আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:০২
আবুবকর সিদ্দিক জয়পুরহাট প্রতিনিধি ॥ জয়পুরহাট জেলা সদর, কালাই,আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল, ও পাঁচ বিবি উপজেলায় এবার সরিষা ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং দেশে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ ভরে সরিষা চাষ করেছেন। জেলার মাঠজুড়ে সরিষা ক্ষেত। মাঠে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়েছে এবার। কৃষকরা আশা করছেন ফলনে লাভবান হবেন। এতে করে কৃষকের স্বস্তি-ফিরে এসেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের যে দিক চোখ যাচ্ছে হলুদের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের গালিচা সাজিয়ে রেখেছে এক অপরূপ প্রকৃতি, মাঠে দুলছে সরিষা ফুল। দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। অনেকে সরিষা ফুলের প্রকৃতিতে সেলফিতে ব্যস্ত। চারিদিকে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত পুরো দিগন্ত, যেন বিস্তীর্ণ হলুদের রাজ্য। ভালো ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে স্বস্তির অভিব্যক্তি। বাজারে সরিষার চাহিদা থাকায় চাষিদের আগ্রহ বেড়ে গেছে। কৃষিসমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় দুই ফসলি জমিতে চাষ হচ্ছে তিন ফসল। দেশি জাতের পরিবর্তে আবাদ করেছেন উচ্চফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময়ও বেশি লাগতো, কৃষকরা লাভবান হতো না। বর্তমানে উচ্চফলনশীল জাত আসায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কম জীবনকালের বারি-১৪ জাতের সরিষা ৮০-৮৫ দিনেই ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় মেট্রিক টন। সরিষা চাষ করে ওই জমিতে নির্বিঘ্নে আবাদ করে চাষিরা। সরিষা ক্ষেতে বোরো চাষে সারও কম লাগে এবং ফলন ভালো হয়। কম খরচে বেশী লাভ হওয়ায় এবার জয়পুরহাট জেলায় সরিষার আবাদ বেশী হয়েছে। এই রবি মৌসুমে এই এলাকায় শুধু আলুর চাষই বেশী হতো, কিনÍু পরপর লোকসান হওয়ায় ,
জেলায় সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকরা। প্রনোদনা বাড়লে এ ফসলের আবাদ আরো বাড়বে বলে ধারণা কৃষকদের। এছাড়া এখানকার উৎপাদিত শরিষা দেশের তেলের চাহিদা পুরুনে রাখবে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা, এমনটি মনে করছেন জেলা কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলায় ১৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিশা চাষ করছেন চাষিরা। এবার ২০ হাজার টনেরও বেশী সরিশা পাওয়া যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। ধান চাষের পর জমি পতিত থাকে, পতিত জমিতে এ মৌসুমে সরিষা চাষ করেছে কৃষকরা। গতবার ১২ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করতে দেয়া হয়েছে পরামর্শ ও সরকারিভাবে প্রণোদনায় বীজ-সার।
পুরানাপৈল গ্রামের কৃষক সামসুদ্দিন, হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক ফেরদৌস, অঅশেকুর, কৃষক বলেন, ‘আগে একটি জমিতে শুধু ধান আবাদ করতাম। ধান আবাদ শেষে জমি পতিত থাকতো। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় ধান আবাদের পাশাপাশি মাঝখানের সময়টা সরিষা চাষ হচ্ছে।কেউ সাড়ে ৪ বিঘা কেউ ২ বিঘা, আবার কেউ ৫ বিঘা জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছে।’ হেলকুন্ডা গ্রামের মেছের আলী,ও কৃষক আরিফুর বলেন, ‘সরিষায় ভালো ফলন আশা করছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগবালই আক্রমণ হয় নাই। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এবার ৫ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ করেছি। কোনো ধরণের ক্ষতি না হলে লাভবান হতে পারবো।জেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ‘সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুই ফসলি জমিতে এখন তিন ফসল আবাদ করছে কৃষকরা।’
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, ‘এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষে উপযোগী। এতে করে এ এলাকায় আবাদ বাড়ছে। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষদেরও আগ্রহী হচ্ছে। কৃষকদের নানাভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আগামী বছর আবাদ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
রতন তেল কলের স্বত্বাধিকারী আসাদুজ্জামান রাজু বলেন এখন সরিষার তেল আবার আগের মত মানুষ খেতে শুরু করেছে। সয়াবিন তেলের মুল্য বেশি হওয়ায় সরিষার তেলে লোক ঝুকে পড়েছে। এখন বাজারে সরিষার মুল্য মন প্রতি ৪০০০ হাজার টাকা, তেলের মুল্য ২৩০ টাকা প্রতি কেজি খুচরা মুল্যে বিক্রি হচ্ছে। এবার সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় দাম কমে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |