- প্রচ্ছদ
-
- অপরাধ
- নওগাঁর সাপাহারে কৃষক রবিউল হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকীর অভিযোগ
নওগাঁর সাপাহারে কৃষক রবিউল হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকীর অভিযোগ
আতংকিত নিহতের পরিবার
প্রকাশ: ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ৩:২০ অপরাহ্ণ
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :- নওগাঁর সাপাহার উপজেলার তিলনী গ্রামের কৃষক রবিউল হত্যা মামলার আসামীদের হুমকীর মুখে নিহতের পরিবার পরিজন চরম আতংকিত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য যে গত ৬ই জানুয়ারী সকাল ৭ টার দিকে উপজেলার পাতাড়ী ইউনিয়নের তিলনী গ্রামে অবস্থিত জৈনক মোস্তফার মুদী দোকানের সামনের রাস্তার উপর জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লুৎফর ও আমজাদ আলীর নেতৃত্বে একদল লাঠিয়াল কৃষক রবিউল আলম কে লোহার রড ও হাসুয়া দ্বারা নির্মম ভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে স্থানীয় লোকজন মুর্মুর্ষ অবস্থায় রবিউলকে উদ্ধার করে তার জরুরী চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন দুপুরে রবিউল আলম এর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত রবিউল আলমের ছেলে রায়হান কবির বাদী হয়ে ঘটনার মুলহোতা লুৎফর রহমান সাপাটু ও আমজাদ আলী সহ জড়িত ২১জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ১নং আসামী উপজেলার পাতাড়ী গ্রামের এসলাম আলীর ছেলে লুৎফর রহমান ওরফে সাপাটু (৪০) ও তার ভাই আব্দুস সাত্তার (৩৫) আশ্রয়দাতা সহযোগী তিলনী গ্রামের আমজাদ আলী (৬০) ও তার ছেলে জসিম উদ্দীন (২৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আটককৃত আসামীগণ বর্তমানে নওগাঁ জেল হাজতে রয়েছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সরজেমিনে তথ্য অনুসন্ধানে ওই গ্রামে গেলে নিহত রবিউল এর কলেজ পড়–য়া মেয়ে দুলালী খাতুন এ প্রতিবেদক কে জানান যে ঘটনার পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন মামলা তুলে নিতে তাদের কে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। আসামীগণ জামিনে এসে আবার তাদের পরিবারের লোকজনকে খুন জখম করার হুমকী দিচ্ছে। পলাতক আসামী আব্দুল খালেক মোবাইলে নিহতের আত্মীয় স্বজনকে মামলা আপোষ মিমংসার হুমকী দিচ্ছে। আপোষ না করলে অনুরুপ হত্যা কান্ড ঘটিয়ে তারা স্ব- পরিবারে ভারতে পালিয়ে যাবে। আসামীদের এ ধরনের হুমকীর কারনে মামলার বাদী রায়হান কবির ভয়ে গ্রাম ছেড়ে উপজেলা সদরে অবস্থান করছেন। দুলালী আরও জানান যে চলতি মৌসুমে বোরো ধানরে জমিতে আসামীদের আত্মীয় স্বজনগণ গভীর নলকুপ থেকে পানি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এছাড়া আটক আসামী আমজাদ আলীর স্ত্রী বিলকিস বেগম তার ভাই ভাতিজা আত্মিয় স্বজনদের নিয়ে বাদীর জমির সরিষা ফসল তুলে নেয়ার হুমকী দিয়েছে। মামলার আসামীরা অন্যত্র পালিয়ে থাকলেও প্রায় রাতে তারা নিজ নিজ বাড়িতে আসছে। তারা যে কোন সময় আবার অনুরুপ ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে বলেও নিহতরে মেয়ে দুলালী আশংকা করছেন। নিহত রবিউলের বৃদ্ধ পিতা আব্দুল হক ও মাতা ঘটনার পর থেকে নির্বাক হয়ে শুধু অঝোরে কাঁদছেন। প্রকাশ্য দিবালোকে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া প্রতিপক্ষের লাঠিয়াল দ্বারা সংগঠিত নির্মম ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে নিহতরে স্ত্রী সন্তান পরিবার পরিজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এক মাত্র কৃষক রবিউলের উপার্জনের উপর নির্ভর করে পরিবার চলতো। ছেলে রায়হান কবির ও মেয়ে দুলালী সাপাহার সরকারী ডিগ্রী কলেজে অনার্স এ পড়াশোনা করে পিতার অবর্তমানে তাদের ভাগ্য বর্তমানে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । তারা তাদের পিতার হত্যাকারীদের বিচার ও কঠোর শাস্তি দেখতে চান। সেই সাথে তাদের পরিবার পরিজনের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এবিষয়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন ঘটনার সাথে জড়িত অবশিষ্ট আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাদীর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সদা তৎপর রয়েছে।
Please follow and like us:
20 20