আজ শুক্রবার | ১৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ |৩রা রজব, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৯:১৭
মনির হোসেন জীবন,আশুলিয়া থেকে ফিরে- নতুন শিক্ষাক্রমের কয়েকটি পাঠ্যবই নিয়ে একটি কুচক্রী স্বার্থান্বষী মহল নানারকম বিতর্ক, নানারকম প্রচারণা, মিথ্যা অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তি চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি (এমপি)।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের বইতে নেই এমন কল্পিত বিষয় ও ছবি নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। ভুয়া ও আপত্তিকর কনটেন্ট আমাদের বইয়ের বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভুয়া গুজব চালানো হচেছ।
কোন ধরনের অপপ্রচারে কান দিবেন না, উল্লেখ করে ডা: দীপু মনি বলেন, প্রচারণাগুলোর সিংহভাই অসত্য, অপপ্রচার। বিভিন্ন ছবি, বইয়ের ছবি, ফটোশপ করে সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার লিপ্ত রয়েছে একটি মহল। তারা বিভিন্ন বইয়ে লেখা এডিট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া থানার বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১০ম সমাবর্তন অনুষ্টানে প্রধান অতিথির ভাষনে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি (এমপি)।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, সমাবর্তন বক্তা ছিলেন, ভারতের হিমাচল প্রদেশের শোলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অতুল খোসলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট সাইফুল ইসলাম ও শিক্ষার্থী হালিমা বিনতে জামিল প্রমুখ।
এসময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহকারি পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ আনোয়ার হাবিব কাজলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক – শিক্ষিকাবৃন্দ, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্হিত ছিলেন।
অপপ্রচারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেন, ‘অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভ্রান্তি সৃষ্টি। ধর্মকে অপব্যাবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে উত্তেজিত করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। সরকারের বিরুদ্ধে যখন কোনও ইস্যু পাচ্ছে না তখন বইয়ের ওপর সওয়ার হয়ে মিথ্যাচারের মাধ্যমে একটি চিহ্নিত চক্র এই অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ কখনও ইসলাম বিরোধী, কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোনও কিছু করেনি, কোনও দিন করবেও না। বরং বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আজ পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে তার প্রায় সবটুকু বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর কন্যার হাত দিয়ে হয়েছে।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষাক্রমের নয়, আমাদের বই নয়, যে বই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ানো হয় না।
এ বছরের বইগুলোতে লিখেই দেওয়া আছে পরীক্ষামূলক সংস্করণ। বই বিতরণের সময় আমিও বলেছি, অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় যা কিছু পরিমার্জন দরকার তা করা হবে।
তিনি বলেন, যারা আক্রমণ করছেন তাদের কোনও প্রতিষ্ঠানে আমাদের এই শিক্ষাক্রমের বই কিন্তু পড়ানো হয় না। যেখানে পড়ানো হয় সেই জায়গা থেকে কিন্তু এইভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে না। যাদের প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় তাদের মতামত নিয়েই পরীক্ষামূলক সংস্করণগুলো তৈরি করা হয়েছে এবং প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের যৌক্তিক পরামর্শগুলো পাইলটিংয়ে সময় গ্রহণ করা হয়েছে। তার পরও যদি কোনও ভুল থাকে সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে এবং হবে।
ডা: দীপু মনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দুটো কমিটি করে দিয়েছি। একটি কমিটি সবার মতামত নিয়ে সুপারিশ করবে। কোথাও যদি ইচ্ছাকৃত বা গাফিলতির জন্য কিছু ঘটে থাকে তা চিহ্নিত করে দোষী ব্যক্তিদের কী শাস্তি দেওয়া যায় তারা আমাদের কাছে সুপারিশ করবে। বইয়ের কিছু ভুল যেগুলো চিহ্নিত হয়েছে তা ইতোমধ্যেই সংশোধন করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিষোদগার করছেন তারা নাকি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বলছেন, ইসলামকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বলছেন। যদি তাদের উদ্দেশ্য সৎ হতো তাহলে তারা গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে ভুল সংশোধনে আমাদের পরামর্শ দিতেন, মিথ্যাচার করতেন না। ফটোসপ করে, এডিট করে তারা এই ধরনের এই মিথ্যাচার করতেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই নতুন শিক্ষাক্রম চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য। সারা বিশ্বই পরির্তনের কথা বলছে, আমরা এই কার্যক্রম আগে শুরু করেছি। সারা বিশ্বেই আমাদের এই কারিকুলাম প্রশংসিত হচ্ছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া দেখা যাচ্ছে। যারা অপপ্রচার করছে তাদের আপত্তিটা এখানে– আমাদের শিক্ষার্থীরা চিন্তা করতে শিখলে, ভাবতে শিখলে, সমস্যা নিরুপণ করতে শিখলে ধর্মের দোহাই দিয়ে, ধর্মের অপব্যাখা করে তাদের মগজ ধোলাই করা যাবে না। এ জন্যই এই চক্রটির আপত্তি। দয়া করে বই পড়ে দেখবেন, আপনারা কোন ধরনের অপপ্রচারে কান দেবেন না।
সমাবর্তন অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্যে ডিআইইউ চেয়ারম্যান ড. মোঃ সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবনকে অনুঘটক মনে করেছে এবং একাডেমিক সিস্টেমের সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে। আমরা আধুনিক ফ্ল্যাগশিপ ইউনিভার্সিটি হিসেবে বিকাশের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এছাড়া অ্যাক্সেস ইক্যুইটির প্রতি নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে শিক্ষাদান, শেখার, গবেষণার মান এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক আর্থ- সামাজিক চাহিদা মেটাতে কাজ করে যাচ্ছি বলে সন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে প্রথশ ও একমাত্র উদ্ভাবনী বিষয়ক কোর্স চালু করেছে, একাডেমিয়া-শিল্প সম্পর্ক জোরদার করেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে একীভূত করেছে, পাঠ্য বহির্ভূত কার্যক্রমের উপর সর্বোচ্চ
গুরুত্ব দিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতরণ কার্যক্রম ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে।
উপাচার্য প্রফেসর অতুল খোসলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্যের গল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছি, নাসা স্পোর্টস এপ চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় গ্লোবালী চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, এ্ইউএপি’র ১৫তম সাধারণ সম্মেলনের আয়োজন করেছি, আমরা জব উৎসব সম্মেলনের আয়োজন করেছি, যা ছিল একটি ইউএনডিপি-স্পন্সর ইভেন্ট এবং যেখানে ২০০+ প্রতিষ্ঠান ছাত্রদের কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করার জন্য অংশ গ্রহণ করেছিল।
এরআগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এবারের সমাবর্তনে ৬১৬৪ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
Dhaka, Bangladesh শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | |
Salat | Time |
Fajr | 5:21 AM |
Sunrise | 6:41 AM |
Zuhr | 12:03 PM |
Asr | 3:04 PM |
Magrib | 5:25 PM |
Isha | 6:45 PM |