আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৩৫
মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম : উলিপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত মহান জাতীয় সংসদের ২৭ কুড়িগ্রাম-৩ আসন। এই আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা এলাকায় নির্বাচনী গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনাও বাড়ছে। কুড়িগ্রাম-৩ আসনটি বরাবরেই জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক হিসেবে বিবেচিত হলেও বার বার ভাড়াটিয়া প্রার্থী এবং এলাকায় দীর্ঘ সময়ে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে না ওঠায় বিপাকে পড়েছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির বিপুলসংখ্যক ‘ভোটব্যাংক’ থাকায় দলটির প্রার্থীর বিপরীতে সুবিধা করতে পারেননি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তবে সাংগঠনিকভাবে জাপা আর আগের জায়গায় নেই। ২০১৮ সালে সে সুবিধা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বর্তমানে এ দলটিতেও আধিপত্য নিয়ে কোন্দল চলছে। ভোটারদের ধারণা, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর সুযোগ নিতে পারে বিএনপি অথবা জাপায় না থাকলেও আলোচনায় আছেন সাবেক এমপি আক্কাছ আলী সরকার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দেওয়া এ নেতা দলটির হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে পারেন বলে অনেকের ধারনা।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ভোটার ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার ভোটব্যাংকও কিছুটা হালকা হয়েছে। ফলে একক প্রার্থী দিয়ে দলটির জয়ী হওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে জোট বাঁধতে হবে সমমনা কোনো দলের সঙ্গে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এ কে এম মাঈদুল ইসলামকে হারিয়ে সংসদ সদস্য (এমপি) হন রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরে আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে এরশাদের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক লালু এমপি হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এ কে এম মাঈদুল ইসলামকে হারিয়ে বিজয়ী হন জাপার প্রার্থী মাওঃ মতিয়ার রহমান। কিন্তু ২০০৮ সালে দল বদলে জাপার প্রার্থী হয়ে আসনটিতে এমপি হন এ কে এম মাঈদুল ইসলাম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন না। ২০১৮ সালে মাঈদুল ইসলাম মারা গেলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের এম এ মতিনকে হারিয়ে জয়ী হন জাপার প্রার্থী অধ্যাপক আক্কাছ আলী সরকার। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র চার মাস। একই বছরের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর সে নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন অধ্যাপক আক্কাছ আলী সরকার। নির্বাচনে বিএনপির তাসভীর উল ইসলামকে হারিয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক এম এ মতিন। আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অধ্যাপক এম এ মতিন। অন্যদের মধ্যে আছেন উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু, সংগঠনের সাবেক সভাপতি মতি শিউলি ও কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে। তবে ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ নেতা-কর্মীরা যেকোন বিপদে-আপদে তার সহযোগিতা নিয়ে থাকেন বলে অনেকের ধারণা। তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থী হলে নির্বাচনে বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত হবে বলে তার সমর্থকদের দাবী।
সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী উলিপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু জানায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে এলাকায় গণসংযোগের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন দিলে ইনশাআল্লাহ সাধারণ জনগণের ভোটে আবারও নেত্রীকে এই আসনটি উপহার দিতে পারবো বলে আশাবাদী। কারণ সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতা-কর্মী আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়। উন্নয়নের জন্য সবার প্রত্যাশা পুরণের লক্ষে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
এদিকে জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন সংগঠনের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জেবুন্নেসা রহমান টুম্পা, উপজেলা জাপার আহ্বায়ক আতিয়ার রহমান ও যুগ্ম আহ্বায়ক এম কফিল উদ্দিন। তাঁরা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ রাখছেন। দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, আসনটি বরাবরই জাতীয় পার্টির ছিল। ভবিষ্যতেও এলাকার সাধারণ ভোটাররা জাপা প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী জেবুন্নেসা রহমান টুম্পা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আবারও জাতীয় পার্টি এ আসনে জয়ী হবে। নির্বাচিত হলে এলাকায় নতুন শিল্পাঞ্চল তৈরির পাশাপাশি উলিপুরকে বিনিয়োগ বান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলবেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি তাসভীর উল ইসলাম ও রংপুর বিভাগীয় বিএনপি’র সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক। মাঝে মধ্যেই এলাকায় এসে তাঁরা জনসংযোগ করছেন।
তাসভীর উল ইসলাম বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে মানুষ বিএনপিকেই জয়ী করবে।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |