আজ বুধবার | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |১৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১১:৩০
বিডি দিনকাল ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে থামাতে পারবে না। বাংলাদেশের অগ্রগতি ব্যাহত করার অনেক ষড়যন্ত্র আছে, কিন্তু উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ঝড়-ঝাপটা এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশের কারণে অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে যেমন চলি তেমনি বৈশ্বিক যে দুর্যোগ সেটাও মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারবো, সে বিশ্বাস আমার আছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। ৯ মাসের খাদ্যশস্য কেনার মতো রিজার্ভ এখনো হাতে আছে। গতকাল আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড এবং সদ্য প্রয়াত দলটির সাবেক সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের ওপর দু’টি পৃথক ভিডিও চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বেচ্ছাসেবার ১ বছর’ শীর্ষক প্রকটি প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্বেচ্ছাসেবক লীগ ১৯৯৪ সালের ২৭শে জুলাই প্রতিষ্ঠা করা হয়। দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধকালীন সেই দিনটির কথা স্মরণ করে বলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে বন্দি অবস্থায় তাকে তারা হাসপাতালে যেতে দিলেও তার মা’ বঙ্গমাতাকে সেখানে যেতে দেয়নি। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি জয়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কেক কাটেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদ্য প্রয়াত সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তাকে স্মরণে রেখে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা আর্তমানবতার সেবায় ব্রতী হয়ে কাজ করে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের কথা না বলে যারা ভুল তথ্য তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন তাদেরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। একটি মিডিয়ায় অনলাইন ভার্সনে দেশের ডিজেল, অকটেন পেট্রোলের সংকট প্রসঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ডিজেল আমাদের কিনতে হয়, এটা ঠিক। কিন্তু অকটেন আর পেট্রোল কিন্তু আমাদের কিনতে হয় না। আমরা যে গ্যাস উত্তোলন করি সেখান থেকে বাই প্রডাক্ট হিসেবে আমরা কিন্তু রিফাইন করে পেট্রোল ও অকটেন পাই। আমাদের যতটুকু চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি পেট্রোল এবং অকটেন আমাদের আছে। তিনি বলেন, কাজেই যারা অনেক বেশি জ্ঞানী তাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার এত বেশি যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস তারা ভুলে যান। কিন্তু, উল্টাপাল্টা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান।
রিজার্ভ নিয়ে যারা সমালোচনা করেন তাদের পাল্টা সমালোচনা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন রিজার্ভ ৩ বিলিয়নের কিছু উপরে, ৩ দশমিক ৮ এই রকমই ছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত রিজার্ভ বাড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম। রিজার্ভ কেন রাখা হয় তার ব্যাখ্যায় সরকার প্রধান বলেন, আপৎকালীন সময়ে ৩ মাসের খাদ্যশস্য কেনার মতো বা আমদানি করার ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা যেন থাকে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এখন যে রিজার্ভ আছে তাতে ৩ মাস কেন ৬ মাস বা ৯ মাসের খাবারও আমরা কিনে আনতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ করে সকলকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি মিতব্যয়ী ও সঞ্চয়ী হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি ও প্রত্যেকটি জলাধারকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনেও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোও আজকে হিমশিম খাচ্ছে এবং তারাও আজকে সাশ্রয়ী হওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। আর বাংলাদেশে যেন সেই দুঃসময় না আসে সেজন্য কতগুলো বিষয়ে আমরা আগাম পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনি বলেন, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে কেন না বিশ্বব্যাপী যে মন্দার ঢেউ দেখা দিয়েছে তা থেকে স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশও বাদ যাচ্ছে না। তারপরেও সরকার ভর্তুকি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সাশ্রয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে এবং বিদ্যুতের ব্যবহার সীমিত রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মানে এই না যে বিদ্যুৎ একেবারে নাই বা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা কিন্তু না। প্রধানমন্ত্রী দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকে নির্বাচন ব্যবস্থায় যতটুকু সংস্কার সেটা আমাদেরই প্রস্তাব অনুযায়ী হয়েছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারকে বাদ দেয়া- এর সবই করা হয়েছে। বিএনপি করেছে ভুয়া ভোটার’ আমরা করেছি ভুয়া ভোটার বিহীন ‘স্বচ্ছ ভোটার তালিকা’। আগে যেমন স্টিলের বাক্সে আগ থেকেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করতো, সে সুযোগ আর নেই। এভাবে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকারকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে এবং মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
Dhaka, Bangladesh বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:23 AM |
Sunrise | 6:43 AM |
Zuhr | 12:08 PM |
Asr | 3:12 PM |
Magrib | 5:33 PM |
Isha | 6:52 PM |