আজ বুধবার | ১৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১লা রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৯:১৩
মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃযুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ভাড়া দিতে না পারা ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দুর্দশায় পড়া ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। এবার এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিকভাবে চাপে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের লোকজনকে সরকারি সহায়তা দেওয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের মার্চ থেকে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের সব প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক রোচেল ওয়ালেনস্কি গত ৩০ জুন থেকে উচ্ছেদের স্থগিতাদেশ আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বাড়ি ভাড়া না দিতে পারলেও কোনো ভাড়াটিয়াকে মালিক পক্ষ উচ্ছেদ করতে পারবেন না। কোনো আদালতও এ সময়ে স্থগিতাদেশের যোগ্য কোনো ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের মামলা গ্রহণ করবেন না। সিডিসি আভাস দিয়েছে, এমন নির্দেশনা আরও সম্প্রসারণ করা হতে পারে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দুর্দশায় পড়া ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া এর আগে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল।
সিডিসির ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের স্থগিতাদেশে এক মাসের বর্ধিতকরণ ভাড়াটিয়াদের জন্য সুখবর হলেও বাড়ির মালিকদের জন্য এটি মোটেও সুখকর নয়। ইতিমধ্যেই বাড়ি মালিকদের একটি দল স্থগিতাদেশের অবসান ঘটাতে তদবির শুরু করেছে। এখন নতুন করে এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানোর কারণে তাঁদের ব্যবসায় ধস নামবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির মালিকদের অধিকাংশই ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি অনুসারে, এক কোটি ৭০ লাখ সম্পত্তিতে এসব বিনিয়োগকারীর প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ ইউনিট রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ৬০ লাখের বেশি ভাড়াটিয়া পরিবার এর পেছনে রয়েছে।
মিঃ জে নিউইয়র্কে তিনটি ভাড়া ইউনিটসহ একটি ছোট ভবনের মালিক। গত অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত সেগুলোর একটিতেও তিনি ভাড়া পাননি।
মিঃ জে বলেন, ‘আমার মর্টগেজ আছে, আমার সেই ভবনের মেরামত করার জন্য প্রচুর ব্যয় আছে, কিন্তু এই ভাড়াটিয়া উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞার কারণে আমি মূল ভাড়ার এক-তৃতীয়াংশ হারাচ্ছি।’
মিঃ জে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ভাড়াটিয়ারা এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি নন। তাঁরা কোনো সরকারি সহায়তা পেতে আবেদন করতেও রাজি নন।
প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল সহায়তার পেছনে ভাড়া এবং ইউটিলিটির জন্য রাজ্যগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। বাড়ির মালিকদের সাহায্য করার জন্য ভাড়াটিয়াদের অবশ্যই জড়িত থাকতে হবে। কিন্তু অনেক ভাড়াটিয়া তা করতে রাজি নন। এমনকি সরকারি সাহায্যের জন্য বাড়ির মালিক একা আবেদন করলে হবে না। ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আবেদন করলে ভাড়াটিয়াদের দেওয়া সরকারি প্রণোদনা বাড়ির মালিকেরা পেতে পারেন।
স্মল মাল্টিফ্যামিলি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিন হান্টার বলেন, উচ্ছেদ স্থগিতকরণ মহামারি নয়, ছোট বাড়ির মালিকদের একদম মেরে ফেলেছে।
ছোট ছোট বাড়ির মালিকদের সঙ্গে বড় করপোরেশনের মতো আচরণ না করে বরং ‘পে-চেক সুরক্ষা কর্মসূচি’র মতো সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে বাড়ির মালিকদের সংস্থা মনে করে।
করোনা মহামারির বিপর্যয় ঠেকাতে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ স্থগিতাদেশে বাড়ির মালিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ভাড়াটিয়ারা মাসের পর মাস ভাড়া দিচ্ছেন না। কিন্তু বাড়ির মালিকেরা গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল, হোল্ডিং ট্যাক্স, বাড়ির মালিকানার জন্য ঋণের সুদ—সবই পরিশোধ করে যাচ্ছেন।
এসব কারণে এখন ভাড়া খুঁজতে আসলে অনেকেই দরজা খুলছেন না। সব মিলে এ নিয়ে এক অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে এখন। বাড়ির মালিকেরা ভাড়াটিয়ার ইউনিট মেরামত করার জন্যও দায়বদ্ধ। তাই তাঁদের তা মেরামতও করে দিতে হচ্ছে। ভাড়া না পাওয়ায় অনেক ছোট বাড়ির মালিককে বাড়ি বিক্রি করে দিতে হবে বলে মালিকেরা জানিয়েছেন।
এদিকে নিউইয়র্কে বাড়ি ভাড়া দিতে না পারা ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
গত ৪ মে রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো কোভিড-১৯ জরুরি উচ্ছেদ ও পূর্বাভাস প্রতিরোধ আইন-২০২০ সম্প্রসারণে স্বাক্ষর করেছেন। এ নির্দেশনার ফলে ভাড়া না দিতে পারলেও আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কোনো আবাসিক ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ করা যাবে না।
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:20 AM |
Sunrise | 6:41 AM |
Zuhr | 12:02 PM |
Asr | 3:03 PM |
Magrib | 5:23 PM |
Isha | 6:44 PM |