আজ সোমবার | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১:১৬
জিয়াউর রহমানের মতো সৎ ব্যক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে সৃষ্টি হয়নি মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ বলেছেন, ৬ বছর রাষ্ট্রপরিচালনা করার পর দেখা গেল তার একটু জমি নেই বাংলাদেশে। ব্যাংকে কোনো টাকা পয়সা নাই। তার স্ত্রী,পুত্র ও পরিবারকে তিনি যেভাবে লালন-পালন করিয়েছেন সেরকম উদাহরণ খেলাফায়ে রাশেদীনের পর মুসলিম বিশ্বে আর দেখা যায়নি। তিনি একজন দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ নামে একটি রাজনৈতিক দর্শন উপহার দিয়েছে। তিনি একমাত্র রাষ্ট্রপতি টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ার বিভিন্ন জনপদে সাধারণ মানুষ তার কাছাকাছি যেতে পেরেছেন। যিনি সরাসরি তাদের সাথে কথা বলেছেন, করমর্দন করেছেন। এটি উপমহাদেশের রাজনীতিতে আগে কখনো দেখা যায়নি।
আজ শুক্রবার (১১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের রচিত ৭টি বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, জিয়াউর রহমানকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। পাকিস্তান মিলিটারি প্রশিক্ষণ একাডেমীতে তিনি আমার প্রশিক্ষক ছিলেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে তিনি আমার সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আমার ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে সিলেটের কানাইঘাট জয় করার পর ধীরে ধীরে আমরা সিলেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। সেই সময় কানাইঘাট টু সিলেট একটি লংমার্চ আমরা করেছিলাম।
আপনার মাও সেতুংয়ের লংমার্চে কথা শুনেছেন। দীর্ঘ সময় সেখানে লেগেছিল। বাট এই এক সপ্তাহব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত লগ্নে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল যে সিলেটের অভিমুখে লংমার্চ করছে সেটি আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের একটি স্কেচ ম্যাপ ছিল ৮ ফিট বাই ৮ ফিট। সেটার উপর একটি পলিথিন কাভার ছিল। ভোরে যখন সূর্য উঠে উঠে তখন এই ম্যাপটি বিছিয়ে জিয়াউর রহমান, ক্যাপ্টেন অলি আহমেদ ও আমি ঘুমাতাম। চোখ খুলে যখন আমার পাশে নিদ্রারত আমার ব্রিগেড কমান্ডার জিয়াউর রহমানকে দেখতাম তখন কখনো কল্পনাও করিনি আমার পাশের এই ব্যক্তির মাত্র চার বছরের মধ্যে দেশের সবচাইতে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হবেন। আল্লাহতালা সেটা ঠিক করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ তাকে সেই পজিশনে নিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের এই সহকর্মী বলেন, জিয়াউর রহমান নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি কখনো কোনো পদের জন্য লালায়িত ছিলেন না। আমি দেড় বছর তার একান্ত সচিব ছিলাম। তার সর্বোচ্চ স্বপ্ন ছিল তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান হবেন। তার কখনো রাজনৈতিক অভিলাশ ছিল না। কিন্তু এদেশের মানুষের প্রয়োজনে জনগণই তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মত সৎ ব্যক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে সৃষ্টি হয়নি।
হাফিজ বলেন, বাংলাদেশ বড় না ছোট, তার পারমাণবিক অস্ত্র আছে কিনা সে চিন্তা ভাবনা তার মাথায় ছিল না। তিনি ভেবেছেন এই ব্যর্থ জনপদে তিনিই নেতা, তাকে জনগণ রাষ্ট্রপতি বানিয়েছে দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য। এই জন্যই ভারত যখন পদ্মা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছে তিনি কোনো দেন-দরবার না করে সরাসরি জাতিসঙ্ঘের গিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক মিটিংয়ে বসতে ভারত বাধ্য হয়েছে। ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের যে চুক্তিটি হয়েছে সেটি হলো আজ পর্যন্ত সম্পাদিত কয়েকটি চুক্তির মধ্যে সর্বত্তোম চুক্তি। যেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্য পানি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের স্বার্থ তিনি কোনোদিন বিসর্জন দেননি।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবিত থাকা অবস্থায় কোনোদিন কাউকে ছোট করে কথা বলেননি। তিনি শেখ মজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু বলে সম্বোধন করে কথা বলেছেন। তার প্রশাংসা করে তিনি লিখেছেন ও তার পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তারপরও তার রেহাই নাই। কেনো তিনি সেই ঘোষণা দিল। যেই ঘোষণাটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী দিতে পারেনি সেটি দিয়ে তিনি শাসকগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হয়েছেন।
ঢাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক মন্ত্রী এহসানুল হক মিলন প্রমুখ।
Dhaka, Bangladesh রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:07 PM |
Asr | 3:10 PM |
Magrib | 5:31 PM |
Isha | 6:50 PM |