নড়াইল প্রতিনিধি ঃ নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের জুড়ালিয়া গ্রামের চিহ্নিত ভূমিদস্যু,জমির দালাল শহিদ ও সোহেলের বিরুদ্ধে একই জমি দুইজনের কাছে প্রতারনার মাধ্যমে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে।সরোজমিনে জুড়ালিয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী জমির মালিক মৃত রেজাউল শেখের দুই ছেলে হিরু, হাদী,ও তার মা জুলেখা বেগমের সাথে,তারা এ প্রতিবেদককে জানান,আমরা সম্প্রতি আমাদের ওয়ারেষ সূত্রে প্রাপ্ত এক একর সাতষট্টি শতক জমি বিক্রি করতে চাইলে তা ভালো দামে বিক্রি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন স্থানীয় দালাল শহিদ ও সোহেল রানা @ মোটুক,।সেই হিসেবে সোহেল রানা ও শহিদের মধ্যস্ততায় একটি নন রেজিষ্ট্রি চুক্তিপত্র হয় নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী গ্রামের ইসহাক ও রেজাউলের সাথে, পরবর্তীতে ইসহাক ও রেজাউল নড়াইল সদর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে থেকে গত ৩/০৩/২০২২ ইং তারিখে ইসহাকের নামে ৭৮ শতক কবলা দলিল ও রেজাউলের নামে ৩৫ শতক জমি পাওয়ার করে নেয়
এবং উক্ত জমির সমূদয় পাওনা আমাদের পরিশোধ করে। কয়েকদিন পরে সোহেল রানা ও শহিদ এসে আমাদের জানায় রেজাউল সরদারের নামে যে ৩৫ শতক জমি পাওয়ার করে দেওয়া হয়েছিল সে পাওয়ার বাতিল করে নড়াইল পৌরসভার চরের ঘাটের অবঃ সেনাসদস্য জনৈক রাজ্জাকের নামে ৩৫ শতক জমি সাফ কবলা দলিল করে দিতে হবে,পূর্বের পাওয়ার গ্রহিতা রেজাউল সরদার বিষয়টি জানে এবং তিনি দলিল করার দিন উপস্থিত থেকে সবকিছু করবে। তোরা গিয়ে শুধু সই করে চলে আসবি,তোদের আর কোন কাজ নাই। শহিদ, সোহেলের কথা মত আমরা চারজন সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে সেখানে রেজাউল সর্দার কে উপস্থিত দেখি। আমাদের মধ্যে যে সন্দেহ ছিল তা দূর হয়ে যায়, আমরা দলিলে সই করে চলে আসি। এর পর প্রায় এক সপ্তাহ পূর্বে অবঃসেনাসদস্য রাজ্জাক আমাদের বাড়িতে এসে জমির দখল বুঝিয়ে দিতে বলে।আমরা তাকে বলি জমি আমরা রেজাউল সরদার কে দিয়েছিলাম, সে এবং শহিদ ও সোহেল রানা উপস্থিত থেকে জমি আপনাকে দিয়েছে,আপনি রেজাউল সরদার ও তাদের কাছ থেকে জমি বুঝে নেন।আমরা এ বিষয়ে কি করতে পারি, আর সাফ কবলা দলিল করার দিন আমরা কোন টাকা নেইনি, টাকা নিয়েছে সহিদ ও সোহেল।আপনি তাদের কাছে যান,তারা আপনার জমির দখল বুঝিয়ে দেবে।আমাদের এই কথায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে আসেন।আমরা লেখা পরা জানিনা।সোহেল ও শহিদের কথা মত জমি বিক্রি করেছি,তারা যেখানে সই করতে বলেছে সেখানে সই করেছি,এখন বুঝতে পারছি সোহেল ও শহিদ আমাদের জমি আমাদের ব্যবহার করে দুই যায়গায় বিক্রি করেছে।আমরা তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে কথা হয় প্রথমে পাওয়ার গ্রহিতা রেজাউল সরদারের সাথে, তিনি জানান আমি সোহেল ও শহিদের সহায়তায় হিরুদের জমি কিনেছি,সোহেল ও শহিদ আমাকে পাওয়ার বাতিল করে জমি বিক্রির প্রস্তাব দিলে আমি পাঁচ লক্ষ পচিশ হাজার টাকায় জমি বিক্রি করতে রাজি হই।কিন্তু জমির পাওয়ার বাতিল করার পূর্বে আমার টাকা না দেওয়ায় আমি পাওয়ার বাতিলের কাগজে সই করিনি, পাওয়ারও বাতিল হয়নি, আমি সোহেল ও শহিদকে রেজিষ্ট্রি অফিসে রেখে বাড়ি চলে আসি। পরবর্তীতে আমার নামে পাওয়ার করা ৩৫ শতক জমি আমার স্ত্রীর নামে সাফ কবলা দলিল করে নাম পত্তনও করে নিয়েছি। অবঃ সেনা সদস্য রাজ্জাকের কাছে জমি বিক্রি করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এঘটনায় অভিযুক্ত শহিদের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, আমি সত্যিকথা বলি, মিথ্যা বলিনা,রাজ্জাকের সাথে জমির বিষয়ে কথা হয়েছে সোহেলের,আমি জমি দলিল করার দিন সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়েছিলাম,দলিল করার পর পার্টি পাঁচ লক্ষ পচিশ হাজার টাকা দিলে আমি তা সোহেলের হাতে দিয়ে চলে আসি।একই দাগের জমি প্রথমে একজনের নামে পাওয়ার করে আবার সেই জমি পাওয়ার গ্রহিতাকে দিয়ে দলিল না করিয়ে
পূর্বের মালিক কে দিয়ে অারেক জনকে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়া প্রতারনা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
কথা হয় আরেক অভিযুক্ত সোহেল রানা @ মোটুর সাথে, তিনি জানান, আমাকে শহিদ ডেকে নিয়ে প্রতিদিন একহাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে সাথে রাখে।আমি কার জমি কে নিচ্ছে এবং টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানিনা,সব কিছু শহিদ জানে।
জমি কিনে প্রতারনার স্বীকার অবঃ সেনাসদস্য রাজ্জাকের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সহিদ ও সোহেলের বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার টিক্কা জানান,আমি হাদি, হিরুদের জমি নিয়ে দালাল সোহেল ও শহিদের প্রতারনা করার বিষয়টি শুনেছি,এই দালালরা প্রতারনা করে সাধারন মানুষকে হয়রানী করে, আমি প্রশাসনের কাছে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি।যাতে এরকম কাজ আর কেউ করতে সাহস না পায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জমির দালাল প্রতারক শহিদ ও সোহেলের বিরুদ্ধে প্রশাসন তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।