আজ বৃহস্পতিবার | ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৯ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১২:২৮
টাকার সংকটে থাকা শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন সেবা বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে। এই পাঁচ ব্যাংক বছরখানেক ধরে বিধিবদ্ধ তারল্য রাখতে পারছে না। আগামী ২৬শে ডিসেম্বরের মধ্যে চলতি হিসাবের টাকার ঘাটতি পূরণ করতে বলেছে বাংলাদেশে ব্যাংক। তা না হলে এই ব্যাংকগুলোর লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
এসব ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের স্থিতি ঋণাত্মক। বিষয়টি বারবার অবহিত করার পরও ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি হিসাবের ঋণাত্মক স্থিতি সমন্বয়ের সময় বেঁধে দিয়েছে। আগামী ২০শে দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ রাখতে না পারলে লেনদেন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্লিয়ারিং পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাবে নির্ধারিত অর্থ রাখতে হয়। কিন্তু এই ৫ ব্যাংকের চলতি হিসাব গত এক বছর ধরে অর্থের ঘাটতিতে আছে। গত ২৮শে নভেম্বর এই পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) ২০ কার্যদিবসের মধ্যে টাকার ঘাটতি মেটাতে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন।
চিঠিতে বলা হয়, আপনার চলতি হিসাবের অর্থের পরিমাণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ঘাটতিতে আছে এবং এটি সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিষয়টি নিয়ে আপনাকে বারবার সতর্ক করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থের ঘাটতি সমন্বয় করতে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে সব ধরনের বা নির্দিষ্ট ক্লিয়ারিং প্লাটফর্মের লেনদেন থেকে নিষিদ্ধ করা হবে।
চিঠির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এমডি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি ব্যাংকগুলোকে জাতীয় ক্লিয়ারিং সিস্টেম থেকে নিষিদ্ধ করে, তাহলে তারা অবৈধ হয়ে যাবে। কারণ তারা কোনো আন্তঃব্যাংক লেনদেন করতে পারবে না।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ হাবিব হাসনাত চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে গণমাধ্যমকে জানান, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চলতি হিসাবে টাকা উদ্বৃত্ত আছে। এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মেয়ে মাইমুনা খানম গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান। টাকার ঘাটতি মেটাতে বন্ড কেনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে সংকট দেখা দিয়েছে, আমরাও সংকটে আছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দিতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ১৯৭২ এর ৩৬(১) ধারা অনুযায়ী, আমানতকারীদের সুরক্ষায় প্রতিটি ব্যাংকের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। বর্তমানে প্রচলতি ধারার ব্যাংকের জন্য এ হার ১৭ শতাংশ। আর শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংকের জন্য সাড়ে ৯ শতাংশ। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোকে সরকারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ বা এসএলআর হিসেবে সাড়ে ৫ শতাংশ এবং বিধিবদ্ধ নগদ জমা সংরক্ষণ বা সিআরআর হিসেবে ৪ শতাংশ নগদে রাখতে হয়। কোনো ব্যাংক যদি সিআরআর রাখতে না পারে তাহলে অসংরক্ষিত অংশের ওপর ৯ শতাংশ হারে দণ্ডসুদ দিতে হয়। আর এসএলআর রাখতে ব্যর্থ অংশের ওপর ৯.৭৫ শতাংশ হারে জরিমানা আরোপ হয়। কোনো ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে ৪২ দিন ব্যর্থ হলে পরে বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশের ৩৬(৫)(এ) অনুযায়ী প্রত্যেক পরিচালককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করতে হবে। এরপরও বিধিবদ্ধ জমা সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে ৩৬(৫)(বি) অনুযায়ী নতুন আমানত নেয়া বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, অনেক দিন ধরে এসব ব্যাংক সিআরআর, এসএলআর রাখতে পারছে না। এসএলআরের জন্য এসব ব্যাংকের কাছে যেসব ট্রেজারি বিল ও বন্ড ছিল তা বন্ধক রেখে ধার করা টাকা খরচ করে ফেলেছে। নতুন করে ধার নেয়ার কোনো উপায় উপকরণ নেই। কেবল আগে নেয়া ধারের মেয়াদ বাড়াচ্ছে।
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:05 PM |
Asr | 3:07 PM |
Magrib | 5:28 PM |
Isha | 6:48 PM |