আজ সোমবার | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:০২
ডেস্কঃ- শনিবার ভোর সোয়া ৪টা। ঈদের ছুটি কাটিয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদার। তেজগাঁও রেলস্টেশনে নেমে পায়ে হেঁটে ডিসি অফিসের ব্যারাকে যাচ্ছিলেন। তখনই ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়েন। দুর্বৃত্তরা মনিরুজ্জামানের টাকা-পয়সা, মোবাইল ছিনতাই করার চেষ্টা করে। তখন তাদের ছিনতাইয়ে বাধা দিয়ে পুলিশ পরিচয় দেন মনিরুজ্জামান। এতেই কাল হলো তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের এই পুলিশ সদস্যের। ছিনতাইকারীরা পুলিশ পরিচয় পেয়ে তার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র জানায়, মনিরুজ্জামানকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে ডিবি তেজগাঁও বিভাগ। শনিবার বিভিন্ন সময়ে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আসামিদের মধ্যে একজন প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
গতকাল সকালে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. গোলাম সবুর জানান, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য তারা কাজ করছেন। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে হত্যার এ ঘটনা ঘটে। দুই ব্যক্তি পুলিশ সদস্য মনিরুজ্জামানকে ঘিরে ধরে। তার কাছে থাকা মালামাল নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।
মনিরুজ্জামান তেজগাঁও ট্রাফিক অফিসের ব্যারাকে থাকতেন। তার পরিবারের সবাই থাকতেন গ্রামের বাড়ি শেরপুরে। তিনি ঈদের ছুটিতে ঈদ উদ্যাপন করতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। ছুটি কাটিয়ে শনিবার ভোরে ট্রেনে করে ঢাকায় ফেরেন তিনি। পুলিশ জানায়, তিনি ভোরেই ট্রেন থেকে নামেন তেজগাঁও রেলস্টেশনে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ডিসি অফিসের ব্যারাকের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টে দুর্বৃত্তরা তাকে ঘিরে ধরে। ছিনতাইকারীরা তাকে ছিনতাই করতে চাইলে বাধা দেন মনিরুজ্জামান। একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে বিভিন্ন জায়গা ক্ষত-বিক্ষত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে মনিরুজ্জামানকে দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তেজগাঁও থানার ডিউটি অফিসার জানান, ভোর সোয়া ৪টার দিকে ৯৯৯ থেকে কল করে জানানো হয় এক পুলিশ সদস্য আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। তার শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জাঙ্গাগীর আলম মানবজমিনকে জানিয়েছেন, নিহত মনিরুজ্জামানের ছোট দুই ছেলে রয়েছে। তাদের একজনের বয়স মাত্র তিন বছর আর আরেকজনের বয়স পাঁচ বছর। তার পরিবারের উপার্জনক্ষম তিনি একাই। তার বাবার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা কাশেম তালুকদার। তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব হাসান জানান, ছিনতাইকারীরা তার টাকা, মোবাইল নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সে নিতে দেয়নি। পরে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। শনিবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে মরদেহ নিহতের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দিলে তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদীর করুয়া গ্রামে নিয়ে দাফনকাজ সম্পন্ন হয়। মনিরুজ্জামান ২০০২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশে যোগদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডিএমপি’র তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সূত্রঃ মানবজমিন
Dhaka, Bangladesh সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:17 AM |
Sunrise | 6:37 AM |
Zuhr | 11:58 AM |
Asr | 2:58 PM |
Magrib | 5:18 PM |
Isha | 6:39 PM |