০৬ দন্ড বিধি অনুযায়ী জি আর নং- ৮২/২০০৪। (৪) ২০০৪ সালের সবুজবাগ থানাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এর ৯(৩) ধার অনুযায়ী জি আর নং-৪০২/২০০৪ মামলা।
অপর প্রার্থী জাকির হোসেন দুলালও তার হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করেছেন। ২০১৯ সালের গোসাইরহাট থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ (এ) অনুযায়ী এফআইআর -০৭/৩৫।
মোশারফ হোসেন ও জাকির হোসেন দুলালের মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করেছেন, যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৭ এর উপ-বিধি (৩) দফা (ঙ) এর পরিপন্থি। যেহেতু উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী মনোনয়নপত্রের সাথে হলফনামা দাখিলের বিধান রয়েছে এবং মোশারফ হোসেন ও জনাব জাকির হোসেন দুলাল তাদের হলফনামায় অসম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন, সেহেতু নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ হওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার।
এই ঘটনা প্রকাশের পর গোসাইরহাটে ভোটার ও অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
গোসাইরহাট উপজেলার একজন ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার আগেই তারা অবৈধ, তাদের কাছ থেকে কীভাবে গোসাইরহাটবাসীর উন্নয়ন হবে!’
আরও একজন ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এতগুলো মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থীদের মনোনয়নের বৈধতা অতিসত্ত্বর বাতিল করা হোক ও যোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই সুষ্ঠ ভোট অনুষ্ঠিত হোক।’
এছাড়াও সাধারণ মানুষের আলোচনায় সুষ্ঠু ভোট না হওয়ার শঙ্কা প্রকট হচ্ছে।
গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ‘আমার হলফনামায় মাত্র ১টি নিষ্পত্তিকৃত মামলার তথ্য না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনার আমার মনোনয়নপত্রটি স্থগিত করেছে। কিন্তু মোশারফ হোসেন ও জাকির হোসেন দুলাল একাধিক মামলার তথ্য গোপন করেও কিভাবে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধতা পায়?
’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি আশাকরি আগামী আপিল শুনানীর দিনে নির্বাচন কর্মকর্তা সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবেন।’
এব্যাপারে গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ পুষ্পেন দেবনাথ বলেন,আমাদের থানায় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যে কটা মামলা সিডিএমএসএ আছে তাই আমরা উল্লেখ করেছি অন্য থানায় মামলা সেটার বিষয় আমরা কিছু বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে রির্টানিং অফিসার জিয়াউর রহমান খলিফা বলেন, প্রার্থীর মামলা কয়টা আছে সে বিষয় আমাদের তদন্তের কোনো প্রয়োজন পরেনা, পুলিশ থানা থেকে যে তথ্য উল্লেখ করেছে সেটাই এখানে প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখ্য, গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন বৈধতার আপীলের শুনানী আগামী ১১ মে অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন নির্বাচন কমিশনার থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত দিবেন বলে প্রত্যাশা করছেন সাধারণ ভোটার ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য প্রার্থী।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:05 PM |
Asr | 3:07 PM |
Magrib | 5:27 PM |
Isha | 6:47 PM |