আজ শুক্রবার | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১০ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৭:২৭
বিডি দিনকাল ডেস্কঃ- জনগনকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে রিট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখের নতি তলবের বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ যে বিষয়টার(খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ) কথা বলা হয়েছে- এটা তো ফেইক। এভারকেয়ারের যে রিপোর্টের কথা বলা হয়ে্ছে এই ধরনের কোনো রিপোর্টই এভারকেয়ার করে নাই। যে তারিখটা বসিয়েছে তারা- এটা ফলসলি করা হয়েছে। যে কাগজটা তারা দিয়েছে যার উপরে আদালত একটা হুকুম দিয়েছে। এই হুমকটা আমি জানি না বিং এ ল‘ইয়ার.. একটা কিভাবে দিলেন?”
‘‘ দেশে তো রাজনীতি নেই। এখন উদ্দেশ্যই তাদের একটাই- এই ধরনের(জন্মদিন) ইস্যুগুলো তুলে এনে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা, ডায়ভার্ট করার চেষ্টা করা, মূল সমস্যা থেকে জনগনকে ভুল দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। আর কিছুই না। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এসব তারা করছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদলীয় শাসনে দেশ চলছে। এটা থেকে প্রমাণিত হয়- জুডিশিয়রি ইজ নট ফ্রি। জুডিশিয়ারির কিন্তু এটা আমলেই নেওয়া উচিত ছিলো না। দে শুড হেল বিন টোটালি রং।”
‘‘ যে ভদ্রলোক করেছেন সে তো পারসোনালি সংক্ষুব্ধ না। আমি যতটুক আইন বুঝি যে, রিটটা তথনই হতে পারে ইফ এনি ওয়ান ইজ পারসোনালি এফগ্রিভ। ব্যক্তিগতভাবে যদি সে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, নিজে সংক্ষুব্ধ হয় তখন হি কেন গো ফর এ রিট। এটা তা না। উনার জন্মদিনের ব্যাপারে কি আছে, না আছে এটা তো তাদের দায়িত্ব না।”
তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশে একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন- বুহলোকের কিন্তু জন্ম তারিখ আসল একটা আর সার্টিফিকেটে তারিখ আরেকটা আছে। কারণ হচ্ছে, বিশেষ করে আমাদের জেনারেশনের সময়ে তখন সঠিকভাবে বাবা-মায়ের জন্ম তারিখ মনে রাখতে পারতেন না-জন্ম কবে হয়েছে, ডায়েরি-টায়েরি ম্যানটেইন করতেন না। ফলে দুই রকম হতে পারে।”
‘‘ এটা কোনো দিন ইস্যু হতে পারে না। দিস ক্যান বি ইস্যু। হ্যাঁ এখন পার্টিকুলার একটা ডেটে কেউ জন্ম নিতে পারবে না- এটা একটা ঘোষণা দিয়ে দিলে তো হয়ে যায়। নো বডি ওইদিন …, হিসাব করে আপনাকে সন্তানের জন্মদানের কথা চিন্তা করতে হবে। এছাড়া তো উপায় নাই।”
গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরতে দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
‘এনআইডি স্বরাষ্ট্রে গেলে সুষ্ঠ নির্বাচন বিনষ্ট হবে’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয় পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলী ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অধীনে মন্ত্রণালয়।”
‘‘ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হলে তা স্বাধীন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নুন্যতম সম্ভাবনাটুকুক বিনষ্ট করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে এই ধরনের সিদ্ধান্ত হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলে তা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের নুন্যতম পরিসরকেও ধবংস করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে চিরতরে ধবংস করবে।”
অবিলম্বে এহেন কার্য্ক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
‘শেকড় আছে বলেই বিএনপি আছে’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ বিএনপির শেকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এতো নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু মাত্র এই দলের ‘ডিপ রুট’, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীর চলে গেছে বিএনপি।”
‘ঋণ নির্ভর অর্থনীতি’
তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশে এতো বেশি ঋণ নির্ভর হয়ে পড়ছে অর্থনীতি এবং এটা এখন শেষ সীমায় এসে পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত ১ যুগ যাবত সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উতপাদন খাত শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাংখিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।”
‘‘ একগুচ্ছ বৃহত মেগা প্রকল্প, আছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।”
সারাদেশের জেলায় স্কুল-বিদ্যালয়ের বিরাট বিরাট গেইট করার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা দেখবেন, বিভিন্ন স্কুলে বড় বড় গেইট তৈরি করা হচ্ছে। এটা কোনো অগ্র্রাধিকার হতে পারে না। ওই টাকা দিয়ে যদি দু্ইটা ক্লাস ঘর করে যেতে তাহলে বাচ্চারা ভালোভাবে পড়তে পারতো।”
‘‘ গেইট তৈরি করা হচ্ছে যা একটা আনপ্রোডাটিভ খাতে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে।গতকালই আপনাদের টিভিতে দেখলাম যে, স্থানীয় সরকারের যে মন্ত্রণালয়ে শুরুতে দেওয়ালে কাঠের সমস্ত কাজ করে পুরো দেওয়াটা ঢেকে দেয়া হয়েছে। এটা তো আনপ্রোডাটিভ। এই ব্যয়টা কেনো? আপনি দেখবেন প্রত্যেকখাতে আনপ্রোডাক্টিভ খাতে এতো ব্যয় বেড়েছে যার মূল্য দিতে হচ্ছে জনগনকে তাদের ট্যাক্সের টাকা থেকে।”
দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘ দেখুন দুর্নীতি কোন মাত্রায় গেছে যে, পাবনার মতো জেলা শহরের একটা কোম্পানির কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে ভ্যাটের জন্য। ব্যবসায়ীদের একটা নিরব কান্না আছে। এভাবে তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলছে।”
‘‘ আমরা একজন পরিচিত ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে কাস্টমস ডিপার্টমেন্ট থেকে। সে বলছে যে, এতো টাকা আমি কোত্থেকে দেবো? দিতে পারবো না। যেহেতু সে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুম দিতে পারে নাই তাকে সেজন্য ১১ কোটি টাকার ইনকাম ট্যাক্স ধরিয়ে দিয়েছে। পরে সে আপীল-টাপিল করে সেটা কমিয়ে এনেছে প্রায় এক কোটি টাকায়। ১১ কোটি আর ১ কোটি। এটা তো আমি একজনের কথা বললাম। দিস ইজ হেপেনিং এভরি হোয়ার, এভরি খাত।”
রিমান্ডে নিয়েও নির্যাতন না করার জন্য আলাদা অর্থ দিতে হয় বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
‘আমার কোনো ফেইসবুক একাউন্ট নেই’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমার ফেইসবুক, টুইটার এগুলোর রহস্য আমি খুব উদ্বিগ্ন। আমি অনেকবার বলেছি। আমি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চিঠি দিয়েছি, উকিল নোটিশ দিয়েছি। তারপরেও দেখি যে, আমার নামে বিভিন্ন একাউন্ট খোলা আছে।”
‘‘ আমরা যতদূর জানি যে, সার্ভিলেন্সে এই সমস্ত মিডিয়ায় যখন গোয়েন্দারা ঢুকে তখন তারা বিভিন্ন রকম তৈরি করে। এটা শোনা কথা। কোথায় যাবো বলেন? কোনো ফেইসবুক নেই। যেগুলো ফেইক। আমি নিজে একবার ব্বিৃতি দিয়ে বলেছি। আমি থানায় জিডি করেছি থানায়, আমি মামলা করেছি, উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে।”
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:06 PM |
Asr | 3:09 PM |
Magrib | 5:29 PM |
Isha | 6:49 PM |