আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:২৪
ডেস্ক:-গত ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখ শনিবার, বিকাল ৫টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য যথাক্রমে-
১. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন
২. ব্যরিষ্টার মওদুদ আহমেদ
৩. ব্যরিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার
৪. মির্জা আব্বাস
৫. বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়
৬. ড. আব্দুল মঈন খান
৭. নজরুল ইসলাম খান
৮. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
৯. আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
১০. বেগম সেলিমা রহমান
১১. ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু
সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়:-
১। সম্প্রতি পাবনা এবং গতকাল ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ এর জাতীয় সংসদের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং সরকার দলীয় সন্ত্রাসী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মতই ত্রাস সৃষ্টি করে এবং কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে সীল মেরে বিরোধী দলের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দিয়ে ভোট ছিনতাই করে। এবং নির্বাচন কমিশন নির্বীকার দর্শকের ভূমিকা পালন করে। রিটানিং অফিসার ধানের শীষের প্রার্থীদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি। বিনা ভোটে স্বঘোষিত সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির কৌশলে জনগণকে আবারও প্রতারিত করল। অযোগ্য এবং সরকারের বশংবদ নির্বাচন কমিশন ক্রীড়নক এর থেকে এই ভূমিকা পালন করছে। সুপরিকল্পিত ভাবে তারা বাংলাদেশের জনগণকে ভোটের অধিকার বঞ্ছিত করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই অবৈধ সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে একদিকে নজীর বিহীন দূর্নীতি ও দুঃশাসন অন্যদিকে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে ফ্যসিস্ট রাজত্ব কায়েম করেছে।
পাবনা- ৪ এর নির্বাচনের ২ দিন আগে থেকেই নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়ে বিরোধী দলের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হয়রানী ও ভীতি প্রদর্শন করেছে এবং নির্বাচনের দিনে ভোট কেন্দ্রগুলো দখল করে ধানের শীষের এজেন্টদের মার ধর করে বের করে জাল ভোট দিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন ইভিএম দিয়ে ভূয়া ফলাফল তৈরী করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।
একই ভাবে নওগাঁ -৬ উপ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়। এখানে আওয়ামী সন্ত্রাসী, পুলিশ, বিডিআর ও র্যাব যৌথ ভাবে ধানের শীষের ভোটার ও কর্মীদের কেন্দ্র থেকে ত্রাস সৃষ্টি করে বের করে দেয়। নির্বাচন কর্মকর্তাদের সহায়তায় কাল্পনিক ফলাফল তৈরী করে।
ঢাকা-৫ ডেমরা এর ব্যতিক্রম নয়। নির্বাচনী প্রচারনায় প্রায় প্রতিদিন আওয়ামী প্রার্থী সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, এমন কি প্রচারের শেষ দিনে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর পথ সভায় হামলা করে। ভোটের দিন সকাল থেকেই ভোট কেন্দ্র গুলো থেকে এজেন্টদের জোর করে বের করে দেয়। ১৬২টি কেন্দ্র থেকে সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যেই সব এজেন্টদের বের করে দেয় এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয় না। এরপর একইভাবে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়ার পরেই নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা তো নেন নি উপরন্ত প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা নিলর্জ্জের মতো বলেন যে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।
বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য, যে জনগণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য ৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলেন সেই জনগণ আজ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্ছিত।
আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি এবং সেই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবী জানাচ্ছি।
এই সব উপ-নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনের দাবীতে আগামী ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার সারা দেশে মহানগর ও জেলা সদরে এবং ২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার থানা/উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ মানববন্ধনের কর্মসূচী দেওয়া হলো।
২। চাল, ডাল, পেয়াজ, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবি মানুষকে চরম বিপাকে ফেলেছে। সরকারী দলের মদদপুষ্ট এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও সরকারী ব্যবস্থপনার ব্যর্থতায় ও দূর্নীতির কারনে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মসংস্থানের অভাব ও পরিস্থিতিকে আরও জটলা করে ফেলেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির রাশ টেনে ধরতে সরকারের ব্যর্থতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
৩। সারা দেশ ব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি প্রতিরোধে সরকারের চরম ব্যর্থতা সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযোজনÑ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় নয়। ধর্ষকদের সরকারী দলের প্রশ্রয় অথবা ধর্ষকের সরকারী দলের সদস্য বলে কোনও বিচার হয় না। গতকাল ধর্ষন বিরোধী লংমার্চ এর আন্দোলনকারীদের ওপর ফেনীতে পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা প্রমান করেছে যে, পুলিশ এর গতকালের সারাদেশে ধর্ষন বিরোধী সমাবেশ শুধুমাত্র লোক দেখানো। প্রকৃত পক্ষে সরকারের সদিচ্ছার অভাব এবং ব্যর্থতাই ধর্ষনের মত অপরাধ বৃদ্ধি করে। এর মূল কারন হচ্ছে গণতন্ত্রহীন সংস্কৃতি Ñ জবাব দিহিতার অভাব এবং একনায়কতন্ত্রের ভয়াবহতা। দ্রæত বিচারের মাধ্যমে বিচার সুনিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়।
৪। সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে অপপ্রচার করলে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক বওে মনে করা হয়। এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি সংবিধান বিরোধী। মৌলিক যে অধিকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা এটা তার বিরোধী। দেশে গণতন্ত্রবিহীন একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অপ প্রায়স। সরকার ইতিমধ্যে আরও কয়েকটি আইন বিধান ও বিজ্ঞপ্তি জারী করেছে যা সংবিধান সম্মত মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি। অবিলম্বে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার জন্য আহŸান জানানো হচ্ছে।
৫। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজার শারোদীয় শুভেচ্ছা জানানো হয়। আনন্দমুখর পরিবেশে এই ধর্মীয় উৎসব পালনের সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহŸান জানানো হয়।
৬। কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক কর্যক্রমের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মোশতাক হোসেন।
৭। সভা শেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মহাসচিব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |