আজ মঙ্গলবার | ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৬:০০
বিডি দিনকাল ডেস্ক : আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন আমীর খসরু মাহুমদ চৌধুরী। এই নীতি ক্ষমতাসীনদের ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে বড় ধরনের ‘সিগন্যাল’ বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক এরকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ভোট রিগিং হচ্ছে, ভোটের দিন ছাড়াও প্রতিদিন ভোট রিগিং হয় বাংলাদেশে ….। এটা বন্ধ করার জন্য আমরা স্বাগত জানাই তাদের যে পদক্ষেপকে। এখানে যাদের কথা বলেছে, একেবারে সরাসরি যাদের কথা বলেছে এবং তাদেরকে যে ম্যানশন করেছে- এটা একটা বড় পদক্ষেপ।”
‘‘ এটা তাদের জন্য বড় ম্যাসেজ। এই ম্যাসেজ না নিয়ে আবারো যদি বাংলাদেশের ভোটচুরির প্রক্রিয়ায় তারা যদি অ্যাবহতভাবে কাজ করতে থাকে তাহলে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে তাদের চিন্তা করা দরকার।”
কেনো স্বাগত জানাচ্ছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করে আমি খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে। আমরা এটাকে(যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি) ওয়েলকাম করছি এই কারণে যে, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের এই মুহুর্তে মানুষের যে শঙ্কা নির্বাচনকে নিয়ে, অন্তত এই ধরনের একটি পদক্ষেপ আমি মনে করি আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”
‘‘ এটার মাধ্যমে যে সব কিছু হবে তা না কিন্তু এটা একটি সিগন্যাল, একটা ম্যাসেজ যে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না, বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে, জীবনের নিরাপত্তার শঙ্কার মধ্যে আছে। প্রতিনিয়ত এই যাদের কথা(ভিসা নীতিতে) উল্লেখ করেছে এই লোকগুলো, এই সংস্থাগুলো বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার সাথে এরা জড়িত এবং যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ এই স্টেটমেন্টটা কিন্তু কান্ট্রি স্পেসিফিক-বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের সংগঠনগুলোকে স্পেসিফিক বলেছে, এটা বাংলাদেশের ব্যক্তিগুলোকে স্পেসিফিক বলেছে। এটা একেবারে কম্প্রেহেনসিভলি যারা যারা নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে দখল করার জন্য, ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য … যত ধরনের সংগঠন-ব্যক্তি এবং দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বলেছে … সরাসরি তারা এডরেস করেছে।”
‘‘ এরমধ্যে তারা বিচার বিভাগের কথা বলেছে, সাংবাদিকদের কথা বলেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা বলেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছে…যারাই ভোট চুরির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবে সবার প্রতি এটা যুক্তরাষ্ট্র এ্যাপ্লাই করবে।”
বুধবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের এই পদক্ষেপ।
বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে এই নীতি ঘোষণা করেছেন তিনি।
তার ভাষ্যে, এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে।”
র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞার দেড় বছর পর ভিসা নিয়ে ওয়াশিংটনের নতুন নীতির ঘোষণা এল।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি বিএনপির জন্য সফলতা কিনা প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, ‘‘ এটা সফলতা বিষয় না। সফলতা হবে বাংলাদেশের মানুষ যেদিন ভোট প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের সরকার নির্বাচিত করতে পারবে সেদিন হবে বাংলাদেশের জনগনের সফলতা।”
‘‘সেই উদ্দেশ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপের মধ্যে এটা (যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নীতি) হয়ত ভালো পদক্ষেপ। দেশবাসী এটা সাদরে গ্রহন করেছে। এটার মাধ্যমে তারা আশা করছে যারা ভোট চুরির সাথে এখন থেকে জড়িত হয়ে গেছে সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হোক, সেটা গণমাধ্যমে হোক, সেটা সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে হোক … সকলের প্রতি এটা একটা পরিস্কার বার্তা।”
এই ভিসা নীতির ঘোষণা দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, বাংলাদেশে মানবাধিকার, বাংলাদেশে আইনের শাসন, জনগনের নিরাপত্তা ইত্যাদি সব … এই যে মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা একটা একটা পদক্ষেপ।”
‘‘ অনেকগুলো পদক্ষেপ এখানে নিতে হবে যাতে করে তারা(আওয়ামী লীগ সরকার) আবারো ভোট চুরি করে দেশের ক্ষমতা দখল করতে না পারে।”
আমি খসরু অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ অলরেডি ভোট চুরি চলছে। এই যে বিএনপির ৪০ লক্ষ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-এটা কি ভোট চুরি না, মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে-এটা কি ভোট চুরি না, এ যে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুলি করছে, গ্রেফতার করছে-এটা কি ভোট চুরি না।ভোট চুরি চলছে, গণহত্যা চলছে।”
‘‘ মানুষকে প্রতিদিন অত্যাচার করা হচ্ছে। এটাকে মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে।”
সরকারি দল যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন নয়, বিএনপি কি উদ্বিগ্ন প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, ‘‘ তারা(সরকার) উদ্বিগ্ন না হলে ভালো কথা। তাহলে তাদেরকে(সরকার) বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা এগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না দিলে তাদেরকে উদ্বিগ্ন হতে হবে।
‘‘ মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দিয়ে আবার যদি মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকবে।
গাজীপুরের সিটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ যেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, লেভেল প্লেয়িং, ফিল্ড নাই… এই গাজীপুরে সামান্য একজন প্রাক্তন মেয়রকে(জাহাঙ্গীর আলম) তারা সহ্য করতে পারতেছে না। তাকে নির্বাচন করতে তারা দেয়নি। লোকজন ভোট কাকে দেবে? ভোটের উপর কোনো আস্থা আছে?”
‘‘ সুতরাং সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে সেখানে একটা নিরপেক্ষ সরকার যদি ক্ষমতা না নেয় তাহলে এটা( ভোট চুরি) অব্যাহত থাকবে এবং এই যে, অ্যামেরিকানরা যে ভিসা দেবে না বলেছে এসব বিষয় মাথায় রেখেই তো বলেছে। কারণ বাংলাদেশে প্রত্যকদিন ভোট রিগিং চলছে।”
এ্ই সময়ে বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যাামা ওবায়েদ, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু ও মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাসায় একটি বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Dhaka, Bangladesh মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:22 AM |
Sunrise | 6:42 AM |
Zuhr | 12:05 PM |
Asr | 3:07 PM |
Magrib | 5:27 PM |
Isha | 6:47 PM |