আজ মঙ্গলবার | ১৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:০২
এসএম রুবেলঃ- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সারা বছরই কার্যত মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন জীবন কাটান তারা। তার ওপর বর্ষা মৌসুমের চার মাস থাকেন পানিবন্দি। পদ্মার ছোট-বড় ২৫টি চরের এসব মানুষ মানবেতর জীবন কাটান। অন্তত দুই ঘণ্টা লাগে নদী পাড়ি দিতেই। ভরসা কেবল ট্রলার ও নৌকা। অসুখ-বিসুখ হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা বা জেলা সদরের হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে পথেই নিভে যায় জীবনপ্রদীপ।
এই পরিস্থিতেতে চরবাসীদের আশার আলো দেখিয়েছিল নৌ অ্যাম্বুলেন্স। ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট ঘটা করে পাঁকা ইউনিয়নের পদ্মার বোগলাউড়ি ঘাটে নৌ অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় এই অ্যাম্বুলেন্স পেয়েছিল চরবাসী। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা ছিল দ্রুতগতির এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় চরবাসীর। দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়েই ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। সেবাবঞ্চিত হচ্ছিলেন চরবাসী।
বুধবার (০৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ওপারের নবধূকে আনতে পাঁকা ইউনিয়নে যাচ্ছিলেন বরসহ স্বজনরা। ওপারের আলীমনগর ঘাটে পৌঁছার পর বৃষ্টির কবলে পড়লে তারা আশ্রয় নেন পদ্মাপাড়ের অস্থায়ী ছাউনিতে। সেই ছাউনিতে বজ্রপাত আঘাত হানে। তৈরি হয় বিভীষিকাময় পরিস্থিতির। দ্রুত হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু কঠিন সেই সময়ে পাড়ে নেই সেই নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তখনও ভরসা নৌকা। এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় মাঝিরা নিজেদের নৌকায় হতাহতদের পদ্মার এ পারে পৌঁছে দেন।
নৌ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাপনায় দায়িত্ব ছিল পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের হাতে। ওই সময় নৌ অ্যাম্বুলেন্স কোথায় ছিল জানতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীনের মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায়নি।
তবে পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রেজাউল ইসলাম জানান,ওই সময় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি পদ্মার বোগলাউড়ি ঘাটেই ছিল।
সেটি সচল ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান,গত ১ জুলাই তিনি এই ইউনিয়নে যোগদান করেছেন। ওই সময় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে পদ্মার ঘাটে পড়ে ছিল। গত ১০ জুলাই ঢাকা থেকে মেকানিক এনে সেটি মেরামত করা হয়েছে। ঈদের পর নৌ অ্যাম্বুলেন্সে চেপে চর এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। তবে বজ্রপাতে হতাহতদের বহনের তথ্য তার কাছে এই মুহূর্তে নেই।
জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়রা খান জানান,নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দেখভালের দায়িত্ব পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ওপর ন্যাস্ত। সেটি কীভাবে ব্যবহার হবে তা দেখবে ইউনিয়ন পরিষদ।
ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে দেখলে সেটি অবশ্যই আমাদের আওতায় থাকার কথা ছিল। কিন্তু কোন রোগী কখন আসবে, কার দরকার হবে এবং কে কোথা থেকে নেবে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারব না। যেহেতু এটি কেবল পাঁকা ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ, সেহেতু ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় থাকা অযৌক্তিক নয়।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বি জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে মাঝিদের নৌকায় করে হতাহতদের সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সদরে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়েছিল। আমি নিজে গিয়ে অন্তত সাতজনকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছি।
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:20 AM |
Sunrise | 6:40 AM |
Zuhr | 12:01 PM |
Asr | 3:02 PM |
Magrib | 5:22 PM |
Isha | 6:43 PM |