আজ মঙ্গলবার | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ২:২১
বিশেষ প্রতিনিধি: সৌদি আরব, ওমানসহ মধ্যেপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে নারী পাঠিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতনসহ নারী পাচারের অভিযোগ উঠেছে রিক্রুর্টি এজেন্সি এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-১১৬৬) এর বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরা নারী ভূক্তভোগীরা এমন অভিযোগ করেন। কেউ কেউ এমনও অভিযোগ করেছেন যে তাদেরকে সেখানে বিক্রি করে দিয়েছেন এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এমনকি বিদেশে নির্যাতনের সময় বা সমস্যার সময় এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সাথে যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি ভূক্তভোগীরা। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এমনি নানা অভিযোগের পাহাড় রয়েছে এজেন্সিটির প্রতি। ইতোমধ্যে সৌদি আরবে বাংলাদেশে ১৪ বছরের কিশোরী কুলসুমকে ২৬ বছর দেখিয়ে হত্যার দায়ে ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২০ র্যাবের অভিযান চালিয়ে সিলগালা করেন রিক্রুটিং এজেন্সি এম.এইচ ট্রেড ইন্টার ন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানটি এবং মানব পাচারের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব। মকবুল বর্তমানে জামিনে আছেন। অপরদিকে অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সি এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও পাঁচ নারী। এমন পাঁচ মৃত নারীর মধ্যে আত্মহতা ২, দূর্ঘটনায় মৃত্যু ২ আর স্ট্রোক ১ জন। মৃত নারীরা হলেন: জুয়েনা বেগম, রশনারী বেগম, মোমেনা বেগম, নিপা দেবনাথ ও সুফিয়া বেগম। দেশে ফেরা নারীদের অভিযোগ: এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে স্যেদি আরব গিয়ে চম্পা (৩২) গত নভেম্বর মাসে মানসিক ভারসাম্য হাদিয়ে দেশে ফিরছেন। পরিবারের অভিযোগ চম্পা সৌদি আরব যাওয়ার পর থেকে নিয়োগকর্তা (কফিল) কতৃক নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন কিন্তু পরিবার রিক্রটিং এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করেও কোন সমাধান পায়নি। চম্পার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। অপরদিকে সৌদি থেকে একুই ভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সেনামগঞ্জ জেলার ফাতেমা নামের আরেক নারী দেশে ফিরেন গত বছর। গত বছরের ২ নভেম্বর জর্ডন থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফিরেছেন আকলিমা খাতুন (৩৪)। আকলিমাকে ২০১৯ সনের জুলাই মাসে রিক্রুটিং এজেন্সি এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল জর্ডন পাঠান। সেখান থেকে ১লা নভেম্বর রাত ১১.৩০ মিনিটে মানসিক অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরত আসেন। আকলিমার বাড়ি পাবনা জেলার চাটমহর উপজেলায় আবার চার মাসের মেয়ে সন্তান নিয়ে ওমান থেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হন সাথী নামের এক নারী গৃহকর্মী। গত ২৪ ফেব্রæয়ারী বুধবার সকাল ১০টায় সালামএয়ার (ওএমএস ৩৯৭) বিমান যোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। সাথী আক্তার ২০১৮ সনের ১০ জুন রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে ওমান পাঠান। ওমানে গৃহকর্মী সাথী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। সাথীর বাড়ি লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলা। তানিয়া আক্তার বয়স ২০ বছর ২০১৮ সনের ১৭ এপ্রিল রিক্রুটিং এজেন্সি এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে পাড়ি জমিয়েছিলেন স্বপ্নের দেশ সুদুর সৌদি আরবে । সৌদি আরব রিয়াদ বিমান বন্দর থেকে সে দেশে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সি প্রতিনিধি রিসিভ করে তাদের অফিসে নিয়ে যায়। এরপর একটি বাসাবাড়ীতে কাজের জন্য নিয়ে যায়। সে বাসাতে থাকা অবস্থায় তানিয়া তার স্বামী মোঃ রাসেলকে ফোনে জানান সেখানে তাকে নির্যাতন করছে। এখবর পাওয়ার পর রাসেল রিক্রুটিং এজেন্সিতে যোগাযোগ করলে এজেন্সি তার অভিযোগ না শুনে রাসেলকে ফোন করতে বলেন। তখন তানিয়ে ফোনে বলেন, “বাপে পুতে একলগে সুইতে চাই, আমি নাগেলে আমাকে মারে” এই ফোন রেকর্ডটি রাসেল রেখে দেন। তানিয়া সেখানে কাজ করতে না চাইলে রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধি তানিয়ার উপর নির্যাতন করেন বলে রাসেল জানান। নির্যাতনের একপর্যায়ে তারা তানিয়োর পা ভেঙ্গে ফেলে। এরপর তানিয়া পুলিশের সহযোগীতার সৌদি আরবের হায়েল জেলার কিংখালিদ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সেখানে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধিরা হাসপাতাল থেকে তানিয়াকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকদিন থেকে সেখানে যান। সৌদি আরবের হাসপাতাল থেকে ২০১৯ সনের ২রা জুন এয়ার এরাবিয়া বিমান যোগে পা ভাঙ্গা অবস্থায় তানিয়া দেশে ফিরে আসেন। এমনি নানা অভিযোগ নিয়ে দেশে ফিরেছেন রেহানা-পিরোজপুর, পারভিন-ফরিদপুর, মিতু আক্তার-ঢাকা, রোনা আক্তার-কিশোরগঞ্জ, রজিনা আক্তার-হবিগঞ্জ, রমিনা বেগম-ঢাকা, বেবী-বাঘেরহাট, রাইশা বেগম-পটুয়াখালী, কমলা-মানিকগঞ্জ, মেহনাজ বেগম-গাজিপুর। ভুক্তভোগী নারীরা ন্যায় বিচারসহ তাদের ক্ষতিপূরণ চাই।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |