নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গত ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের মোবাইল ফোনের স্ট্যাটাস নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আপনি উক্ত কলেজের একজন শিক্ষক ও ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দেখা যায় আপনার উপস্থিতিতে উক্ত কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করা হয়। যাহা নিন্দনীয়, শিক্ষক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল।
এতে আরো বলা হয়, ‘বিভিন্ন প্রকার পত্র-পত্রিকায় ও মিডিয়ায় আপনাকে জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না। আমরা মনে করি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।’ নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সভাপতি অবর্তমানে সহ-সভাপতি মশিয়ার রহমান দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী শনিবার (২ জুলাই) নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। অপরদিকে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত টিমের প্রতিবেদনও শনিবার নির্ধারণ করেছে।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে ভারতের সদ্য সাবেক বিজিবি নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে স্ট্যাটাস দেন। এরপর ১৮ জুন সকালে কলেজে আসলে তার বন্ধুরা তাকে পোস্টটি মুছে ফেলতে বলেন। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকেও জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন আহত হন। ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতারমালা পরিয়ে পুলিশ হাতে তুলে দেওয়া হয়।